শুক্রবার, ১৪ এপ্রিল, ২০১৭

ত্রিপথগা” নামে পরিচিতা হন




রাজা সগর ষাট হাজার পুত্রের জনক হয়েছিলেন। তিনি একবার অশ্বমেধ যজ্ঞ করলে দেবরাজ ইন্দ্র তাতে ঈর্ষান্বিত হয়ে যজ্ঞের পবিত্র ঘোড়া অপহরণ করেন।
সগর তাঁর ষাট হাজার পুত্রকে অশ্বের অন্বষণে প্রেরণ করেন। তাঁরা খুজতে খুজতে পাতালে ধ্যানমগ্ন মহর্ষি কপিলের আশ্রমে ঘোড়াটিকে দেখতে পান। মহর্ষিকে চোর সন্দেহ করে তাঁরা তাঁর বহু বছরের ধ্যান ভঙ্গ করলে ক্রুদ্ধ মহর্ষি শাপ দিয়ে তাঁদের ভষ্ম করে দেন। সগর রাজার ষাট হাজার সন্তানের আত্মা পারলৌকিক ক্রিয়ার অভাবে প্রেতরূপে আবদ্ধ হয়ে থাকেন। বহুকাল পরে সগরের বংশধর,রাজা দিলীপের পুত্র ভগীরথ তাঁদের আত্মার মুক্তিকামনায় গঙ্গাকে মর্ত্যে নিয়ে আসার মানসে ব্রহ্মার তপস্যা শুরু করেন। তপস্যায় সন্তুষ্ট ব্রহ্মা গঙ্গাকে মর্ত্যে প্রবাহিত হয়ে সগরপুত্রদের আত্মার সদগতিতে সহায়তা করতে নির্দেশ দেন। গঙ্গা মর্ত্যে আসতে আপত্তি করলে পরে ব্রহ্মার আদেশে রাজি হন.
গঙ্গা বলেছিল যে, কলিতে পাপীরা আমার জলে স্নান করে আমাকে পাপে জর্জরিত করবে তাই গঙ্গা আপত্তি জানালেন .. কিন্তু পরে তাকে এটা বুঝানো হয় যে পৃথিবীর দুর দূরান্ত থেকে অনেক সাধু সন্ন্যাসীরা এসে তোমার জলে স্নান করে তোমার পাপ মোচন করবে...কিন্তু গঙ্গার প্রবাহে মর্তো ফাটল ধরতে পারে.. তখন ভগীরথ গঙ্গার গতিরোধ করার জন্য শিবের আরাধনা করেন। আর তখন শিব গঙ্গার প্রবাহকে রোধ করার জন্য নিজের জটায় ধারন করার কথা দেন.. আর ব্রহ্মার আদেশে বিষ্ণুর চরন থেকে গঙ্গা পৃথিবীতে পতিত হন..এইসময় শিব শান্তভাবে নিজ জটাজালে গঙ্গাকে আবদ্ধ করেন এবং ছোটো ছোটো ধারায় তাঁকে মুক্তি দেন। শিবের স্পর্শে গঙ্গা আরও পবিত্র হন। স্বর্গনদী গঙ্গা পাতালে প্রবাহিত হওয়ার আগে মর্ত্যলোকে সাধারণ জীবের মুক্তির হেতু একটি পৃথক ধারা রেখে যান। এইভাবে স্বর্গ, মর্ত্য ও পাতাল – তিন লোকে প্রবাহিত হয়ে গঙ্গা “ত্রিপথগা” নামে পরিচিতা হন।এভাবেই গঙ্গা ওই ষাট হাজার আত্বার মুক্তি সহ মানব মুক্তির জন্য এই ধরনীতে আসেন..

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন