শুক্রবার, ১৪ এপ্রিল, ২০১৭

ত্রিপথগা” নামে পরিচিতা হন




রাজা সগর ষাট হাজার পুত্রের জনক হয়েছিলেন। তিনি একবার অশ্বমেধ যজ্ঞ করলে দেবরাজ ইন্দ্র তাতে ঈর্ষান্বিত হয়ে যজ্ঞের পবিত্র ঘোড়া অপহরণ করেন।
সগর তাঁর ষাট হাজার পুত্রকে অশ্বের অন্বষণে প্রেরণ করেন। তাঁরা খুজতে খুজতে পাতালে ধ্যানমগ্ন মহর্ষি কপিলের আশ্রমে ঘোড়াটিকে দেখতে পান। মহর্ষিকে চোর সন্দেহ করে তাঁরা তাঁর বহু বছরের ধ্যান ভঙ্গ করলে ক্রুদ্ধ মহর্ষি শাপ দিয়ে তাঁদের ভষ্ম করে দেন। সগর রাজার ষাট হাজার সন্তানের আত্মা পারলৌকিক ক্রিয়ার অভাবে প্রেতরূপে আবদ্ধ হয়ে থাকেন। বহুকাল পরে সগরের বংশধর,রাজা দিলীপের পুত্র ভগীরথ তাঁদের আত্মার মুক্তিকামনায় গঙ্গাকে মর্ত্যে নিয়ে আসার মানসে ব্রহ্মার তপস্যা শুরু করেন। তপস্যায় সন্তুষ্ট ব্রহ্মা গঙ্গাকে মর্ত্যে প্রবাহিত হয়ে সগরপুত্রদের আত্মার সদগতিতে সহায়তা করতে নির্দেশ দেন। গঙ্গা মর্ত্যে আসতে আপত্তি করলে পরে ব্রহ্মার আদেশে রাজি হন.
গঙ্গা বলেছিল যে, কলিতে পাপীরা আমার জলে স্নান করে আমাকে পাপে জর্জরিত করবে তাই গঙ্গা আপত্তি জানালেন .. কিন্তু পরে তাকে এটা বুঝানো হয় যে পৃথিবীর দুর দূরান্ত থেকে অনেক সাধু সন্ন্যাসীরা এসে তোমার জলে স্নান করে তোমার পাপ মোচন করবে...কিন্তু গঙ্গার প্রবাহে মর্তো ফাটল ধরতে পারে.. তখন ভগীরথ গঙ্গার গতিরোধ করার জন্য শিবের আরাধনা করেন। আর তখন শিব গঙ্গার প্রবাহকে রোধ করার জন্য নিজের জটায় ধারন করার কথা দেন.. আর ব্রহ্মার আদেশে বিষ্ণুর চরন থেকে গঙ্গা পৃথিবীতে পতিত হন..এইসময় শিব শান্তভাবে নিজ জটাজালে গঙ্গাকে আবদ্ধ করেন এবং ছোটো ছোটো ধারায় তাঁকে মুক্তি দেন। শিবের স্পর্শে গঙ্গা আরও পবিত্র হন। স্বর্গনদী গঙ্গা পাতালে প্রবাহিত হওয়ার আগে মর্ত্যলোকে সাধারণ জীবের মুক্তির হেতু একটি পৃথক ধারা রেখে যান। এইভাবে স্বর্গ, মর্ত্য ও পাতাল – তিন লোকে প্রবাহিত হয়ে গঙ্গা “ত্রিপথগা” নামে পরিচিতা হন।এভাবেই গঙ্গা ওই ষাট হাজার আত্বার মুক্তি সহ মানব মুক্তির জন্য এই ধরনীতে আসেন..

সোমবার, ৩ এপ্রিল, ২০১৭

হিন্দু ধর্মের উপর ড. এপিজে আবদুল কালাম




২০১১ সালের ১ জুলাই। দিল্লীর স্বামীনারায়ণ অক্ষরধামে ‘Hinduism, An Introduction’ নামে বইয়ের মোড়ক উন্মোচিত হয়। মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি ড. এপিজে আবদুল কালাম।

Swaminarayan Aksharpith থেকে প্রকাশিত এই বইটিতে হিন্দু ধর্মের নানা দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

ভাষণ দিতে গিয়ে ড. আবদুল কালাম বলেন, “ হিন্দু ধর্ম যথার্থ অর্থেই একটি স্বাভাবিক ধর্ম। এর সহনশীলতা এবং নৈতিকতার জন্য আজ এক সভ্য সমাজ হিন্দু ধর্ম গড়তে পেরেছে। বইটি যখন আমি পড়লাম তখন আমি দেখলাম হিন্দু ধর্ম একটি নদীর মত যা এক বড় নদীর মত আপনধারায় প্রবাহমান।”

উল্লেখ্য ড. আবদুল কালাম একজন নিরামিষভোজী তামিল এবং তিনি গীতাপাঠ করেন।

মৌলভী মেহবুব আলী কিভাবে পন্ডিত মহেন্দ্রপাল আর্য হলেন?







এই গল্প হচ্ছে ভারতের উওর প্রদেশের বাড়ুয়াত নামক কোন অঞ্চলের বাডি মসজিদের একজন বাঙ্গালী ঈমামের যার নাম মৌলভী মেহবুব আলী। এই গল্প কোন গল্প নয় চন্দ্র সুর্যের মতো সত্য ঘটনা।

মৌলভী মেহবুব আলী সাহেব ঈমাম হিসেবে কুরানের শিক্ষা অনুযায়ী বিশ্বসীদের দিক নির্দেশনা দিতেন। তিনি তার এলাকার হিন্দু মুসলীম সব প্রতিবেশীদের মাঝেই প্রিয়জন ভাজন ছিলেন। দেরীতে ঘুম থেকে ওঠার জন্য তিনি অনেককে মৃদু ভৎসর্না করতেন এই বলে যে যেখানে প্রানীকূলের সামান্য পাখী যারা মানুষের চাইতে অনেক কম উন্নত মানে হয়েও ভোর সকালে ঘুম থেকে ঊঠেই কিচির মচির করে সেখানে তুমি আশরাফুল মাখলুকাত হয়েও এখনো ঘুমোচ্ছো। "মুসলীমদের এখন উচিত মসজিদে থাকা আর হিন্দুদের উচিত তাদের সৃষ্টি কর্তাকে ধন্যবাদ দেয়া। তিনি মানুষকে জীবন দান করেছেন তাদের সময় নষ্ট করার জন্য নয়।"উত্তর প্রদেশের বাঘপাত জেলার বাডিয়াতে ঐ মসজিদকে ঘিরে যত প্রতিবেশী ছিল সবাই মৌলভীকে সম্মান শ্রদ্ধা করত।

এভাবেই অনেকগুলো বছর কেটে গেল। তিনি বেশ ধর্য্য ও নিষ্ঠার সাথেই তার দ্বায়িতগুলো পালন করছিলেন। ইসলামী শিক্ষার উপর তার ছিল স্নাতক ডিগ্রী যা তার জন্য এক বিশ্বস্ত বর্ম হিসেবেই কাজ করেছিল। তিনি পৃথিবীর অন্যন্যা মুসলীমদের মতো বিশ্বাস করতেন কুরানের সমস্ত উপদেশ ও আদেশগুলো স্বয়ং আল্লাহ্‌র। প্রত্যককে অবশ্যই তাদের নিজের জীবনকে কুরানের আলোকে চালিত করতে হবে এবং কুরানে সমস্ত নির্দেশগুলো মেনে চলতে হবে তাহলে কেউ আর ভূল করতে পারবে না। ১৯৮৩ সালে শীতকালে এই মিষ্টভাষী ভদ্র ইমামের সাথে গুরুকুল ইন্দ্রপ্রসাদ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞান শিক্ষক শ্রী কৃষ্ণা পাল সিং এর সাক্ষাৎ হয়। যখন মৌলভী সাহেব কুরানের উপর উপস্থিত বক্তৃতা দিচ্ছিলেন তখন শ্রী কৃষ্ণা পাল সিং হাসছিলেন এবং তারপরেই বললেন "মৌলভী সাহেব আপনি কি আমার গুরুকুল ইন্দ্রপ্রসাদের আতিথ্য গ্রহন করবেন?" মৌলভী সাহেব তার নেমতন্ন গ্রহন করলেন কারন তিনি বেশীর ভাগ বাঙ্গালীদের মত গোঁড়ামী মুক্ত ছিলেন। সন্ধ্যে বেলা তিনি গুরুকুলে পৌঁছান। তার নিমন্ত্রনকারী গুরুকুলের একটি ছিমছাম পরিস্কার পরিছন্ন কামরায় তার থাকার ব্যাবস্থা করলেন। মাগরিবে আযানের ওয়াক্ত হয়ে গেল। তিনি অযু সেরে সেই কামরায় নামায আদায় করে কামরা থেকে বের হলেন। তিনি তখন দেখলেন গুরু, শিষ্য ও দর্শনার্থিরা বৈদ্যিক যোগাসন করছে আবার কেউ কেউ সান্ধ্যকৃত্য করছে।

পরে বৈদ্যিক বিষয়ের উপর বক্তৃতা দেয়া হলো ও খাবার পরিবেশন করা হলো। নামায পড়ার প্রস্তুতির পূর্বে তিনি কৃষ্ণা পাল সিং এর সাথে রাতের খাবার খেলেন। কৃষ্ণা পাল সিং মৌলভী সাহেবকে গুরুকুলের অনেকের সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন। তাকে গুরুকুলের মন্ত্রী ধর্মবীর এবং সন্যাসী স্বামী শক্তিভিবেসের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। "আপনার জীবনের উদ্দেশ্য কি মৌলভী সাহেব?" সন্ন্যাসী প্রশ্ন করলেন। "মানুষ যেন শয়তানের ফাঁদে পা না দেয় সেজন্য তাকেসর্তক করা এবং সঠিক পথে চলার নেয়ামত বাতলে দেয়া।" উওরে মৌলভী সাহেব বললেন। " আমরাও একই কাজ করছি এবং প্রকৃত পক্ষে আমাদের আর্যদেরও একই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। আপনার কি মনে হয়ে কেন আমরা এক সাথে কাজ করছি না?" স্বামীজী প্রশ্ন করলেন। উওরে মৌলভী সাহেব বললেন "আমি জানি না। আমাকে ভাবতে দিন।" তিনি পরেরদিন ভোর ৪টায় উঠলেন এবং যথারীতি তার নামায পড়লেন। ঘর থেকে বেরিয়েই তিনি দেখলেন ছাত্ররা শরীর চর্চা করছে। তিনি শিক্ষকদের সাথে দেখা করলেন। ইসলাম সহ আধ্যাত্মিকতার অনেক বিষয় নিয়ে তিনি তাদের সাথে আলোচনা করলেন। মৌলভী সাহেব ইসলাম ব্যতীত অন্যন্যা ধর্মের দর্শন গুলো চিন্তা করেননি এবগ তিনি উপসংহারে বললেন যে অন্যনা ধর্মের রীতিনীতি প্রথা যুক্ত করা ব্যাপারে কুরান কোন কিছুই বলেনি। " আমার জানা ছিল না আমার এই ছোট কুয়োর বাইরেও জগত আছে। স্বামী বিবেকানন্দ খুব সম্ভবত আমার মত লোকের কথা চিন্তা করে তিনি বলেছিলেন যে সমুদ্রের বিশালতা ব্যাঙ্গের মনের চাইতে অনেক বড়, যে ব্যাঙের চিন্তা ছোট্ট কুয়োর মধ্যেই সীমাবদ্ধ" -এতেই সমস্ত আর্যরা হেসে উঠলেন।

গুরুকুল ছেড়ে যাবার সময় শ্রী ধর্মবীর তাকে স্বামী দয়ানন্ন্দ স্বরসতীর "সত্য প্রকাশ" এর একটি উর্দু সংকলন তাকে দিলেন।মৌলভী সাহেব বাড়ুয়াত গামী বাসে বসে বইটির পাতা উল্টাতে লাগলেন তখন তার চোখে পড়ল চৌদ্দতম অধ্যায়টির উপর যার বিষয় বস্তু হচ্ছে কোরান। গেরুয়া কাপড়ে মোড়ানো এই রকম এক সন্ন্যাসী তাঁর পবিত্র গ্রন্থের আয়াত লিপবদ্ধ করেছেন দেখে তিনি দারুন বিষ্মিত হলেন। "আমার জীবনে সেদিন আমি প্রচন্ড এক ধাক্কা খেয়েছিলাম। বইটির উপর কাফের সন্যাসীর ছবি ছিল আর ভেতরে কুরানের আয়াত" স্বামী দয়ানন্দের এই গ্রন্থটি কুরান এবং এর দাবীগুলো নিয়ে আলোকপাত করেছেন আমাদের সনাতন বৈদ্যিক প্রথার আলোকে। গ্রন্থটি ভারতের প্রায় সব ভাষাতেই অনুবাদ করা হয়েছে। কুরানে লেখা আছে "যেখানেই তুমি ঘোর না কেন সেখানে আল্লাহ্‌র মুখ থাকবে (২:১০৯)" স্বামীজী "সত্য প্রকাশ" বইটিতে প্রশ্ন করেছেন " যদি এই কথাই সত্য হয়ে তাহলে মোহাম্মদ কেন কেবলার(মক্কার পবিত্র মসজিদ) দিকে যাত্রা করেছিলেন? এখন তর্কের খাতিরে বলা হলো তাকে সেটা করার আদেশ ছিল তাই তিনি সেটা করেছেন তাহলে এর প্রতিউত্তর আসবে তাকেতো যেকোন দিকে তার ইচ্ছে মত মুখ ঘুরাবার অনুমোতিও তো দেয়া হয়েছিল। এ বক্তব্য পরস্পর বিরোধী তাহলে কোনটাকে সত্য হিসেবে ধরে নেব। আবার যদি আল্লাহ্‌র মুখ থাকে তাহলে তিনি কেবল একই সময় এক দিকেই মুখ করে থাকতে পারবেন সব দিকে নয়।" "সত্য প্রকাশ" গ্রন্থে চৌদ্দতম অধ্যায়ে প্রায় ৩০,০০০ শব্দে বেদের আলোকে কুরানের সমস্ত দাবীগুলোকে গুড়িয়ে দিয়েছে এবং কোটি কোটি মুসলীমের পবিত্র গ্রন্থ কুরানের অধারাবাহিকতা,অতিরঞ্জন ও বৈজ্ঞানিক ভূলগুলোকে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন সেই গেরু কাপড়ে ঢাকা সন্ন্যাসটি।

বইটি মৌলভী মেহবুব আলীর মনে ব্যাপক নাড়া দিয়েছিল। তিনি বলেন " এই সকল প্রশ্নের কোন উওরই আমার কাছে ছিলনা।তাঁর যুক্তিগুলো কোন ভূলই আমি খুঁজে পাইনি। তাঁর প্রতিটি ক্ষুরধার যুক্তিগুলো আমার সমস্ত বিশ্বাসকে কেটে টুকরো টুকরো করে ফেলছিল। স্বামী দয়ানন্দ স্বরসতীর রচিত "সত্য প্রকাশ" অন্ধকারের আমার হাত ধরেছিল এবং অন্ধকার থেকে আমাকে আলোতে নিয়ে এসেছিল যে অন্ধকার আমার মনকে ঘিরে রেখেছিল" বইটি পড়ার সময় মৌলভী সাহেব কতগুলো প্রশ্ন ও সন্দেহের তালিকা তৈরী করলেন যা তার মনকে পীড়া দিচ্ছিল। সেই সন্দেহের প্রশ্নগুলো তিনি সেই সময়কার ২৫ জন মুফতিকে(Islamic Scholar)চিঠির মাধ্যমের জানিয়ে ছিলেন। কুরান যদি যর্থাত দিক নির্দেশনা হয় তাহলে অবশ্যই এই উওরগুলিও আসবে। " আমি তাদের সবাইকে অনুরোধ করে বলেছিলাম যে আমার অভিপ্রায় নিয়ে প্রশ্ন না তুলে আমার জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন গুলির উত্তর দিয়ে আমার মনকে তৃপ্ত করবেন। আমি জানার জন্যই প্রশ্ন করেছি। " তিনি আরও বললেন "শুধু মাত্র সাতজন আমাকে চিঠির উওর দিয়ে বললেন যে তুমি এই সকল প্রশ্নের উওর আশা করতে পারি না কারন কুরানের সত্যতা ও প্রবিত্রতা নিয়ে প্রশ্ন করার মাত্রই তুমি আল্লাহ্‌ ও নবীজির চোখে ধর্ম ভ্রষ্ট হয়ে গেছো। " মৌলভী মেহবুব আলীর মনে যে সকল প্রশ্ন জেগে ছিল কোন মাওলানা বা কোন ইসলামিক বিশেষজ্ঞ তার কোন উওরই দিতে পারেনি। তারপরে আত্মার সন্ধানের জন্য তিনি বেদ সমগ্র অধ্যায়ন শুরু করলেন এবং সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি ধর্মত্যাগী হবে। তিনি ইসলামকে ছেড়ে বৈদ্যিক ধর্ম সনাতনকে আলিঙ্গন করলেন। "১৯৮৩ সালে আমি শুদ্ধি নিয়েছি এবং আমার পূর্বপুরুষের ধর্মীয় ঐতিহ্য আমি ফিরে পাই বৈদ্যিক আর্যাবত হিসেবে" তিনি এখন আমাদের সনাতন ধর্মের একজন অত্যন্ত জ্ঞানী পন্ডিত যার নাম পন্ডিত মহেন্দ্রপাল আর্য।

গত ২৯ বছর ধরে তিনি অনেক পথহারা মুসলীমকে ঘরে ফিরিয়ে এনেছেন। তিনি বলেন " আমি প্রধানত ইসলামিক স্কলারদের লক্ষ্য করি এবং এ যাবতকাল সফলতার সহিত প্রায় ১৫,০০০ কে ফিরিয়ে এনেছি বৈদ্যিক বিশ্বাসে। আমি মহাঋষী দয়ানন্দ স্বরসতী ও বেদের শিক্ষায় সুসজ্জিত যা যুক্তি সঙ্গত, মানবিক, সকল বিতর্কের উর্দ্ধে এবং অবশ্যই বৈজ্ঞানিক ভাবে নির্ভূল।" হালের মুসলীমদের মাঝে জনপ্রিয় মৌলবাদী ওয়াহাবি প্রচারক জাকির নায়েককে তিনি ইসলামিক যেকোন বিষয় নিয়ে তার সাথে বিতর্ক (Debate) করার চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন। " নায়েক নিজেকে Comparative Religions-এর একজন ছাত্র মনে করে এবং সবর্দা বেদ ও বেদ সাহিত্যের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। তিনি মুম্বাইয়ের ডুংরিতে সুসজ্জিত একটি অফিস দক্ষ কর্মচারীদের দ্বারা চালান এবং যার একমাত্র লক্ষ্যই হচ্ছে সেসব অমুসলীম যাদের জ্ঞান একেবারেই কম তাদের Misleadকরা মানে ভূল পথে চালিত করে তাদের ধর্মান্তরিত করে মুসলীম বানানো "
একদা মৌলভী বর্তমানে বৈদ্যিক পন্ডিত বলেন হিন্দুরা এখন খুবই বিশৃংখল এবং কুসংস্কারে ডুবে আছে। যখন দুষ্টের দলেরা তাদের শঠ কৌশলের মাধ্যমে আমাদের আক্রমন করে তখনও তাদের ঘুমিয়ে থাকতে দেখা যায়। এখন সময় এসে গেছে জেগে উঠবার এবং সকল ভাই বোনদের বৈদ্যিক আশ্রয়ে ফিরে আসার সাদরের আমন্ত্রন জানার জন্য শুদ্ধিকে পুনর্জীবিত করতে হবে।"

এই মহৎ প্রানের বক্তব্য অনুযায়ী আমরা এতই বিশৃংখল যে এমন একজনকে আমরা খুবই কম সনাতনীরা চিনি বা জানি। অথচ এই রকম ব্যাক্তি অন্যের সম্প্রদায়ের থাকলে তাকে নিয়ে সবাই কতই না হৈ চৈ করত সেটা সামান্য জাকির নায়েককে নিয়ে মুসলীমদের লাফালাফি দেখেই বোঝা যায়। কিন্তু আর নয়, আমরা তরুন প্রজন্ম এবার জেগে উঠবোই। বাংলার প্রতিটি ঘরে সত্যকে পৌঁছে দেয়াই হচ্ছে আজকে আমাদের সনাতনের অঙ্গীকার।

গীতা জয়ন্তী:




এই তিথিতেই পরম পুরুষোত্তম ভগবান শ্রীকৃষ্ণ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ যোদ্ধা বীর অর্জুনকে ৫০০০ বছর আগে কুরুক্ষেত্র নামক স্থানে ভগবদ্গীতার জ্ঞান দান করেছিলেন । তাই এই মহিমা মণ্ডিত তিথিকে গীতা জয়ন্তী তিথি বলা হয় ।
গীতা সর্ম্পকে কিছু বহিরঙ্গা জ্ঞান
১। গীতা হচ্ছে সমস্ত শাস্ত্রের সারতিসার এমনকি গীতায় এমন কিছু আছে যা অন্যান্য কোন শাস্ত্রে পাওয়া যায় না । যেমন – ৫ম পুরুষার্থ
২। মহাভারতের ভীষ্মপর্বের ২৫ থেকে ৪২ নং অধ্যায়ের এই ১৮ টি অধ্যায় হল ভগবদগীতা বা গীতোপনিষদ ।
৩। গীতায় আছে ৭০০ শ্লোক (কেউ বলে ৭৪৫ শ্লোক) আছে । তার মধ্যে ধৃতরাষ্ট্র বলেন ১টি শ্লোক, সঞ্জয় বলেন ৪০টি শ্লোক, অর্জুন বলেন ৮৫টি শ্লোক, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেন ৫৭৪টি শ্লোক ।
৪। গীতার ১৮টি অধ্যায়ের মধ্যে প্রথম ৬টি অধ্যায়কে বলে কর্মষটক, মাঝখানের ৬টি অধ্যায়কে বলে ভক্তিষটক, আর বাকি ৬টি অধ্যায়কে বলে জ্ঞানষটক ।
৫। গীতা পড়লে ৫টি জিনিষ সর্ম্পকে জানা যায় – ঈশ্বর, জীব, প্রকৃতি, কাল ও কর্ম ।
৬। যদিও গীতার জ্ঞান ৫০০০ বছর আগে বলেছিল কিন্তু ভগবান চতুর্থ অধ্যায় বলেছেন এই জ্ঞান তিনি এর আগেও বলেছেন, মহাভারতের শান্তিপর্বে (৩৪৮/৫২-৫২) গীতার ইতিহাস উল্লেখ আছে । তার মানে গীতা প্রথমে বলা হয় ১২,০৪,০০,০০০ বছর আগে, মানব সমাজে এই জ্ঞান প্রায় ২০,০০,০০০ বছর ধরে বর্তমান, কিন্তু কালের বিবর্তনে তা হারিয়ে গেলে পুনরায় আবার তা অর্জুনকে দেন ।
৭। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে মাত্র ৪০ মিনিটে এই গীতার জ্ঞান দেন ।
৮। গীতার মাহাত্ম্য অনেকে করে গেছেন তার মধ্যে শ্রীশঙ্করাচার্য, স্কন্দপুরাণ থেকে শ্রীল ব্যাসদেব, শ্রীবৈষ্ণবীয় তন্ত্রসারে গীতা মাহাত্ম্য আর আছে পদ্মপুরাণে দেবাদিদেব শিব কর্তৃক ১৮টি অধ্যায়ের মাহাত্ম্য বর্ণনা করেছেন ।
৯। গীতাতে অর্জুনের ২০টি নাম আর কৃষ্ণের ৩৩টি নামের উল্লেখ করা হয়েছে ।
১০। গীতাতে মাং এবং মামেব কথাটি বেশি আছে, যোগ শব্দটি আছে ৭৮ বার, যোগী আছে ২৮ বার আর যুক্ত আছে ৪৯ বার ।
১১। গীতার ২য় অধ্যায়কে বলা হয় গীতার সারাংশ ।
১২। ভগবান যখন বিশ্বরূপ দেখান তখন কাল থেমে যায় ।
১৩। ভগবান শুধু যুদ্ধের আগেই গীতা বলেনি ১৮ দিন যুদ্ধের মাঝখানেও গীতা বলেছে ।
(সংক্ষিপ্ত)

"হিন্দুদের গণিতচর্চা"


গণিত কথাটির অর্থ হল গণনা সম্পর্কীয় শাস্ত্র। এটি বিজ্ঞানের অন্যতম প্রধান শাখা। গণিতের শুরু কবে ও কোথায় এ প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেওয়া সম্ভব নয়। অনেকের মতে গণিতের আদিভূমি মিশর। যদিও এ নিয়ে বিতর্ক আছে। এর কারণ সেই সময় ব্যাবিলন এবং চীন এর পাশাপাশি আমাদের ভারতবর্ষেও উন্নতমানের গণিত চর্চা হত, যার স্বপক্ষে বহু প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাই অনেক পণ্ডিতের মতে ভারতবর্ষই গণিতশাস্ত্রের উৎপত্তি স্থল। প্রশ্ন আসতে পারে এমন দাবি করার পিছনে যুক্তি কী? সিন্ধু সভ্যতাকেই ধরে নেওয়া হয় ভারতের মাটিতে গণিতের পথচলার শুরুর সময়কাল। কারণ, এর আগের কোনো সভ্যতার নিদর্শন আজও আমরা খুঁজে পাইনি। সিন্ধু সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ থেকে যে লিপির নিদর্শন পাওয়া গেছে তা আজও পাঠ ও মর্মোদ্ধার করা সম্ভব হয় নি। তাই সে যুগের গণিতচর্চার প্রকৃত স্বরূপ আজও আমাদের অজানা। তবে ধ্বংসাবশেষে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বিভিন্ন নিদর্শন দেখে একথা অনুমান করতে অসুবিধা হয় না যে, এই উপত্যকাবাসীদের গণিতজ্ঞান যথেষ্ট উন্নতমানের ছিল। এই সভ্যতার উন্মেষ হয়েছিল ৩৫০০ – ৩৩০০ খ্রিষ্ট পূর্বাব্দের মধ্যে। সুতরাং ভারতীয় গণিতই প্রাচীনতম কিনা তা নিয়ে বিতর্ক থাকলেও মিশর, সুমেরীয় বা চীনের থেকে যে পিছিয়ে ছিল না এ কথা অনস্বীকার্য।

মূলত, ভারতবর্ষে গণিত এর চর্চা সেই বৈদিক যুগ থেকে হয়ে আসছে। বৈদিক মনীষীগণ দ্বারা গণিতের পরিপূর্ণ চর্চাই ভারতবর্ষের জ্যোতির্বিজ্ঞানকে উৎকর্ষের শিখরে উঠতে সাহায্য করেছিল বলে মনে করা হয়। বৈদিক যুগে গণিতের ভিত্তি বেদে বর্ণিত ১৬ টি সূত্র ও ১৩ টি উপসূত্রে অন্তর্নিহিত ছিল। বৈদিকযুগে মূলতঃ দশমিক পদ্ধতিতেই গণনাকার্য সম্পন্ন হত। যজুর্বেদ সংহিতায় প্রাপ্ত বিভিন্ন সংখ্যা যেমন; অর্বুদ(১০০০০০০০), নর্বুদ(১০০০০০০০০), সমুদ্র(১০০০০০০০০০),পরার্ধ(১০০০০০০০০০০০০) থেকে জানা যায় যে বিশালায়তন সংখ্যার ধারণাও হিন্দু গণিতজ্ঞদের কল্পনাতীত ছিল না। সমসাময়িক কোনও জাতি সম্ভবত এত বৃহৎ সংখ্যা কল্পনা করতে সক্ষম ছিল না। নিম্নে বর্ণিত সংখ্যাপ্রবাহ দুটিকে লক্ষ্য করা যাকঃ
১,৩,৫,...,৯৯
২৪,৪৮,৯৬,১৯২,.........,৩৯৩২১৬
প্রথমটির নাম সমান্তর প্রগতি এবং দ্বিতীয়টির নাম গুণোত্তর প্রগতি। ‘তৈত্তিরীয় সংহিতা’ ও ‘পঞ্চবিংশ ব্রাহ্মণ’ এ যথাক্রমে উপরোক্ত প্রগতিগুলির উল্লেখ পাওয়া যায়। এত গেলো পাটিগণিতের কথা। ‘শতপথ ব্রাহ্মণ’ এ হিন্দুদের জ্যামিতিক জ্ঞানেরও পরিচয় পাওয়া যায়। আমরা অনেকেই জানি, বৈদিক যজ্ঞানুষ্ঠানে একটি অন্যতম উপকরণ ছিল‘মহাবেদী’; যার আকৃতি হল সমদ্বিবাহু ট্রাপিজিয়াম। এই সমদ্বিবাহু ট্রাপিজিয়াম এর ক্ষেত্রফল এবং বাহু-উচ্চতার বিভিন্ন সম্পর্ক হিন্দুরা জানতেন। ঋণাত্মক রাশি সম্পর্কেও তারা অবগত ছিলেন। সংস্কৃত ভাষায় আরেকটি অন্যতম সূত্র হল “শুলভা সূত্র”। শুলভা শব্দের অর্থ দড়ি বা ঐ ধরনের কিছু। এই শুলভা সূত্র ব্যবহার করা হত হিন্দুদের মৃত্যুর পর বেদী তৈরীর কাজে। এটি এক ধরনের বৈদিক জ্ঞান, যেখানে বিভিন্ন ধরনের আগুনে পোড়ানোর বেদীর বিভিন্ন অর্থ তুলে ধরা হয়েছিল। উদাহরণ স্বরুপ বলা যায়, যারা স্বর্গে যেতে ইচ্ছুক, শুলভা সূত্র অনুযায়ী তাদের আগুনে পোড়ানোর বেদী হবে বকের আকৃতির। যারা ব্রাক্ষনদের মত পৃথিবী জয় করতে চায়, তাদের বেদী হত কচ্ছপ আকৃতির। এছাড়া রম্বস আকৃতির হবে তাদের বেদী, যারা অজাতশত্রু হতে চায়! বেদ থেকে প্রাপ্ত বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সূত্রগুলো হল:

অপাস্তমব্য
বৌধয়ন
মানব
ক্যাত্যায়ন
মৈত্রয়নী (মানব এর সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ)
বরাহ
বধূলা
হিরন্যকেশ (অপাস্তমব্য এর সাথে সাদৃশ্য পূর্ণ)
এই সূত্রগুলোর বেশির ভাগই আবিষ্কৃত হয় ৮০০ থেকে ২০০ খ্রীষ্টপূর্বে। যাদের মধ্যে সবচাইতে প্রাচীন সূত্র হল বৌধয়ন। মজার ব্যাপার, অপাস্তমব্য ও বৌধয়নের সাথে পীথাগোরাসের সূত্র ও পীথাগোরিয়ান এরীয়র সাদৃশ্য লক্ষ্য করা গেছে। বিভিন্ন জ্যামিতিক আকৃতি, যেমন চতুর্ভূজ ও বর্গের অস্তিত্ব লক্ষ্য করা গেছে বৌধয়নের ভেতর।এছাড়া আছে, একটি সুনির্দিষ্ট জ্যামিতিক ক্ষেত্রের ক্ষেত্রফলকে অন্য একটি জ্যামিতিক ক্ষেত্রের ক্ষেত্রফলে রূপান্তর করার পদ্ধতি। আরো একটি বিস্ময়কর ব্যাপার হল, এই সূত্রের ভিতর √2 এর মান অত্যন্ত নির্ভুলভাবে বের করার উপায়ও বলা হয়েছে। যা আমরা পানিনি দ্বারা বর্ণিত ইতিহাস থেকে জানতে পারি।

এরপর প্রায় ১০০০ বৎসর গণিতের মৌলিক গবেষণার ক্ষেত্রে হিন্দুদের বিশেষ একটা অবদান লক্ষ্য করা যায় না। পরবর্তীতে আর্যভট্ট্‌(৪৭৬-৫৩০),ব্রহ্মগুপ্ত(৫৮৮-৬৬০ খ্রিঃ), বরাহমিহির(ষষ্ঠ শতাব্দীর প্রথম ভাগে ), গলস্ন (ষষ্ঠ শতাব্দীর প্রথম ভাগে), ভাস্কর(ষষ্ঠ শতাব্দীর শেষ ভাগে), মহাবীরাচার্য (নবম শতাব্দী ), শ্রীধর আচার্য (একাদশ শতাব্দীর প্রথম ভাগ), শ্রীপতি (একাদশ শতাব্দী), ভাস্করাচার্য (দ্বাদশ শতাব্দী) প্রমুখ মনীষীবৃন্দের কর্মালোকে হিন্দু গণিতশাস্ত্র আবার বিশ্বসভায় নিজের স্থান সুদৃঢ় করে তোলে। গণিতশাস্ত্রে হিন্দু মনীষীদের সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য অবদান হল দশমিক স্থানিক অঙ্কপাতন পদ্ধতি ও ‘শূন্য’ এর আবিষ্কার। অবশ্য এর আগে খ্রীষ্টপূর্ব ২০০ তে পিঙ্গলের ‘ছন্দসূত্রে’ শূন্যের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। আর্যভট্ট রচিত ‘আর্যভটীয়’ নামক গ্রন্থে দ্বিঘাত প্রথম মাত্রার অনির্ণেয় সমীকরণের সমাধান ও π এর নির্ভুল মান এর উল্লেখ পাওয়া যায়। বর্গমূল নির্ণয়ের পদ্ধতিও আর্যভট্টের আবিষ্কার। এসময়ের আরেকজন উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি হলেন ব্রহ্মগুপ্ত। তিনি পিরামিড ফ্রাস্টাম এর আয়তন নির্নয় সম্পর্কিত সূত্র আবিষ্কার করেন। যাঁর কথা না বললে এই লেখা অপূর্ণ থেকে যাবে তিনি হলেন ভাষ্কর। তাঁর লেখা বিখ্যাত গ্রন্থখানি হল চারখন্ডে সমাপ্ত‘সিদ্ধান্ত শিরোমণি’। যার প্রথম ২টি খন্ড লীলাবতি ও বীজগণিত এ পাটীগণিত ও বীজগণিত এর বিভিন্ন বিষয় আলোচিত হয়েছে। “একটি ঋণাত্মক রাশিকে অপর একটি ঋণাত্মক রাশি দ্বারা গুণ করলে ধনাত্মক রাশি এবং একটি ঋণাত্মক ও অপর একটি ধনাত্মক রাশি গুণ করলে ঋণাত্মক রাশি পাওয়া যায়”, বীজগনিতের এই সিদ্ধান্ত ভাষ্কর এর আবিষ্কার। গণিত এর ছাত্র মানেই, “x=(-b±√(b^2-4ac))/2a” সূত্র সম্পর্কে অবগত। যার আবিষ্কারকের নাম শ্রীধর। দ্বিঘাত সমীকরণের মাত্রা নির্ণয়ের এইসূত্রটি ‘শ্রীধরাচার্যের উপপাদ্য’ নামে প্রচলিত। এতো গেল পাটীগণিত ও জ্যামিতির কথা। এরপর ত্রিকোণমিতি। ত্রিকোণমিতিতেও হিন্দুদের সাফল্য অনস্বীকার্য। বরাহমিহির‘পঞ্চসিদ্ধান্তিকা’ গ্রন্থে sin30 ও sin 60 এর মান নির্ণয় করে দেখিয়েছেন। বর্তমান ত্রিকোণমিতিতে ব্যবহৃত মূল সূত্রগুলিও বরাহমিহির এর আবিষ্কৃত।

এই হল আমাদের হিন্দুধর্ম; আমাদের গণিতশাস্ত্র; যার মাহাত্ম্য, যার অবদান বলে শেষ করা যাবে না। হাজার হাজার বছর আগে যখন পৃথিবীতে জ্ঞান ও ধর্মকে একত্রিত করা হয়েছিল ঈশ্বরের উপাসনার জন্য, ঠিক তখন থেকেই আমাদের ভারত উপমহাদেশেও জ্যামিতি, গণিত ও ধর্মের বিভিন্ন রীতির সংমিশ্রন ঘটেছিল। সেই সময় হিন্দুধর্ম তথা সনাতন ধর্ম এতটাই সমৃদ্ধশালী ছিল যে, যা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। ভাবতেই অবাক লাগে যে সময় পৃথিবীর অধিকাংশে মানবসভ্যতার ছোঁয়া পর্যন্ত লাগেনি তখন ভারতবর্ষের বিভিন্ন আশ্রমে ঋষিগণ নিমগ্ন ছিলেন বিজ্ঞানের মহাযজ্ঞে। এর কারণ বৈদিক যুগে এদেশের সমাজ ব্যবস্থা মূলত ধর্মের উপর প্রতিষ্ঠিত ছিল। ধর্ম কর্মের জন্য প্রয়োজন হত নানা ধরণের যজ্ঞাদি ক্রিয়া কান্ড। এই যজ্ঞানুষ্ঠানের একটি অপরিহার্য অঙ্গ ছিল যজ্ঞবেদী নির্মাণ। যার জন্যই সংখ্যা ও জ্যামিতির বিভিন্ন বিস্ময়কর বৈশিষ্ট্যই গণিতবিদ ও পুরোহিতদের অনুপ্রাণিত করেছিল গণিতশাস্ত্রকে বিভিন্ন ধর্মবিষয়ক কাজে ব্যবহার করার। আর সেই থেকেই শুরু হয় ভারতবর্ষে হিন্দুদের গণিতচর্চা। এই লেখাটি লিখতে গিয়ে, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন তথ্য আমাকে সংগ্রহ করতে হয়েছে। প্রতি মুহূর্তেই আমি অনুপ্রাণিত হয়েছি গণিতশাস্ত্রে হিন্দু মনীষীদের অতুলনীয় অবদান দেখে। আর এই জন্যই আমরা মাথা উঁচু করে বলতে পারি, সনাতন ধর্মের প্রতিষ্ঠা হয়েছে জ্ঞানের পথে। ঈশ্বর সকলের মঙ্গল করুক, এই কামনায় এখানেই শেষ করছি।
জয় সনাতন ধর্মের জয়।
-------------সমাপ্ত---------------

হিন্দু মেয়েদের মুসলিম আসক্তিঃ কারণ ও পরিণাম




উপমহাদেশে ইসলাম ধর্ম বিস্তারের প্রধান হাতিয়ার হিন্দু মেয়ে বিবাহ। ছলে-বলে-কৌশলে মুসলমানের সংখ্যা বৃদ্ধি করা তাদের সকল উদ্দেশ্য সাধনের অন্যতম প্রধান হাতিয়ার। অতীতে রাজ্যহারা পরাধীন হিন্দুগণ জান-মালের ভয়ে, অস্ত্বিত্ব ও জীবন রার্থে ইসলাম গ্রহণ করতে বাধ্য হত অথবা নির্যাতন, ধর্ষণ, লুণ্ঠন বা মৃত্যুকে স্বীকার করে নিত। বর্তমানে দ্বিতীয় ঘটনাটার পুনরাবৃত্তি মাঝে মাঝেই ঘটে। কিন্তু অবাক হতে হয়, হিন্দু ছেলে-মেয়েরা তাদের নিজেদের ধর্ম বা ইসলাম ধর্ম কোনটা সম্পর্কেই সুস্পষ্ট ধারণা না রেখেই স্বেচ্ছায় ধর্মান্তরিত হচ্ছে। কি সেই আকর্ষণ আর কেনই বা হিন্দু মেয়েরা মুসলিম ছেলেদের প্রতি এত আকৃষ্ট হচ্ছে?

কারণঃ কেন আসক্ত হচ্ছে?

১. সনাতন ধর্মীয় মূল্যবোধ ও জ্ঞান শূন্যতা
নিজের ধর্ম সম্পর্কে হিন্দু যুবক-যুবতীগণ একেবারেই অজ্ঞ। তাদের পরিবার থেকে যথাযথ ধর্মীয় জ্ঞান তাদের দেওয়া হয় না। সনাতন ধর্মীয় শুদ্ধ জ্ঞান লাভের উৎসেরও অভাব রয়েছে। নিজের ধর্ম সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণে বিধর্মীদের সমালোচনার কোন সদুত্তর তারা দিতে পারে না। একসময় সত্যিই নিজের ধর্মকে ভ্রান্ত বা অর্থহীন মনে করতে দ্বিধা করে না।

২. মানসিক ধর্ষনের স্বীকার
একটি হিন্দু ছেলে কিংবা মেয়ে নিজ পরিবারের মা-বাবা সহ পরিবারের সকল বয়েজ্যৈষ্ঠদের কাছ থেকে শিখে ভাল আর মন্দের পার্থক্য গুলি, যেমন ভাল মানুষ ও মন্দ মানুষ। শিখে সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই। কিন্তু শিখে না যেটা বেশী দরকার তাহল এরা প্রথমে হিন্দু ও তারপর মানুষ। শিখে না এরা সংখ্যা লগু সম্প্রদায়ে জন্ম এবং বড় হয়ে প্রতিটি পদে পদে বঞ্চনা ও বিড়ম্বনার শিকার হতে হবে। অপর দিকে একটি মুসলিম সম্প্রদায়ের শিশু শিখে সে প্রথমে মুসুলমান পরে মানুষ। সে আরো শিখে সে নিজে মুসুলমান আর অন্যেরা বিধর্মী এ ধরনের পার্থক্যগুলি। ফলে যে কোন হিন্দু শিশু প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির পর থেকে সহসাথীদের নিকট শুনতে হয় ঐ হিন্দু, শিকদের নিকট শুনতে হয় তোমরা হিন্দু এবং হিন্দুদের কোন ধর্ম নাই ইত্যাদি ইত্যাদি। এভাবে হিন্দু শিশুরা মানসিক ধর্ষনের শিকার হতে থাকে এবং ধর্ষনের এধারা কোন হিন্দু শিশুর বয়ঃ বৃদ্ধির সাথে ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে। পাশাপাশি পাঠ্য বইয়ে হিন্দু রাজা মহারাজা ও বীরদের কর্তৃত্ব খর্ব করে প্রকারান্তরে মুসলিম রাজা বাদশা ও লুটেরাদেরকে বীর হিসাবে উল্লেখ্য করায় এগুলো পড়ে হীনমন্যতায় ভোগে। একই সাথে তাবলীগ জামাত ও ইসলাম ধর্মের দাওয়াতকারীদের গুনকীর্তন হিন্দু শিক্ষার্থীদের মানসিক ধর্ষনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। একসময় হিন্দু ছেলে মেয়েরা ভুলে যায়, তাদের মা-বাবার স্নেহ, তাদের প্রতি ও পবিরাররের প্রতি দায় দায়িত্ব। প্রকারান্তরে ধর্মান্তরনে সাহায্য করে।

৩. মিডিয়ার প্রভাব
হিন্দুদের কাছে মুসলিম সংস্কৃতি একেবারেই ভিন্নতর ও অজানা। অজানার বাহ্যিক চাকচিক্যের আকর্ষণ রয়েছে। সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের কারণে পাশাপাশি বাস করা হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি তাদের একটা প্রভাব তৈরি হয়। পাশাপাশি বিভিন্ন সেক্যুলারবাদী খুল্লাম খুল্লা টিভি চ্যানেল ও ইসলামপন্থী টিভি চ্যানেল, সংবাদপত্র ও চলচ্চিত্রের কাহিনীতে মুসলমান চরিত্রগুলোকে বীর ও মহৎ গুণের অধিকারী রূপে দেখানো হয়। সাধারণ হিন্দুদের সাধারণ হিসেবেই দেখানো হয়। এই মিডিয়াগুলো উঠতি বয়সী যুবক-যুবতীদের মনে দারুন প্রভাব ফেলে। মুসলিমদের মানবাধিকারের কথা যতটা ফলাও করে প্রচার করা হয় হিন্দুদের সেই সাপেে উল্লেখ নেই বললেই চলে।

৪. যৌন চাহিদা
হিন্দু মেয়েরা বিশেষত: টিনেজারদের কাছে সাধারণত সেক্স একটা অজানা জগত। আমাদের দেশে কিশোর-কিশোরীদের যৌন শিক্ষা প্রচলিত না থাকায় তারা এই অজানা বিষয়ে খুবই আকর্ষণ বোধ করে। মুসলমান পরিবারে একটি মেয়ে অল্প বয়স থেকেই খুব ভালভাবে বুঝতে শেখে যে- সে একটা মেয়ে। তার কাছের ও দূরের আত্মীয় সম্পর্কের পুরুষদের কাছ থেকে পুরুষ মানুষ কি জিনিস তার খুব ভাল পরিচয় পেয়ে যায়। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় চাচাতো, খালাতো, মামাতো, ফুফাতো ভাই অথবা কাছের বা দূরের সম্পর্কের আত্মীয়ের সাথে সেক্স করার সুযোগ তাদের ঘটে। তাদের রাজসিক খাদ্যাভ্যাস ও জীবন প্রণালী এই কর্মে উৎসাহী করে।অন্যদিকে সাধারণত হিন্দু সমাজে দূর সম্পর্কের ভাই হলেও সে একটা মেয়েকে আপন বোনের মতই দেখে ও শ্রদ্ধা করে। হিন্দু ছেলে ও মেয়ে উভয়ের মধ্যেই তুলনামূলক বেশি নৈতিক মূল্যবোধ কাজ করে। ফলে হিন্দু পরিবারের মেয়েগুলো সেক্স বিষয়ে মুসলিমদের তুলনায় অজ্ঞ থাকে। আর কোন মেয়ে যদি তার উঠতি বয়সে বা যৌবনে বিবাহের পূর্বে সেক্স বিষয়ে আগ্রহী হয়, তবে তার চাহিদা পূরণের জন্য সাধারণত কোন সুযোগ থাকে না। এই সুযোগটা অনেকেত্রেই গ্রহণ করে মুসলিম যুবকগণ। আর যেখানে মুসলিমদের সংখ্যাই অধিক সেখানে এই ঘটনা আরও বেশি ঘটে।

৫. প্রেম: মরণ ফাঁদ
হিন্দুদের ধর্মান্তরের প্রধান মাধ্যম হলো প্রেম। মুসলিম যুবকগণ হিন্দু মেয়েদের প্রতি যেন একটু বেশিই আকর্ষণ বোধ করে। আর অজ্ঞান মেয়েগুলোও খুব সহজেই এই মোহে আক্রান্ত হয়। তাছাড়া মুসলিম বন্ধুর সাথে মিশতে মিশতে ভাল সম্পর্ক তৈরী হয়ে গেলে বা কারও প্রতি মুগ্ধ হয়ে গেলে মেয়েরা ফাঁদে পড়ে যায়। এই সুযোগের অপোয় থাকা যুবকের অনুরোধ উপো করা অনেক ক্ষেত্রেই আর সম্ভব হয়ে ওঠে না।

৬. খৎনাকরণ:
লেজকাটা শিয়ালের দর্শন অনেকের ধারণা খৎনা করলে পুরুষাঙ্গের যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় ও অনেক মরণঘাতী রোগ হতে সুরক্ষা হয়। এ বিষয়ে হিন্দু মেয়েরা অনেকেই আকর্ষণ বোধ করে। মুসলিম পরিবারের এত বেশি ভাঙন কেন? খৎনা করা পুরুষের যদি এতই ক্ষমতা থাকে তবে মুসলিম স্ত্রীদের অভিসার ও ব্যভিচারের কেন এই আধিক্য? পরপুরুষের হাত ধরে স্বামীসন্তানের মায়া ফেলে পালায় কেন? এ সংক্রান্ত প্রশ্ন গুলি উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেনা।

৭. পবিত্রতা :
হিন্দু মেয়েরা নিজেদের দেহকে পবিত্র মনে করে। একবার মোহবশত: কোন মুসলিম ছেলের সাথে শারীরিক মিলন হলে তারা আর ফিরে আসতে চায় না। তারা নিজেদের তখন অপবিত্র মনে করে।

৮. প্রলোভন
পুণ্য ও বেহেশ্ত প্রাপ্তির আশায় মুসলিম নারী ও পুরুষ উভয়েই উদগ্রীব থাকে। যে কোন মুসলিম ছেলে অন্যধর্মের মেয়েকে বিয়ে করে ধর্মান্তরিত করলে পরিবারের সবাইতে তাকে এ কাজে সহায়তা করে এজন্যে যে এর সওয়াব পরিবারের সকলে ভোগ করবে। ফলে মুসলিম ছেলেটি উৎসাহ পায়। একই ভাবে মুসলিম মেয়ে হিন্দু ছেলে শিকার করতে উৎসাহী ও উদ্ধগ্রীব হয় । ফলে মুসলিম ছেলে ও মেয়েদের কুমন্ত্রণা ও প্রলোভনে হিন্দু মেয়ে ছেলেদের ধর্মান্তরের জন্য যথেষ্ট ভূমিকা রাখে।

৯. পারিবারিক হুমকি ও নীরব অত্যাচার
বিশেষত মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় হিন্দুদের জমি, সম্পত্তি ও নারীদের ওপর দুর্বৃত্তদের নজর পড়ে বেশি। হিন্দুদের ওপরে নীরব অত্যাচার একটি সাধারণ ঘটনা।জীবন, সম্পত্তি, সুখ-শান্তি ও সম্মান রার্থে অনেক সময়ই হিন্দু মেয়েদের উৎসর্গ করতে হয় মুসলিমের হাতে।

১০. সেক্যুলারইজমঃ
হিন্দুদের জন্য অভিশাপ এই শব্দটা যেন ব্যবহারিকভাবে হিন্দুদের জন্যই একমাত্র প্রযোজ্য। সবাই এর কথা বলে কিন্তু এর বলি হয় শুধুমাত্র হিন্দু সম্প্রদায়। হিন্দু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, মিডিয়া ও বুদ্ধিজীবীগণ নিজেদের সেক্যুলার, উদার ও ধর্মনিরপে হিসেবে প্রমাণ করতে মুসলিম তোষণ ও বিবাহকে উৎসাহিত করেন। যদিও তাতে ইসলামেরই জয় হয়। কারণ হিন্দুকেই তার ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম গ্রহণ করতে হয়। বিপরীতটা ঘটতে দেখা যায় না। এরই নাম তথাকথিত সেক্যুলারইজম।

১১. শিক্ষিত মেয়েদের অবস্থা বিশ্ববিদ্যালয় বা উচ্চ শিক্ষালয়ের হিন্দু ছাত্রীগণ প্রথমত কাসমেট হিন্দু ছেলেদের সাথে বন্ধুত্ব করতে বিব্রত বোধ করে। মনে করে, যদি প্রেম হয়ে যায়? হয়ত বর্ণবৈষম্যের কারণে মা-বাবা মেনে নেবেন না- এই ভয় কাজ করে। ফলে অন্যান্য ছেলেদের সাথে ভাল বন্ধুত্ব গড়ে তোলে। একসময় নিজের অজ্ঞাতেই প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে; মনে করে, এই সম্পর্ক হতে সে বেরিয়ে আসতে পারবে এবং বিয়ে পর্যন্ত গড়াবে না। কিন্তু যখন বা¯Íবতা বুঝতে পারে ততÿণ অনেক দেরি হয়ে যায়, ফেরার উপায় থাকে না। আর মুসলিম বন্ধুর উদার বাণীগুলোও তাকে মুগ্ধ করে রাখে। তাদের অভিসন্ধি বোঝার মতা থাকে না। তখন মা-বাবা, আত্মীয়-স্বজন কারোর বন্ধনই আর আটকে রাখতে পারে না।

১১. তথাকথিত স্মার্টনেস

স্মার্ট ও সুন্দরী হিন্দু মেয়েগুলো তাদের যোগ্য হিন্দু বন্ধু অনেক ক্ষেত্রেই খুঁজে পায় না। মুসলিম ছেলেদের মধ্যে তাদের স্বপরে স্মার্ট গুণগুলোর উপস্থিতি দেখে তাদের চাকচিক্যের প্রতিই এরা বেশি আসক্ত হয়ে পড়ে। মুসলিম যুবকরাও এই সুযোগটার সদ্ব্যবহার করে।

পরিণতি
বিবাহের সুখ ও যৌনতার মোহ খুব বেশিদিন থাকে না। প্রেমঘটিত বিয়ের পর মুসলিম পরিবারে হিন্দু স্ত্রীগণকে বাস্তবব জীবনের কষাঘাতে পদে পদে লাঞ্ছিত ও অপমানিত হতে হয়। সঙ্গী হয় সারা জীবনের কানড়বা।

• মুসলমানের হিন্দু স্ত্রীদেরকে প্রথমত সাদরে গ্রহণ করা হলেও খুব শীঘ্রই তাদের উপর ইসলামী বিধানগুলো কাল হয়ে আসে। একাকী বের হওয়া যাবে না, ছবি তোলা ও চলচ্চিত্র নিষিদ্ধ, বোরখা পরতে বাধ্য হওয়া, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, ব্যক্তি-স্বাধীনতার অনুপস্থিতি, পূর্বে নিরামিষ আহারী হলেও পিয়াজ-রসুন ও গরুর মাংসের নিয়মিত বিড়ম্বনা তখন নিত্য সঙ্গী হয়। শাশুড়ি বা ননদের এমনকি স্বামীর অত্যাচারের স্বীকার হলেও প্রতিবাদ করার উপায় থাকে না। কারণ স্বামী খুব সহজেই তাকে ‘তালাক’ দিতে পারে। এমনকি সন্তানসহ তালাকও দিতে পারে। তখন হিন্দু স্ত্রীর পায়ের নিচে আর কোন মাটি থাকে না। এককথায় স্বামীর সংসারে তাকে দাসী হয়ে জীবনটা কাটাতে হয়।

• হিন্দু মেয়েরা মুসলিম পুরুষ বিয়ে করলে সাধারণত তার নিজের পরিবার ও আত্মীয়-স্বজন হতে ত্যাজ্য হয়ে যায়। একমাত্র স্বামী ছাড়া সে নিরাশ্রয় হয়ে পড়ে।তাই বাধ্য হয়ে সকল অত্যাচার মুখ বুজে সহ্য করতে হয়।

• মেয়েরা শ্বশুরবাড়ি এসে বাবার বাড়ির অহংকার করে থাকে। গল্প করে থাকে। তার বিপদে-আপদে বাবা-ভাইয়েরা এগিয়ে আসবে -এই বিশ্বাসটুকু তাদের থাকে।কোন কারণে শ্বশুরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হলে মাথা গোঁজার ঠাই বা আশ্রয়টুকু তার থাকবে- এই ভরসা থাকে। কিন্তু কেউ ধর্মান্তরিত হলে তার পরিণতি সরস্বতী দাসের মতই হতে পারে।

• শ্বশুরবাড়িতে শ্বশুর-শাশুরি, ননদ, জা এবং আত্মীয়-স্বজন কর্তৃক প্রায়শ: ‘মালাউনের মেয়ে’ বলে গালি শুনতে হয়। এক ছেলে ও এক মেয়ের জননী সে ‘মালাউনের মেয়ে’ গালী শুনতে হয়। দুঃখের বিষয় মাঝে মাঝে আদরের সন্তানই ‘মালাউন মাগী’ বলে গালি দেয়। এটা স্বাভাবিক ঘটনা। আমি যে মুসলমান বন্ধুর সাথে একটু আগে হাসিমুখে কথা বললাম, আড়ালে হয়ত সেও আমাকে মালাউনের বাচ্চা বলে গালি দেয়।

• মুসলিম মতে তিন তালাক বললেই সম্পর্ক শেষ। যৌন আকর্ষণ বিয়ের পর খুব বেশিদিন থাকে না। তারপর শুরু হয় বাস্তÍবতা। একজন পুরুষের একইসাথে চারটি পর্যন্ত বিয়ে করা বৈধ। একজন স্ত্রীর প্রতি মোহ কমে গেলে বা নতুন কোন নারীর প্রতি আসক্ত হলে খুব সহজেই তিন তালাক দিয়ে নতুন বিয়ে করতে ইসলামে কোন বাধা নেই। মুসলিম পরিবারে নিজের পুত্রবধু থেকে শুরু করে দাসী পর্যন্ত যথাক্রমে নিকাহ্ বা ভোগ করা বৈধ। ইসলামে স্ত্রীদের শষ্যেক্ষেত্রের সাথে তুলনা করা হয় এবং পুরুষ সেখানে স্বেচ্ছাচারী যেমন খুশি গমন করতে পারে এবং স্ত্রীরা এক্ষেত্রে বাধ্য। প্রয়োজনে প্রহার করাও বৈধ। এক্ষেত্রে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয় কি না?

• গ্রামের দিকে খোঁজ নিয়ে দেখুন, যে সকল মেয়ে মুসলিম হয়েছে, যৌবনের জৌলুস কমার সাথে সাথে তালাক হয়ে গেছে, ফলে ভিক্ষা করতে হয়। গ্রামের যথেষ্ট ভিক্ষুকের মধ্যে অনেক গুলিই কনভার্ট হওয়া হিন্দু মেয়ে পাওয়া যাবে। পতিতালয়ে গিয়ে দেখুন, ওখানে পাবেন কনভার্ট হয়ে যাওয়া হিন্দু মেয়ে যে যৌবনের প্রথম প্রতুষ্যে সুখের লাগিয়া বাঁধিয়াছে ঘর মুসলিম প্রেমিকের তরে, ঠাঁই হইয়াছে শেষে পতিতালের অন্ধকার ঘরে।

• সবচেয়ে বড় সত্য হলো মুসলিম পরিবারে ধর্মান্তরিত হিন্দু স্ত্রীগণ কেউই প্রকৃতপক্ষে সুখে নেই।

সুতরাং প্রত্যেক অবিবাহিত হিন্দু যুবক যুবতী ও নারী পূরুষের সর্তক হওয়া উচিত এবং পরিবারের সকল শিশু কিশোর কিশোরী সদস্যাদের প্রতিদিনই এতদ বিষয়ে সর্তক করা উচিত।

****অরুন মজুমদার, ঢাকা, ০৬/০১/২০১২ (বিঃদ্রঃ লেখাটির কিছু কিছু অংশ নিঃশব্দ সন্ত্রাস নামক একটি বই থেকে সংযুক্ত করে সংকলন করা হয়েছে।)

কেশব দেব মন্দির, মথুরা, উত্তর প্রদেশ



মথুরার কেন্দ্রমণি কেশব দেব মন্দিরটি। এ মন্দিরকে অনেকে কেশব দেও মন্দিরও বলে থাকে।ধারনা করা হয় এখানে কংসের কারাগার ছিল যেখানে দেবকি ও বসুদেব বন্দী ছিলেন এবং শ্রীকৃষ্ণের জন্ম হয়। পৌরাণিক কাহিনী মতে এই স্থানে সর্বপ্রথম মন্দির নির্মাণ করেন শ্রীকৃষ্ণের প্রপৌত্র শ্রীবজ্রনাভ । পাথরে খোদিত ব্রাহ্মীলিপি থেকেও এ তথ্যের সত্যতা পাওয়াযায় ।

মন্দিরটি গজনির সুলতান মাহমুদ ১০১৭ সালে এটি ধ্বংস করে দেন। ১২৫০ সালে মহারাজ বিজয় পালের গড়া এ মন্দিরটি আবারও ধ্বংস হয় সিকান্দার লোদির হাতে। রাজা বীরসিং দেও এই মন্দিরটি আবার গড়ে তোলেন। ১৬৬৯ সালে এই মন্দির ধ্বংস করে দেন মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেব।।আলেকজান্ডারের শাসনামলে আলেকজান্ডার ভারতবর্ষে এসে বেদি মন্দিরটি সম্পূর্ণ না ভেঙ্গে প্রার্থণা হলটি ভেঙ্গে দেন । মন্দিরের বেদি তখন রক্ষা পেলেও মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব গোবিন্দদেব মন্দিরটি ভেঙ্গে আর্বিভাব স্থান মন্দিরের এক অংশে ঈদগাহ্‌ মস্‌জিদ নির্মাণ করেন । সেই মন্দির ও মসজিদ এখনও পাশাপাশি রয়েছে যা সনাতন ধর্মের পরধর্ম সহিষ্ণুতার এক নিদর্শন । সেই মন্দির ও মসজিদ এখনও পাশাপাশি দর্শনীয় ।

এই স্থানে নির্মিত হওয়া প্রাচীন মন্দিরের বর্ণনা সমগ্র গ্রন্থ বা লিপি রয়েছে । যেমন - ১০১৭ সালে মুহম্মদ গজনবীর লিখিত রের্কড থেকে বহু তথ্য জানা যায় । তিনি লিখেছিলেন , "শহরের প্রান্তে অবস্থিত অভূতপূর্ব মন্দির নিশ্চয়ই কোন মানুষ নির্মাণ করেননি । এটি নিশ্চয় (দেবতারা বা ফেরেস্তারা ) নির্মাণ করেছেন ।" লাল পাথরের জুমা মসজিদ, বিশালাকার মন্দির পাশাপাশি। মন্দিরের সিলিং ও দেয়ালে দেখএ যাবে এখনো ক্ষত বিক্ষত হিন্দুপুরাণের নানান আখ্যান।
তৃতীয়বার এ মন্দিরটি তৈরি করেন রাজা বিজয় পাল। অর্চির রাজা জুদেব বুন্দলে একাই তৈরি করেন চার বার এই মন্দিরটি ।তিনি প্রমান করার চেষ্টা করেন, ধ্বংস নয় সৃষ্টির ভিতরেই মহত্ত্ব। শেষ বারের মত মন্দিরটি পুন নির্মাণ শুরু করেন কাশীর রাজা পণ্ডিত মদন মোহন মালভিয়া ১৯৪৪ সালে এবং ব্যাবসায়ি যুগল কিশোর বিড়লা ১৯৫১ সাল থেকে কাজ করে ১৯৬৫ সাল নাগাদ ১৫ মিলিয়ন রুপি ব্যয় করে নির্মাণ শেষ করেন।

মথুরা দেখার পর যেতে পারেন বৃন্দাবনের দিকে। পুরাণে বর্ণিত আছে, অসুরদের বিনাশ করে পৃথিবীতে প্রেম-ধর্ম প্রতিষ্ঠা করতে শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব। যদিও তার মনুষ্যরূপ আর সেই রূপে তিনি আবদ্ধ, তবু প্রকৃতপক্ষে তিনি অসীম ও সর্ববিরাজমান।

মথুরা-বৃন্দাবন সম্পর্কে কিছু তথ্যঃ
_________________________________

আগ্রা থেকে দিনে দিনেই ঘুরে আসা যায় যমুনা তীরের বিখ্যাত এই যুগল তীর্থক্ষেত্র মথুরা ও বৃন্দাবন। আগ্রা থেকে মথুরা ৫৪ কিলোমিটার। সেখান থেকে বৃন্দাবন ১০ কিলোমিটার দূরে। আগ্রার বিজলিঘর বাসস্ট্যান্ড থেকে মথুরার বাস ছাড়ে। আবার আগ্রার ঈদগাহ থেকে মথুরাগামী বাসগুলো শহরের মধ্যে না গিয়ে নামিয়ে দেবে বাইপাস ক্রসিংয়ে। সেখান থেকে অটো পাবেন ৬ কিলোমিটার দূরে মথুরা শহরে যাওয়ার জন্য। আবার আগ্রা থেকে খুব সকালের দিকে রওনা দিয়ে মথুরা-বৃন্দাবন বেড়িয়ে রাতে আগ্রা ফিরে আসা যায় সহজেই।
মথুরায় প্রথমেই যাবেন শ্রীকৃষ্ণের জন্মভূমি মন্দিরে। বিশাল এই মন্দিরে ক্যামেরা, মোবাইল নিয়ে প্রবেশ নিষেধ। এখানেই রয়েছে কংসের কারাগার, যেখানে শ্রীকৃষ্ণ জন্মগ্রহণ করেছিলেন। মথুরার পুরনো মহল্লায় দ্বারকাধীশ মন্দির। এর কাছেই রয়েছে যমুনা নদীতীরের বিখ্যাত অসিকুণ্ড ঘাট, বিশ্রাম ঘাট। নদীতে নৌবিহার ও ঘাট দর্শনের ব্যবস্থা রয়েছে। মথুরা-বৃন্দাবনের সব মন্দিরই দুপুর ১২টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত বন্ধ থাকে।

গুজরাট দাঙ্গা আর ভণ্ড সেকুলারদের ভণ্ডামি





আমাদের পেজে হিন্দু নির্যাতনের আর মন্দির ভাঙ্গার কথা উঠতেই কিছু মোডারেট ভণ্ড মুসলিম ভাঙ্গা রেকর্ডের মত গুজরাট দাঙ্গা আর বাবরী মসজিদের গান গেয়ে যায়। বাবরী মসজিদের সম্পর্কে আমরা আগেই লিখেছি। কোন চক্ষু লজ্জা সম্পন্ন মুসলিম বাবরী মাওসজিদ প্রসঙ্গ কেমন করে আনে আমি বুঝি না। শুধুমাত্র হিন্দু শাসিত ভারত বলেই বাবরী মসজিদের জায়গা হিন্দু মুসলিম আর জৈনদের মাঝে ভাগ করে দেয়া হয়।অথচ ওই একই মুসলিমকে আপনি সোমনাথ, কাশী বিশ্বনাথ বা মুসলিম আমলে ধ্বংস করা হাজার হাজার মন্দিরের কথা জিজ্ঞেস করুন, বলবে জানি না।প্রসংগত জানা দরকার সোমনাথের ধ্বংসের উপর নির্মিত মসজিদটি ভারত সরকার নিজ অর্থায়নে পাশেই তৈরি করে দেয়। অথচ আমাদের দেশের বেহায়া মুসলিমরা এদেশে হাজার হাজার মন্দির ধ্বংস করছে, আর আমাদের পেজে সে সব কথা বললেই দল বেঁধে এসে ভারতের বাবরী মসজিদের উদাহরণ দেয়।এদেশের মুসলিমদের নির্লজ্জতার কোন সীমা পরিসীমা নাই।আগেই বলেছি তাদের আরেকটি চর্বিত চর্বণ হল গুজরাটের দাঙ্গা প্রসঙ্গ। আজ থেকে কেউ এই প্রসঙ্গ আনলে তাদের মুখের উপর এ লেখা ছুড়ে দিবেন।

গুজরাট দাঙ্গার কথার নিশ্চয় সকলের মনে আছে। তথাকথিত সেকুলারিস্টরা এই দাঙ্গার কথাটাই যেখানে সেখানে প্রচার করে থাকে। ঘটনার সূত
্রপাত যে গোধরা ট্রেন পোড়ানোর কাণ্ড থেকে সূত্রপাত সেটা তারা অনেকেই বলতে চান না বা স্বীকার করেন না।আমাদের সকলের মনে রাখতে হবে ।

দাঙ্গা লাগিয়েছিল মুসলমানরাই।

এ নিয়ে আমার লেখাটি পড়ুন।

http://bangalihindupost.blogspot.com/2012/06/blog-post_6575.html


হিন্দু বিরোধী মিডিয়া তিস্তা জাভেদ সিতলাবাদ এবং তেহেল্কার মিত্থাচার ছিল নরেন্দ্র মোদীই নাকি দাঙ্গা বাধিয়েছিলেন!!!!!!!!!

গুজরাটের দাঙ্গায় গুলবার্গ সোসাইটিতে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদনটি নিম্ন আদালতে পেশ করার নির্দেশ দিয়েছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। ১২ সেপ্টেম্বর সোমবার সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে বিশেষ তদন্ত দলকে (সিট) এ নির্দেশ দেওয়া হয়।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার অনলাইন প্রতিবেদনে বলা হয়, তিন বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত সুপ্রিম কোর্টের একটি বিশেষ বেঞ্চ বলেন, ‘২০০২ সালে গুজরাটে দাঙ্গার ঘটনায় করা মামলাগুলোতে আমাদের আর কোনো পর্যবেক্ষণ নেই।’ সিটের প্রতিবেদনে মোদিকে কোনো দোষারোপ করা হয়নি।

তখন মোদী টুইটার করলেন "GOD IS GREAT." মুসলিম তোষণকারী মিডিয়া বোধহয় মনক্ষুণ্ণ হলেন।

বাংলাদেশের প্রথম আলো রিপোর্ট করলোঃ "২০০২ সালে গুজরাটের গোধরায় ট্রেনে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় প্রায় ৬০ জন হিন্দু করসেবক নিহত হয়। এরপর রাজ্যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে এবং দুই হাজারের বেশি মুসলমান নিহত হয়। "

http://www.prothom-alo.com/detail/date/2011-09-12/news/185016

মিডিয়ার কী মিথ্যাচার। দাঙ্গাতে নাকি ২০০০ মুসলমান মারা গেছে। কোন হিন্দু মারা যায় নাই। যে ই মারা যাক না কেন আমরা এই অনাচারের প্রতি তীব্র ঘৃণা প্রদর্শন করি কিন্তু তাই বলে হলুদ সাংবাদিকতাকে মেনে নিতে পারি না।

১১ মে ২০০৫ এ কংগ্রেসের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতিবেদন আসে, দাঙ্গাতে ৭৯০ মুসলিম ও ২৯৪ হিন্দু মারা যায়।

সেসময়ের খবরের লিংক পড়ুন



ভারতীয় মুসলিমদের দৈনিক মিল্লাত গেজেট ও টা প্রকাশ করেন

http://www.milligazette.com/Archives/2005/01-15June05-Print-Edition/011506200511.htm

খবরটা বিবিসিতেও আসে

http://news.bbc.co.uk/2/hi/south_asia/4536199.stm

তাই যারা ২০০০ মুসলিমের মারা যাওয়ার খবর ছড়াচ্ছে তারা নির্লজ্জ মিথ্যুক। কেণো হিন্দু মারা জাওয়াড় খবর দেন না? আমরা সকল প্রকার অন্যায়ের বিরুদ্ধে। সেটা যেই করুক। কিন্তু মিথ্যাচার হবে? মিথ্যাচারের জবাব আসে ২০০৮ এ যখন ভারতীয় জনতা পার্টি আবার গুজরাটের ক্ষমতায় আসে।

সত্য মেভা জয়তে।

দুই.

দাঙ্গা নিয়ে মিথ্যাচার হল মুসলিমরাই নাকি শুধু দাঙ্গাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

একথা সত্য মুসলিমরা নির্মমভাবে নিহত হয়েছে নারুদা পটিয়া,গুলবার্গ সোসাইটি এবং সরদপুরে। কিন্তু তারাও নিরীহ ছিল না।মুসলমানরাই গধরাতে দাঙ্গা লাগিয়েছিল এবং মুসলমানরাও সমান ভয়ানক ছিল। মুসলমানরা হিন্দুদের নির্মমভাবে হত্যা করে হিমান্তানগর, দানিলিমদা ও সিন্ধী মার্কেট এলাকায়।

IndiaToday এর খবর পড়ুন।

http://archives.digitaltoday.in/indiatoday/20020415/states.html

৮,৯,১০,১৫ প্যারা পড়ুন।

The Hindu রিপোর্ট করে মুসলিমরাই আহমেদাবাদে দাঙ্গা শুরু করে ছিল।


http://www.hindu.com/thehindu/2002/03/02/stories/2002030203050100.htm

৯ম প্যারার শেষ লাইনটি পড়ুন।

৪০০০০ হিন্দুকে তাদের বারি ছেড়ে মুসলিমদের ভয়ে পালাতে হয়।

২৩ মার্চ ২০০২।

মুসলিমরা ২০০২ এর ২৩ মার্চ রেভদি বাজারে ৫০ টি হিন্দু দোকান পুড়িয়ে ১৫ কোটি টাকার সম্পদ নস্ট করে।

এখানে দেখুন

http://articles.timesofindia.indiatimes.com/2002-03-23/ahmedabad/27123464_1_fire-tenders-cloth-shops-arson


মুসলিমরা আহমেদাবাদের ১ ও ২ মার্চের দাঙ্গা লাগায়। এরা ১৫৭ টি স্থানে দাঙ্গা লাগায়। তারা পুলিশকে তাদের এলাকায় সন্ত্রাসী ধরতে ঢুকতে দেয় নাই।

১৫ প্যারা পড়ুন

http://www.indiatoday.com/itoday/20020415/states.shtml


বিভিন্ন রায়ে মুসলমানদের সাজা হওয়ার ঘটনা প্রমান করে এরাও দাঙ্গাতে জরিত ছিল যা বাংলাদেশের চোটটা মুসলমান মিডিয়া বলবে না।

৯ দাঙ্গাবাজ মুসলমানের সাজা

http://www.expressindia.com/news/fullstory.php?newsid=65065


৭ দাঙ্গাবাজ মুসলমানের সাজা

http://cities.expressindia.com/fullstory.php?newsid=174094


৪ দাঙ্গাবাজ মুসলমানের সাজা


http://www.indianexpress.com/news/postgodhra-riots-dna-test-nails-4-killers/4719/

তিন.
গুজরাট দাঙ্গা নিয়ে হিন্দু বিরোধী মিডিয়ার অপপ্রচার হল শুধু মুসলমানরাই দাঙ্গাতে গৃহহীন হয়েছিল।

২০০২ এর ৫ মার্চ হিন্দু বিরোধী টাইম্‌স অফ ইন্ডিয়া লিখেছিল মুসলিমদের জন্য ৮৫ টি এবং হিন্দুদের জন্য ১৩ টি ক্যাম্প খোলা হয়। আহমেদাবাদে ১০০০০ হিন্দু গৃহহীন হয়েছিল। এবং ২৫ এপ্রিলের ভিতর ১০০০০০ মুসলিম এবং ৪০০০০ হিন্দু গৃহহীন হয়।

The Indian Express অসহায় হিন্দুদের উপর দুটি রিপোর্ট করেছিল।২০০২ এর সাত মে এবং দশ মে তারিখে। মুসলমানরা দলিত হিন্দুদের উপর হামলা করেছিল। হিন্দুদের মন্দিরে আশ্রয় নিতে হয়েছিল। কারন গুজরাটে বিজেপি সরকার মুসলিমদের বাঁচাতে এতোই ব্যাস্ত ছিল যে তারা হিন্দুদের বাঁচাতে কিছুই করে নাই।

এটা পড়ুন

http://www.indianexpress.com/storyOld.php?storyId=2401


টাইম্‌স অফ ইন্ডিয়া ১৮ মার্চ ২০০২ তারিখে ”Riots hit all classes, people of all faith”। সেখানে হিন্দুদের উপর নির্যাতন নিয়ে তারা লিখে। -”Contrary to popular belief that only Muslims have been affected in the recent riots, more than 10,000 people belonging to the Hindu community have also become homeless”.

মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় হিন্দুদের উপর চলে অমানবিক নির্যাতন।

এটা পড়ুন

http://www.gujaratriots.com/22/myth-7-only-muslims-were-rendered-homeless-and-suffered-economically/

এটা পড়ুন মুসলিমরাই হিন্দুদের দোকান পুড়িয়ে ছিল

২০১৩ পূর্ববর্তী হিন্দু নির্যাতনের বিভিন্ন পত্রিকার নিউজ লিঙ্ক

আমাদের পেজে কোন হিন্দু মন্দির ধ্বংসের খবর প্রকাশ হলেই তথাকথিত ধর্মের অনুসারীরা এসে তা অস্বীকার করে অথবা এক বাবরী মসজিদের কাহিনী নিয়ে চিল্লাচিল্লি করে। এদের কাছে প্রশ্ন এক বাবরি মসজিদের বিনিময়ে আপনারা কত মন্দির ভেঙেছেন তার হিসাব আছে? বাবরি মসজিদ নিজেই তো গড়ে উঠে রামমন্দির ভেঙ্গে। মুঘলরা কৃষ্ণের জন্মভূমিতে মসজিদ বানাতে পারে আমরা মক্কাতে মন্দির বানাতে পারব না। মুসলমানরা প্রায়ই মিথ্যাচার করে তারা নাকি হিন্দু মন্দির ভাঙ্গে না। #১০ বছরে ৯ লাখ হিন্দু কমেছে http://www.prothom-alo.com/detail/date/2012-09-22/news/291536 #নির্যাতিতরা এখনো বিচারের অপেক্ষায় http://www.prothom-alo.com/print/news/149608 দেখুন ইসলামিক সন্ত্রাসীদের হাতে হিন্দু মন্দির ধ্বংসের কিছু চিত্রঃ ১। মন্দির ধ্বংসের পর সিলেটে গীতা পুরানো http://www.banglanews24.com/detailsnews.php?nssl=a551f123e505d4d5d75058aae10e993b&nttl=2011041236103 ২। ২০০৩ সালে ১ রাতে ৩ টি মন্দির ধ্বংসের কথা http://www.thedailystar.net/2003/06/03/d30603011011.htm ৩। মুসলিমদের হাতে শিব মন্দির ধ্বংস http://www.thedailystar.net/newDesign/news-details.php?nid=190042 ৪। ভারতীয় মুসলমানদের হাতে ৩ মন্দির ধ্বংস http://en.wikipedia.org/wiki/2010_Deganga_riots ৫। মুসলিমরা হনুমান মন্দির ভেঙ্গেছে http://southbengalherald.blogspot.com/2010/12/howrah-hanuman-temple-destroyed-hindu.html ৬। মন্দির ধ্বংস করে ঈদ উযযাপন ২০১১ http://www.kalerkantho.com/?view=details&type=gold&data=Tourist&pub_no=631&cat_id=1&menu_id=14&news_type_id=1&news_id=184573&archiev=yes&arch_date=04-09-2011 ৭। মন্দির ধ্বংস করে ঈদ উযযাপন ২০১০ http://www.bdnews24.com/details.php?id=173129&cid=2 ৮। মানিকগঞ্জে মন্দির ধ্বংস ১ http://theindependentbd.com/national/39842-miscreants-vandalise-idols-in-manikganj.html ৯। মানিকগঞ্জে মন্দির ধ্বংস ২ http://www.thedailystar.net/newDesign/latest_news.php?nid=29226 ১০। ১০০ বছরের পুরাতন হিন্দু মন্দির ধ্বংস করেছে মুসলিমরা http://forumforhinduawakening.org/dharma/news/2012/04/15/fanatic-islamic-groups-desecrated-200-years-old-hindu-temple-at-dinajpur-bangladesh/ ১১। ছবিসহ তথাকথিত শ্রেষ্ঠ ধর্মের বান্দাদের কাজ দেখুন http://hindusamhati.blogspot.com/2010/09/deganga-riot-pics-september-2010.html ১২। নরসিনদিতে মুসলিমদের হাতে হিন্দু মন্দির ধ্বংস http://hindurevolution.blogspot.com/2011/12/destruction-of-hindu-temples-in.html ১৩। হাটহাজারীতে ৮ টি মন্দির ধ্বংস http://en.wikipedia.org/wiki/2012_Hathazari_Violence ১৪। ৮৭ বছরের পুরাতন মন্দির ভাঙতে চায় পাকিস্তানি জেহাদিরা http://www.chakranews.com/87-year-old-hindu-temple-facing-demolition-in-pakistan/812 ১৫। মুসলিমদের হাতে ধ্বংস মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরের মন্দির http://www.thedailystar.net/2005/10/14/d51014012517.htm ১৬। নারায়ণগঞ্জে মন্দির ধ্বংস http://articles.economictimes.indiatimes.com/2010-02-06/news/28385518_1_idols-hindu-temple-vandalised ১৭। গুজরাটে ভারতীয় মুসলিমদের হাতে ধ্বংস হিন্দু মন্দির http://deshgujarat.com/2010/12/17/communal-clash-in-shahpur-the-situation-in-control/ ১৮। ভারতীয় মুসলিমদের তোষণ নীতির ফলঃ আরেকটি মন্দির ধ্বংস http://www.merinews.com/article/temple-idols-vandalised-in-hyderabad/147966.shtml ১৯।মসজিদের দেয়াল ভাঙতে ৫০ টাকা দেওয়া হয় মিস্ত্রি জসিমকে http://www.samakal.com.bd/details.php?news=14&action=main&view=archiev&y=2012&m=02&d=17&option=single&news_id=236150&pub_no=965 ২০।জামা খুলে ক্ষতচিহ্ন দেখালেন সাংসদ মোজাম্মেল তদন্ত কমিশনের সামনে কাঁদলেন ছবি রানী বাগেরহাট প্রতিনিধি | তারিখ: ১৭-০৪-২০১০ http://prothom-alo.com/detail/date/2013-02-04/news/56923 ২১।Rape and torture empties the villages(guardian) http://www.guardian.co.uk/uk/2003/jul/21/bangladesh ভোলার 'ভেণ্ডারবাড়ী' এক অভিশপ্ত রাতের ভয়াবহ সাক্ষী http://dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=15&dd=2011-06-13&ni=61667 পালাক্রমে ধর্ষণ শেষে নিথর দেহ ভাসিয়ে দেয় নদীতে http://dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=15&dd=2011-06-12&ni=61515 পূর্ণিমা ছবিরানী মহিমা_এভাবেই সেদিন বাড়ে সম্ভ্রমহারাদের সারি http://dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=15&dd=2011-06-14&ni=61721 কমলার ক্ষতচিহ্ন সেদিন চূর্ণ করে দেয় আলতাফ চৌধুরীর দম্ভ http://dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=15&dd=2011-06-15&ni=61848 ছাত্র শফিক, অধ্যক্ষ গোপাল মুহুরীকে প্রাণ দিতে হয় সন্ত্রাসীর বুলেটে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ (৬) http://dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=15&dd=2011-06-17&ni=62081 ইজ্জতের মূল্য ১৯ হাজার টাকা, ভাঙ্গা হয় সোহেল তাজের বাড়ি মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ-৭ http://dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=15&dd=2011-06-18&ni=62184 ভারতে চলে গেছে অনেকে সম্ভ্রমহারা মেয়েদের নিয়ে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ (৮) http://dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=15&dd=2011-06-19&ni=62248 নির্বাচনোত্তর নির্যাতিত ২০ হাজার মানুষ আশ্রয় নেয় রামশীলে মাhttp://dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=15&dd=2011-06-20&ni=62400নবতার বিরুদ্ধে অপরাধ (৯) অত্যাচারের প্রকৃতি ছিল ধর্ষণ দখল শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ (১০) http://dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=15&dd=2011-06-21&ni=62447 জেলাভিত্তিক তদন্ত, মামলা রিভিউ ও আপীল করার সুপারিশ কমিশনের মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ (শেষ) http://dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=15&dd=2011-06-22&ni=62574 ২২।সংখ্যালঘু নির্যাতন ও বিতাড়নের রাজনীতি সংখ্যালঘু নির্যাতন ও বিতাড়নের রাজনীতি বিজন সরকার http://www.dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=16&dd=2013-03-30&ni=130464 বিজন সরকার http://www.dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=16&dd=2013-03-31&ni=130595 1. Bangladeshi Muslims burn bhagavat gita after destroying temple http://www.banglanews24.com/detailsnews.php?nssl=a551f123e505d4d5d75058aae10e993b&nttl=2011041236103 2. 3 Hindu Temples of Bangladesh were vandalised in one night http://www.thedailystar.net/2003/06/03/d30603011011.htm 3. Muslims Criminals on Monday night vandalised an image of Hindu god Shiva at the two-hundred year-old Hasjratola Kali Temple at Tangrakhali village under Shingasholpur union in Sadar upazila http://www.thedailystar.net/newDesign/news-details.php?nid=190042 4. 3 temples destroyed by Indian Muslims en.wikipedia.org/wiki/2010_Deganga_riots 5. Indian Muslims destroyed Hanuman temple http://southbengalherald.blogspot.com/2010/12/howrah-hanuman-temple-destroyed-hindu.html 6. Muslims celebrate Eid by destoying hindu temple 2011 http://www.kalerkantho.com/?view=details&type=gold&data=Tourist&pub_no=631&cat_id=1&menu_id=14&news_type_id=1&news_id=184573&archiev=yes&arch_date=04-09-2011 2010 http://www.bdnews24.com/details.php?id=173129&cid=2 7. Brutal Hindu Persecution and destruction of Temples in Manikganj,BANGLADESH MARCH 18,2011: http://theindependentbd.com/national/39842-miscreants-vandalise-idols-in-manikganj.html APRIL 7,2011: http://www.thedailystar.net/newDesign/latest_news.php?nid=29226 8. Muslims attack Janmashtami procession 2009 http://deshgujarat.com/2009/08/15/muslims-attack-jamnashtami-procession-in-ahmedabad/ 2011 http://www.sanghparivar.org/muslim-youth-attacked-peaceful-janmashtami-rally-in-jabalpur রানার দখলবাজির শিকার রবীন্দ্রনাথ সরকার * তাঁর জায়গায়ই গড়ে তোলা হয় রানা প্লাজা http://kalerkantho.com/index.php?view=details&type=gold&data=news&pub_no=1226&cat_id=1&menu_id=13&news_type_id=1&index=9#.UXzm6rVTCDZ

কোথা থেকে এলো আজকের কোরান?

লিখেছেন: কাজী রহমান বিভাগ: অবিশ্বাসের জবানবন্দী, ধর্ম, নারীবাদ, ব্লগাড্ডা, মানবাধিকার, মুক্তমনা তারিখ: ৬ মাঘ ১৪১৮ (জানুয়ারি ১৯, ২০১২) কোরান কে লিখেছে? কখন, কোথায়, কিভাবে, কেন? সর্বশ্রেষ্ঠ শান্তির ধর্ম মহান ইসলাম থাকতেও পৃথিবীতে এতসব অন্য ধর্ম কেন? ওরা আল্লা মানছে না কেন? বাংলাদেশের মুসলমানদের মনে কখনো কখনো এই ধরনের প্রশ্ন জাগলেও এ নিয়ে কেউ খুব একটা ঘাঁটাঘাঁটি করে না কেউ, ভাবে খামোখা কি দরকার? অসুবিধা তো হচ্ছে না তেমন। বাংলাদেশের মুসলমান তো এত গোঁড়া মুসলিম না, যার ইচ্ছা হিজাব লাগায়, যার ইচ্ছা টুপি পরে, সুটবুট পরে, কোন অসুবিধা নেই। একজন সাধারণ মুসলমান, কারো সাতে পাঁচে নেই, চাকরি কিংবা ব্যাবসা করে, খায় দায়, গান গায়, জুম্মার দিনে জামাতে নামাজ পড়ে, সেজেগুজে বৈশাখী মেলায় যায়, রোজার মাসে রোজা রাখে, ঈদ চাঁদে নতুন জামাকাপড় কেনে, কেমন আছেন কেউ জানতে চাইলে আজকাল বলে আলহামদুলিল্লাহ। ঝামেলা নেই, চিন্তা নেই, ভালো আছে, বেশী কিছু জানার দরকারও নেই। ইসলামকে প্রশ্ন করা যায়না, ঈমান নষ্ট হয়ে যায়। তবে ঈমান, বিশ্বাস বা আল্লা রসূলকে সত্য মেনে প্রশ্ন করা যায়। সংশয় মনের ভেতরে রেখে ইসলাম নিয়ে প্রশ্ন? অসম্ভব। ঈমান যাবে, ঈমান নষ্ট হওয়া মানেই তো সব শেষ। তাই বাংলাদেশের মুসলমানদের জীবনে ধর্মচার জরুরী কিন্তু ধর্মজ্ঞান অপ্রয়োজনীয়, অজ্ঞতাই আদরণীয়। আর বেশী কিছু পড়বার আগে নীচে অল্প কিছু চাঁছাছেলা প্রাথমিক তথ্যঃ (ক) হযরত মোহাম্মদের মৃত্যু (৬৩২ খ্রিঃ) এর প্রায় ১৯ বছর পর আজকের কোরান লেখা হয়েছিলো বলে ধরা হয়। (খ) হযরত মোহাম্মদের মৃত্যুর প্রায় ২০০ বছর পর ইমাম বুখারীর হাদিস বই লেখা হয়েছিলো বলে ধরা হয়। (গ) প্রথম খলিফা হজরত আবু বকর, দায়িত্বকাল ৬৩২ খ্রিস্টাব্দ থেকে ৬৩৪ খ্রিস্টাব্দ। (ঘ) দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর, দায়িত্বকাল ৬৩৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে ৬৪৪ খ্রিস্টাব্দ। (ঙ) তৃতীয় খলিফা হজরত ওসমান, দায়িত্বকাল ৬৪৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে ৬৫৬ খ্রিস্টাব্দ। (চ) চতুর্থ খলিফা হজরত আলী, দায়িত্বকাল ৬৫৬ খ্রিস্টাব্দ থেকে ৬৬১ খ্রিস্টাব্দ। ধরা যাক তথ্য প্রযুক্তি বিজ্ঞানের সুবিধাজনক এই সময়ে বাংলাদেশের মুসলমান ধর্মাচারের ব্যাপার পেরিয়ে ধর্ম নিয়ে আরো একটু জানতে চাইলো। কিন্তু সমস্যা, তারা তো ঈমান, বিশ্বাস বা আল্লা রসূলকে ধ্রুব সত্য মেনে প্রশ্ন করবে, উত্তরও জানতে চাইবে সেভাবেই। জানাটা সব সময়ই ওই প্রভাবে প্রভাবিত থাকবে, ব্যাপারটা কেমন হবে? এখন আল্লা রসূলকে সত্য মেনে প্রশ্ন করা, উত্তর যা’ই হোক না কেন, তাতে ইসলাম, আল্লা এবং রসূল অবধারিত ভাবে জিতবেন। কারন সেটাই পূর্বশর্ত। অনেকটা ‘বিচার আচার সবই মানি কিন্তু তালগাছটা আমার’ এরকম ব্যাপার। এখন এই রকম পূর্বশর্ত মেনে কোন বিতর্ক কি সম্ভব? গোঁড়ায় গলদ মার্কা শর্ত নিয়ে কারা মুখে ফেনা তুলবেন? তারা কি স্বাভাবিক নাকি ঘোর লাগা দাঁড়িয়ে ঘুমানো অস্বাভাবিক মনের মানুষ? এই সব জিজ্ঞাসায় মনেমনেও তাদের পূর্বশর্ত ঠিক থাকতে হবে। সবজান্তা আল্লা সবার মনের ভিতরের খবরও জানেন। বেঈমানি চলবে না। পূর্বশর্তে, মানে ইসলাম আল্লা রসূল অপরাজেয় এইটা মানার ব্যাপারে সাচ্চা পাক্কা থাকতে হবে, না হলে মানুষটা তো মুসলমানই না। এত কিছুর পরও ধরে নেওয়া যাক কেউ সত্যি সত্যিই গণ্ডী পেরিয়ে একটু বেশী জানতে চাইল ইসলাম নিয়ে। জানতে তার দ্বিধা লাগলেও সে ভাবল, এতে হয়ত তেমন দোষের কিছু নেই। জন্মসূত্রে মুসলমান হওয়াতে তাদের বেশীরভাগই তা জানতে পেরেছে একটু বড় হয়ে যে তারা মুসলমান। এটা তাদের উপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। আপনজনেরা, যেমন মা বাবা, পরিবারের বড়রা তাদেরকে বলেছে যে তারা মুসলমান। তাই তারা তাই। তাকে তো জামা জুতোর পছন্দের মত কোনটা নেবে, হিন্দু, মুসলমান নাকি খৃষ্টান ইত্যাদি ধর্ম কোনটা নেবে, সে সুযোগ দেয়া হয়নি। কাজেই হয়ত একটু সাহস করা যায়। যাই হোক, একটা ব্যাপার বলা দরকার, এই ব্লগে বহুবার ধর্ম নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং হতেও থাকবে। তা’হলে আবার এই লেখাটি কেন? এই লেখাটা তাদের জন্য, যাদের মাথায় ওইসব কি, কে, কখন, কেন, কিভাবে ইত্যাদি কিছু প্রশ্ন মাঝে মাঝে খেলা করে মোটাদাগে উত্তর খুঁজবার জন্য। সঙ্গোপনে খুঁজে বেড়ায় যারা সহজ সংক্ষিপ্ত কিছু তথ্যসূত্র, তাদের জন্য ওই ধরনের কিছু সূত্র দেবার চেষ্টা আছে এখানে। কোরান লিখেছে বা সঙ্কলিত করেছে কিছু মানুষ। ফেরেস্তা টাইপের কেউ কোন পাথর টাথরে অগ্নিরশ্মি ধরনের কিছু দিয়ে এটা লেখেনি। আকাশ থেকেও পুরো বইটা হঠাৎ কোন ঠাশ্ শব্দ করে পড়েনি। অতি সাধারণ ভাবে বলা হয় যে এটা ২৩ বছর ধরে হজরত মোহাম্মদের উপর কখনো এক বা একাধিক আয়াতে, মূলতঃ জিব্রাইল ফেরেস্তার মাধ্যমে, আল্লার বানী হিসেবে নাযিল হয়েছে। কি ভাবে? হজরত মোহাম্মদের স্বপ্নে, ঘোরের মধ্যে, তন্দ্রাপ্লুত অবস্থায়, জিব্রাইল ফেরেস্তার ফুঁয়ে, বন্ধুবেশী ফেরেস্তার মাধ্যমে, সরাসরি ফেরেস্তার মাধ্যমে ইত্যাদি। নীচে দেখুন একটা মোখতাসার; কোরান নিয়ে একনজরে সংক্ষিপ্ত কিছু প্রাথমিক তথ্যঃ ১। কোরান কে লিখেছে? মানুষ। হজরত মোহাম্মদের জীবদ্দশায় তার কাছের সঙ্গী সাথীরা চামড়ায়, খেজুর পাতায়, পশুর হাড়ে ইত্যাদিতে আয়াত লিখে রাখতো। হজরত মোহাম্মদ কখনো এক আয়াত, কখনো একাধিক আয়াত বলতো আর মানুষ সাথী, মানে সাহাবায়েক্বেরামরা কেউ কেউ তা লিখে রাখতো নিজেদের কাছে। অনেকে মিলে তা মুখস্থও করত, কেউ কেউ শুধু মুখস্থই রাখতো। কয়েকটি আয়াতের যোগফল হল এক একটি সূরা, আর; এখনকার কোরান সেই রকম ১১৪টা সূরার যোগফলের গ্রন্থ। ২। কোরানের সঙ্কলন কখন শুরু হয়েছে? হজরত মোহাম্মদের মৃত্যু (৬৩২ খ্রিস্টাব্দ) এর ঠিক পরপরই সঙ্কলন নিয়ে হৈ চৈ এর শুরু। হজরত মোহাম্মদের জীবদ্দশাতেও একটি কোরান সঙ্কলিত হয়েছিল যা মুখ দেখিয়েছে খুব কম সময়ই। হজরত মোহাম্মদের মৃত্যুর পর নব্য ইসলামী শক্তির নেতৃত্বের দায়িত্বপ্রাপ্ত হয় প্রথম খলিফা হজরত আবু বকর। খলিফা আবু বকরের (দায়িত্বকাল ৬৩২ খ্রিস্টাব্দ থেকে ৬৩৪ খ্রিস্টাব্দ, বলা হয় বিষক্রিয়ায় তার মৃত্যু হয়) নির্দেশে, সাহাবায়েক্বেরাম যায়েদ বিন সাবেতকে নেতা করে দায়িত্ব দেওয়া হয় কোরান সঙ্কলিত করার। সে যথাসাধ্য চেষ্টা করে একটি সঙ্কলন তৈরী করে এবং তা খলিফা আবু বকরকে দেয়। অন্যান্য কিছু সাহাবা, যেমন ইবনে মাসউদ, আলী বিন আবী তালেব, মুআবিয়া বিন আবী সুফিয়ান ও উবাই বিন কা’ব প্রমুখ রাও নিজ দায়িত্বে কিছু সঙ্কলন করে। ৩। কোরানের এই সঙ্কলনটিই কি আজকের কোরান শরীফ? না, এটি সেটি নয়। নীচে দেখুন। ৪। কোরানের সঙ্কলন কেন শুরু হয়েছিলো? কিছু হাফেজ ক্বারী সাহাবা যারা কোরানের অনেকখানি মুখস্থ রেখেছিলো, তাদের অনেকেই ইয়ামামা নামের একটি যুদ্ধে নিহত হয়। মুখস্থকারীদের সাথে সাথে কোরানও যাতে হারিয়ে না যায় সেই প্রচেষ্টার অংশই ছিলো এই প্রাথমিক সঙ্কলনের মূল কারন। ৫। যায়েদ সঙ্কলিত কোরানই কি আজকের কোরান? এরপর কি হোল? না, এটিও নয়। প্রথম খলিফা হজরত আবু বকরের মৃত্যুর পর আরব বিশ্বে ইসলামী শক্তির দায়িত্বপ্রাপ্ত হয় দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর (দায়িত্বকাল ৬৩৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে ৬৪৪ খ্রিস্টাব্দ, আততায়ীর হাতে নিহত হয় বলে বলা হয়)। যায়েদের করা সঙ্কলনটি এবার হজরত ওমর নিজের হেফাযতে রেখে দেয়। খলিফা ওমরের মৃত্যুর পর ওই সঙ্কলনটি অল্প কিছুদিনের জন্য তার মেয়ে হাফজা’র হেফাজতে থাকে। ৬। কোরান তা’হলে আজকের মত হল কি করে? এইবার এলো তৃতীয় খলিফা হজরত ওসমান (দায়িত্বকাল ৬৪৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে ৬৫৬ খ্রিস্টাব্দ, দলীয় কোন্দলে নিহত বলে কথিত)। তৃতীয় এই খলিফা ক্ষমতায় বসেই কোরানের একাধিক সঙ্কলনের দ্বন্দ্বের ঝামেলার মুখোমুখি হয়ে যায়। তখন দেখা যায় যায়েদের কোরান সঙ্কলন, অন্যান্য সাহাবাদের কোরানের সঙ্কলন এবং অন্যান্য নানান সাহাবাদের দাবীকৃত মুখস্থ কোরানের আয়াত একে অন্যের সাথে মিলছে না। তিনি এসময় যায়েদের প্রথম সঙ্কলনটাকে স্ট্যান্ডার্ড ধরে নতুন একটা সঙ্কলন করিয়ে নেন। কথিত আছে লোক দেখানো ভাবে তিনি কিছু কিছু নামকরা সাহাবাক্বেরাম ও ইসলামী পণ্ডিতদের সাথে এ নিয়ে পরামর্শ করে নতুন কোরানের কপি বিভিন্ন প্রদেশে পাঠিয়ে দেন। অন্যসব সঙ্কলন পুড়িয়ে ফেলবার হুকুম দিলেন এই খলিফা। তৈরী হল আজকের কোরানের কথিত মূল সঙ্কলন, আনুমানিক ৬৫১ খৃষ্টাব্দে। মতভেদে অবশ্য বলা হয় আজকের কোরান আরো পূর্নাঙ্গ হয় প্রায় ৮০০ খৃষ্টাব্দের দিকে। আরো কজন মুসলিম শাসকের হাত ঘুরে, শত শত বছর ধরে আরো পরিবর্তিত হয়ে, হাতকপি, কাঠের ব্লককপি, ছাপাখানা প্রযুক্তি কপি এবং তারপর অনুবাদকবৃন্দের অনুবাদ কপিতে রূপান্তরিত হয়ে হল আজকের এই কোরান। ৭। হজরত আলীর কোরান তা’হলে কোনটা? ইসলামী সাম্রাজ্যের চতুর্থ খলিফা হজরত আলী (দায়িত্বকাল ৬৫৬ খ্রিস্টাব্দ থেকে ৬৬১ খ্রিস্টাব্দ, চরমপন্থীদের দ্বারা নিহত বলে কথিত)। হজরত আলীর আমলেও হজরত ওসমানের সর্বশেষ ও সর্বাধুনিক কোরান সর্বজন স্বীকৃত হয়নি। আজকের ইরাক অঞ্চলের ওই সব মুসলমানেরা ওসমানের এই সঙ্কলনটি প্রত্যাখ্যান করতে থাকে। বলতে থাকে যে সেটির সাথে উব্বে ইবন মাসুদের মত সম্মানিত সাহাবাক্বেরামও একমত নন। খলিফা হয়ে হজরত আলীও ওসমানের সঙ্কলিত কোরানে অসংগতি ও ক্রমবিপত্তির কথা দৃঢ় ভাবে বলেন। এটি বদলে নতুন একটি সঙ্কলনের চেষ্টাও করেন, কিন্তু সেটি সর্বজন স্বীকৃত হয় না। মোটামুটি ভাবে ওসমান সঙ্কলনটিই তখন থেকে টিকে যায়। যেঁচে পড়ে এসব তথ্য এমনি এমনি দেওয়া হয়নি। একটু ভাবনার জন্য দেওয়া হয়েছে। মানুষের দ্বারা কোরানে আয়াত ইচ্ছামত বাদ দিয়ে দেওয়া, ইচ্ছামত সঙ্কলন করা, স্ববিরোধী বা পরস্পর বিরোধী আয়াত, আয়াত রহিত করা, আগের মক্কি সূরা কোরানে রেখেও ওই সব এক একটি সূরার বদলে নতুন বিদ্বেষপূর্ণ হিংস্র অন্য সূরা প্রতিস্থাপন, নির্ভুল কোরানে একের পর এক ভুল, একই ব্যাপারের বিবরণ এক এক যায়গায় এক এক রকম, মেয়েদেরকে ছোট করা, পুরুষদের বড় করা এবং বেহেশতে চির কুমারী হুর উপহার দেওয়া, অথচ মেয়েদের জন্য এই পৃথিবীতে কড়া নিষেধের বেড়াজাল আর বেহেশতে গেলে আলতু ফালতু আঙ্গুর বেদানা পুরষ্কার, ছেলেদের জন্য মদ ও যৌনতৃপ্তির জন্য চির যৌবনা মেয়ে আর সমকামী পুরুষের জন্য কিশোরবালক, কিন্তু সম্পদে সাক্ষীতে তুচ্ছ মেয়েরা, ছেলেরা শক্তিমান মহান, ইত্যাদি আরো অনেক অনেক বৈষম্য। মানুষ মানে হজরত মোহাম্মদের বয়ানে আর খলিফার তাড়াহুড়ায় তৈরী কোরানের এতসব; যদি বাঙ্গালি কোন মোল্লা ছাড়াই; বাংলায় পড়ে বুঝে ফেলে, তা’হলে যে গুমোর ফাঁস হয়ে যাবে। কোরান নিজেই ইসলামের জন্য হূমকি হয়ে যাবে। ইসলাম নিয়ে নিজ ভাষায় কিছুটা বেশী জানলে বাংলাদেশের মুসলমান ভালো রকমের সংশয়ের গ্যাঞ্জামে পড়ে যাবে, হয়ত ভাববে তাদের ঈমান ঝুঁকির মধ্যে পড়ে গেলো। ভাববে জানার কি-ই-ই দরকার খামোখা, তার চেয়ে অজ্ঞ থাকাই ভালো, আচার অনুষ্ঠান করে করেই পুল সিরাত পার হয়ে যাওয়া যাক। নাকি কেউ কেউ আবার অতি গোঁড়ামি ছেড়ে, আরো কিছু পড়ে জেনে কিছুটা বাঙালী হয়ে যাবে? নাকি হয়ে যাবে মুক্তমনের মানুষ? ব্যাপারটা কি অত সহজ হবে? কে জানে, হয়তো বা, কোন এক দিন। -x-x-x-x-x-x-x-x-x-x-x-x-x-x- আরো লেখা লিঙ্কঃ সূরা মোখতাসার ১, সূরা মোখতাসার ৩, সূরা মোখতাসার ৪, সূরা আল মূত্ত্যাজিয়া, হিজাবী মেয়ে বেহেস্তি সুখ -x-x-x-x-x-x-x-x-x-x-x-

বেদে হযরত মোহাম্মদের সম্পর্কে কোন ভবিষৎবাণী নেই


বেদে হযরত মোহাম্মদের সম্পর্কে কোন ভবিষৎবাণী নেই বেদ হিন্দুদের সর্ব্বোচ্চ ধর্মগ্রন্থ এবং অলঙ্ঘনীয়।কোন কিছু বেদে থাকলেই যে কোন হিন্দু তা মেনে নেবে আর এই সুযোগটাই কিছু দিন ধরে নিচ্ছে কতিপয় ইসলামিক মিথ্যাবাজ যারা প্রচার করছে বেদে মুহম্মদ এর কথা উল্লেখিত আছে এবং তাকে ঋষি ও স্বর্গীয় বার্তাবাহক বলা হয়েছে।তাদের এহেন দাবী পর্যালোচনা করে দেখা যাক- অথর্ববেদ ২০/১২১/১-৩//(১)তিনি নরসংশ যার অর্থ প্রশংসিত,তিনি কৈরামা অর্থাত্‍ শান্তির রাজপুত্র,যিনি ৬০০৯৯ জন শত্রুর মধ্যেও নিরাপদ ছিলেন-যেহেতু মুহম্মদ শব্দের অর্থও প্রশংসিত আর তখনকার সময়ে মক্কার অধিবাসী সংখ্যাও ছিল প্রায় ৬০০০০ সেহেতু এটা মুহম্মদ কেই ইঙ্গিত করা হয়েছে// ANALYSIS-নরসংশ শব্দের অর্থ কোনভাবেই 'প্রশংসিত' নয় বরং প্রশংসাকারী,তাই এটার অর্থ মুহম্মদ এর সমার্থক নয়।আর যদি হতও তারপরও নামের অর্থ মিল দিয়েএরুপ বলাটা হাস্যকর।যেমন ধরুন 'বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম' যার অর্থ সংস্কৃত তে 'দয়ানন্দ কি জয়'।তার মানে কি এই যে কোরানস্বামী দয়ানন্দ স্বরস্বতী এর জয় ঘোষনা করছে?কৈরামা শব্দের অর্থ আসলে হচ্ছে যিনি শান্তির সাথে পৃথিবী তে বসবাস করে।সারাজীবন অসংখ্য রক্তহ্ময়ী যুদ্ধে লিপ্ত থাকা মুহম্মদ তাই ছিলেন কি?পরন্তু মক্কার অধিবাসী কত ছিল তা কোন জায়গায় ই লিপিবদ্ধ নেই।এটা সম্পুর্নমনগড়া কল্পনা। //(২)তিনি উট আরোহনকারী ঋষি যার রথ স্বর্গ স্পর্শ করে-যেহেতু উটের কথা বলা হয়েছে সেহেতু এটা মরুভুমির কথা।এছাড়া মনুসংহিতা(11/ 202)মতে একজন ব্রাক্ষ্মন এরউটে চরা নিষিদ্ধ সেহেতু এটাকোন ভারতীয় এর কথা বলা হয়নি// ANALYSIS-Manusa mhita(11/202) এ বলা হয়েছে ব্রাক্ষ্মন এর নিষিদ্ধ কিন্তু বেদের এই সুক্তটি একজন রাজর্ষি বা ক্ষত্রিয় ঋষির জন্য।অপরদিকে মরুভুমিশুধু আরবে নেই ভারতেও আছে(রাজস্থান)। // (৩)তিনি একজন 'MAMAH' ঋষি যাকে দেয়া হয়েছে ১০০ টি স্বর্নমুদ্রা,১০ টি হার,৩০০টা অশ্ব,১০০০০ গাভী-এখানে MAMAH অর্থ উচ্চ শ্রদ্ধাযুক্ত,১০ ০ টি স্বর্নমুদ্রা দিয়ে মুহম্মদএর ১০০ জন অনুসারী এবং ১০ টি হার দিয়ে ১০ জন সাহাবীকেবোঝানো হয়েছে।এছাড়া গো অর্থ গরু ছাড়াও GAW or Go to war এবং এর মাধ্যমে যুদ্ধে যাওয়া ১০০০০ সাহাবী কে বোঝানো হয়েছে।তাছাড়া গরু খুবই দয়াশীল ও শান্ত প্রানী,ঠিক যেমন ছিলেন মুহম্মদ এর ওই সৈন্যরা// ANALYSIS-এখানে শব্দটি MAMAH নয় বরং MAMAHE(MAMA-আমি ,AHE-দেই),কোনভা বেই যার অর্থ উচ্চ শ্রদ্ধাশীল নয়।এছাড়া কোনখানেই পাওয়া যায়না যে গো অর্থ GO TO WAR হতে পারে।গোপথ ব্রাক্ষ্মন এ গো অর্থ দেয়া হয়েছে-গরু,পৃথিব ী।কিন্তু যখনই কোন উপহার অথবা দানের কথা(যেটা এখানে বলা হচ্ছে) বলা হয় তখন গরু অর্থটা প্রযোজ্য।আর গরু অর্থ দয়াশীল এবং শান্তই হয়ে থাকেতবে মুসলমানরা গরু মারে কেন?এখন আবার ১০টি হার ১০জনসাহাবী হয়ে গেছে।হাহাহা।মুস া এরও তো ১০ জন অনুসারী ছিল।তাহলে এখন ইহুদিরা যদি দাবী করে এটা MOSES এর কথা বলেছে? তাহলে মন্ত্র ৩টির প্রকৃত অর্থ দাড়ায়- 1/He who praises,dwells peacefully is kept away from 60090 types of ANTAAHINDRIYA enemy 2/ He(the rishi of this suktam)has 20 camel riding chariot(রথ,কিন্তু মুহম্মদ কখনও রথে চড়েননি) whose chariot are reachable to heaven. 3/He who is such virtuous,I give him wealth as like as 100 gold coins,10 chaplets,300 horses,10000 cow.অর্থাত্‍ এখানে কোথাও মুহম্মদ সম্পর্কিত কিছু নেই। //ঋগবেদ ১/৫৩/ ৯ এ ঋষিকে বলা হয়েছে SUSHRAMA যার অর্থ প্রশংসিত,মুহম্মদ শব্দের অর্থও একই// আবার ও শব্দের বিকৃতি।এখানে শব্দটি হচ্ছেSUSHRAVASA যার অর্থ GOOD LISTENER/ RELIABLE FRIEND //অথর্ববেদ ২০/২১/৬এখানে একটি শব্দ আছে Karo যার অর্থ Praying one আরবীতে যার অর্থ আহমদ,মুহম্মদ এর অপর নাম// প্রথমত KARO শব্দের অর্থ Ofwhom,praying one নয়।উপরন্তু এখানে KARO বলতে কোন শব্দই নেই।এখানে শব্দটি হচ্ছে KARAVE যার অর্থ Action oriented।সাধারন হিন্দুদের অজ্ঝানতার সুযোগনিয়ে এসব অপপ্রচার চালাচ্ছে তারা।তাই আমাদের সকলের ই বেদ শিক্ষা অত্যন্তজরুরি

বাংলাদেশের পাঠ্যপুস্তকঃ ইতিহাসের সংগে প্রতারণা

বাংলাদেশি হিন্দুর ইতিহাস শিক্ষার ‘পরিবেশপরিচিতি সমাজ’ বা অন্যান্য বোর্ড বইয়ে হিন্দুদের যেভাবে উপস্থাপনা করা হয় তাতে যেকোন হিন্দু শিশু পূর্ব পুরুষের লজ্জায় লজ্জিত হয়ে জীবনের প্রথমেই বিশাল ধাক্কা খায়। আর পশ্চিম বঙ্গের বাম সরকার তো ভোট ব্যাঙ্করক্ষায় সারকুলার ই দিয়ে দিয়েছে,’Muslim rule should not attract any criticism. Destruction of temples by muslim invaders and rulers should not be mentioned’.Circular no.syl/89/1;Dated 28.04.1989).Ministry of education,west Bengal. অগত্যা ভরসা উইকিপিডিয়া,encyclopedia তথাইন্টারনেট এবং নিরপেক্ষ বই। কিন্তু এ ব্যস্ত যুগে অতো মনোযোগী পাঠক হওয়া কঠিন। তাই কজন বাঙ্গালি হিন্দু আজ জানে যে ইংরেজ দের আগে প্রায় পুরো ভারত বর্ষ ছিল হিন্দু মারাঠাদের অধীনে। আমার এ লেখায় আমি চেষ্টা করব সব তথ্যের লিংক দিতে।লেখাটা দুই ভাগে বিভক্ত । একভাগে খুব সংক্ষেপে ইতিহাস বর্ণনা আর আরেক ভাগে হিন্দু জাতিগুলর সামরিক পরিচয় দান। হিন্দুর সামরিক ইতিহাস বলা শুরু করতে চাই তখন থেকে যখন থেকে তা বাইরের সভ্যতার সাথে দীর্ঘ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে।তাই শক,হুন,গ্রীকদের সাথে সংঘর্ষ এ ক্ষেত্রে বাদ(শক,হুনরা আস্তে আস্তে ভারতে মিশে গিয়েছে) ।৬৩৪ সালে ইরান বিজয় এর পর ৬৩৮ সাল থেকে হযরত উমার এর নির্দেশে আরবরা বেশ কয়েক বার সিন্ধু আক্রমন করে পরাজিত হয়। অবশেষে প্রায় আশি বছর পর ৭১৫ সালে তারা সফল হয়,কাশিমের সিন্ধু বিজয়ের মাধ্যমে মুস্লিম দের সাথে দীর্ঘ সংঘর্ষ শুরু হয় হিন্দুদের।সিন্ধুর পর একে একে আরবরা আক্রমন করে পাঞ্জাব,রাজপুতানা,গুজ্রাট।এবং যথারীতি আরবরাই পরাজিত হয়।এরা উপমহাদেশে সামরিক ভাবে মোটামুটি ব্যর্থ।তারপর প্রায় আরাইশ’ বছর কেটে গেলো।মুসলিমদের প্রতিনিধি হয়ে আসে তুর্কীরা।৯৮০ সাল থেকে আসা শুরু করে তারা।এদের হাতে হিন্দুরা হারায় আফগানিস্তান,পাঞ্জাব। এসব যুদ্ধে পরাজয়ের চেয়ে বড় যে ঘটনা ঘটে তা হল হিন্দুদের অদ্ভুত কিছু সামরিক নিয়ম মধ্যপ্রাচ্যের মানুষরা লক্ষ্য করে।যেমন সূর্যাস্তের পর যুদ্ধ না করা,যুদ্ধে জয় এর চেয়েও fair policy এর উপর বেশি জোর দেয়া আজকাল চিন্তারও বাইরে।এ দুইটি বিষয়কে ব্যবহার করে পরপর দুটো বড় জয় পায় তুর্কীরা। ৯৮০ সালে রাতের বেলাই অতর্কিতে ঘুমন্ত আফগান হিন্দুদের হত্যা করে তুরকিরা। হিন্দুরা হারায় আফগানিস্তান ও পাঞ্জাব।এরপর আরও কিছু জায়গা আক্রমন করে তুর্কিরা পরাজিত হয়।আবার দুইশ’ বছরের বিরতি।১১৮৭ সালের দিকে এক সাবেক হিন্দু মুহাম্মাদ গৌরি(বাংলাদেশে লেখে ঘুরি) গুজ্রাট আক্রমন এর মাধ্যমে সক্রিয় হয়ে উঠে। এই লোক যোদ্ধা হিসেবে ছিল তৃতীয় শ্রেণীর। গুজরাটে পরাজিত হয়ে ইনি আবার পরাজিত হন বিখ্যাত রাজপুত বীর পৃথ্বীরাজ চৌহানের হাতে। কিন্তু এ সময় পৃথ্বীরাজ একটি ভয়াবহ ভুল করা বসেন। আর তা হল পরাজিত গৌরিকেপ্রানভিক্ষা দেয়া ও নিজ রাজ্যে ফিরিয়ে দেয়া।এর উপযুক্ত মূল্য তিনি পান যখন গৌরি আবার পরের বছর দুশ’ বছর আগের তুর্কিদের মত রাতের বেলাই আক্রমন করেন।কিন্তু রাজপুতরা যোদ্ধা হিসেবে ছিলো মারাত্মক ।তাই সে অবস্থায় যুদ্ধ করেই তারা চলে যায় জয়ের কাছে।তখন দ্বিতীয় ভুলটী করেন পৃথ্বীরাজ।এ সময় গৌরি তাকে প্রস্তাব দেন তার সেরা যোদ্ধা কুতুব আইবাক এর সাথে দ্বন্দ্বযুদ্ধের।পৃথ্বী রাজী হন।এবারও পৃথ্বীই জয় এর পথে।কিন্তু তখন কৌশলেকুতুব নিয়ম ভঙ্গ করে অন্য সৈন্যদের দ্বারা পৃথ্বীরাজকে গ্রেফতার করেন।তাকে অন্ধ করে দেয়া হয়।জীবনের শেষ পর্যায়ে গিয়ে প্রতিশোধ নেন এই যোদ্ধা।অন্ধ পৃথ্বী চালাকি করে তীর চালিয়ে হত্যা করেন গৌরিকে। চির প্রতারিত এই যোদ্ধা আজো তাই ভারতের মহান বীরদের অন্যতম।যাই হোক এর পরে সময় গেছে খুব দ্রুত।এই প্রায় চারশ’ বছর উত্তর ভারতে হিন্দুরা আর খুব বেশি মাথা তুলে দাড়াতে পারে নি। গজনীর সুলতানের আল্ক্রামন,হিন্দুদের উপর গনহত্যা,সোমনাথ মন্দির ধ্বংস এসবের বিরুদ্ধে কিছুই করতে পারেনি তারা। বাংলার জনগন দেখে লক্ষ্মণ সন এর কুৎসিত পলায়ন। কিন্তু এ সময় ভারতের অন্যান্য জায়গায় ছিল ভিন্ন পরিস্থিতি।প্রতিবেশি উড়িয়া রাজা নর সিংহ ছিন্নভিন্ন করে দেন মুসলিমআক্রমন।আর দক্ষিন ভারতে ছিলো বিজয় নগর সাম্রাজ্য।এদের বিশিষ্টতা হল প্রথম তারাই যুদ্ধ ক্ষেত্রে ছুঁড়ে ফেলেন সমস্ত sentiment। শত্রুপক্ষের রসদ দেয়া বেসামরিক লোকদের আক্রমন থেকে শুরু করে সামরিক কৌশলে এরা ছিল তুর্কিদের(অটোমানদের) বা European crusader দের সমকক্ষ।এর ফলে তারা প্রায় আড়াইশ’ বছর স্বাধীন থাকে।তবে ১৫৬৫ সালে পরাজিত হওয়ার পর তারা প্রত্যক্ষ করে ভয়াবহ নিষ্ঠুরতা। এ দিকে ১৫২৬ সালে ভারতে আসে মুঘালরা।তাদের শুরুর দিককার যুদ্ধ গুলো ছিলো মুসলিমদের সাথেই। তারা প্রথম যে হিন্দুর সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হন তিনি হিমু,যদিও তার বাহিনি ছিল আফগানদের নিয়ে। যাই হোক তাৎপর্যপুর্ন ভাবে মুঘালদের প্রথম বাধা দেন রাজপুতরা ।নিজেদের এলাকা রাজস্থানে তারা ছিল চির স্বাধীন।রাজপুতরা অসাধারণ যোদ্ধা তা আগেও বলেছি।তবে তাদের সমস্যা ছিলো যে তারা কখনই এক হয়ে লড়াই করেনি। বলা হয়ে থাকে রাজপুতরা এক থাকলে ভারত ত ভারত পুরো পৃথিবী জয় করাও তাদের পক্ষে সম্ভব হতো। আর তাই মুঘালরা রাজপুতদের জন্য নিয়েছিল ‘divide and rule policy’. মুঘালদের সাথে লড়াই এর সময় প্রায় সব সময় তাদের সৈন্য সংখ্যার অনুপাত থাকত ৫:১। যাই হোক মুঘালদের সাথে রাজপুতদের সখ্যতাই ছিলো বেশি। মুঘাল আমল ই ছিলো ভারতে মু্সলমানদের শ্রেষ্ঠ সময়।তবে এখন উত্তর ভারতের কিছু রাজ্যের কথা বলা দরকার। কয়েকটি জায়গা যেমন আজকের নেপাল,হিমাচল প্রদেশ,উত্তরাখণ্ড এ মোটামুটি বিশাল এলাকা ছিলো চির স্বাধীন।অসংখ্য বার মুঘাল,আফগান,তুর্কিদের পরাজিত করে তারা।চির যোদ্ধা এখান কার মানুষরা এখনও যুদ্ধেপারদর্শী(গুর্খা,জাঠ ইত্যাদি) । এ ছাড়া উত্তরপূর্ব ভারতের বিশাল অহোম রাজশক্তি ও কখনই মুসলিম রাজত্বের অধীনে আসে নি। যাই হোক শাহজাহান এর পর সিংহাসনে তখন আওরঙজেব। এ সময় ভারতে উথান ঘটে এমন এক জাতির যা হয়ে উঠেছিলো হিন্দুদের পুনরুথনের মূল শক্তি। জাতিটির নাম মারাঠা। জাতিটির অধিনায়ক ছিলেন খাটো কিন্তু শক্তিশালী একজন মানুষ। প্রচণ্ড মেধাবী এই মানুষটি নিয়ে আসেন নতুন নতুন সামরিক কলা-কৌশল।আধুনিক যুগে পুরো পৃথিবীতে প্রথম সূচনা করেন গেরিলা পদ্ধতির।মারাঠা স্বাধীনতা আন্দোলন(১৬৮১-১৭০৭)শুরু হয়ে যায়। ঘুম চলে যায় মুঘালদের।তবে শিবাজীর মূল কৃতিত্ব আরেক জায়গায়।আন্দোলন কে তিনি শুধু মারাঠাদের জন্য না রেখে ঘোষণা করেন সমস্ত হিন্দুদের জন্য ‘হিন্দু স্বরাজ্য’প্রতিষ্ঠার। স্বল্পায়ু শিবাজী জীবিত থাকাকালীন জয় করেন দক্ষিণ ও পশ্চিম ভারতের অনেক্টা।তার মৃত্যুর পর দিন দিন মারাঠা সাম্রাজ্য বাড়তেই থাকে।১৭০৭ সালে চূড়ান্ত ভাবে পরাজিত হয় মুঘালরা যা ছিল ভারতে একটি প্রক্রিয়ার শুরু। আর তা হলো চূড়ান্ত ভাবে মুসলিমদের ক্ষমতা চ্যুত করা। এরপর একে একে মারাঠি গ্রেট ছত্রপতি শাহু,ধানাজীযাদব,ঘোড়পারে,বাজি রাও ক্রমশ পুরো ভারতের(india,Pakistan,bangladesh)প্রায় ৮০ ভাগ মারাঠিদের অধীনে এনে দেন।উত্তরে পেশাওয়ার থেকে দক্ষিনে তামিলনাড়ু পর্যন্ত ছিলো সাম্রাজ্য।এ সময়ই ভারতে মুস্লিদের অন্তিম সময় বলা হয়। এ সময় মুঘাল শাসন ছিলো শুধু মাত্র দিল্লি শহরে আর সেখানেও তিনি ছিলেন মারাঠা অধীনে। ১৭৫৬ সালে পাঞ্জাবকে স্বাধীন করে মারাঠারা।১৭৩৮ থেকে ১৭৪৬ পর্যন্ত ছয় বার বাংলা আক্রমন করে নবাবকে পরাস্থ করে তারা।যার ফলে বাংলার নবাব ও আর স্বাধীন ছিলো না।বাংলা পরিনত হয় মারাঠাদের vessel উপনিবেশে। ১৭৫১ সালে নবাব আলিবর্দির সাথে চুক্তি হয় মারাঠাদের যে নবাব বছরে ১২ লাখ টাকা মারাঠাদের দেবেন। এ ছাড়া উড়িষ্যা ও মারাঠাদের দিয়ে দিতে হয়।বিনিময় আর বাংলা আক্রমন করে নি তারা।এ সময় থেকে বিশাল ভারতবর্ষে মুসলিমরা ক্ষমতায় ছিল মাত্র দশ ভাগ জায়গায়।তার মধ্যেও প্রকৃতপক্ষে স্বাধীন নবাব ছিলেন কেবল হায়দ্রাবাদের নিজাম। এভাবে আসে ১৭৬১ সাল।আগের দুই বার আফগান সেনাপতিআব্দালি ও রোহিলা নবাবকে পরাজিত করলেও পানি পথের তৃতীয় যুদ্ধে সাহায্য হীন(জাঠ,রাজপুত কেউ সাহায্য করে নি তাদের)মারাঠারা হেরে যায়।‘রক্তাক্ত প্রান্তর’ নাটকের সৌজন্যে এ কথা আমরা সবাই জানি।কিন্তু যা জানিনা তা হল এ যুদ্ধের ফলাফল ও পরবর্তী ইতিহাস। এ যুদ্ধে মারাঠারা পরাজিত হলে মারাঠা সাম্রাজের বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যায়।দীল্লির উপর অধিকার হারায় মারাঠারা।যুদ্ধে আফগানরা জিতলেও তাদের এত বেশি ক্ষতি হয় যে তারা দীল্লি ছেড়ে পালায়। শুধু তাই নয় সেনা বাহিনি ভেঙ্গে পড়ায় আফগান সাম্রাজ্য এত দুর্বল হয়ে পড়ে যে অল্প কিছুদিন পর শিখ আক্রমনে তা চুড়ান্ত পরিণতি বরণ করে ।দশ বছর পর মাধব রাও পেশওয়ার নেতৃত্বে আবার উত্তর ভারত দখল করে মারাঠারা ।পানি পথের যুদ্ধের ক্ষতি সুদে আসলে উসুল করে নেয় মারাঠা।এ সময় আরেক জন মারাঠি গ্রেট ছিলেন মহতজী সিন্ধে।পানি পথের দুই চরিত্র রোহিলা নবাবকে ও অযোধ্যার নবাবকে তিনি পরাজিত করেন। এ ছাড়া এ সময় মারাঠিদের সাথে যুদ্ধ হয় টিপু সুলতানের যিনি প্রতিবারই পরাজিত হন। এ সময় ব্রিটিশদের সাথে তিনটি যুদ্ধে জড়ায় মারাঠারা। যার প্রথম দুইটিতে জিতলেও শেষ যুদ্ধে মারাঠারা হেরে যায়।১৮১৮ সালে ইংরেজদের কাছে পরাজিত হওয়ার আগ পর্যন্ত মারাঠিরা ছিল ভারতের এক মাত্র প্রধান শক্তি।হিন্দুদের সামরিক ইতিহাসে একটা বিষয় দেখা দরকার ,তা হল এই যে মুসলিম শাসকদের বিরুদ্ধে হিন্দুদের লড়াই কখনই সাধারন মুস্লিম জনগণের বিরুদ্ধে ধর্মীয় বিদ্বেষ থেকে ছিল না।ছিল অত্যাচারি শাসকদের বিরুদ্ধে যারা নিজদেশে পরবাসী করে তুলেছিল হিন্দুদের।তাদের উপর আরোপ করেছিল জিজিয়া ইত্যাদি উদ্ভট কর, অসংখ্য হিন্দু মন্দির(>১০০০০) ভেঙ্গে হিন্দুদের ধরমান্তকরনে বাধ্য করেছিল।কিন্তু সর্বভূতে ঈশ্বরদর্শী হিন্দুকখনই নিজেদের সংগ্রামকে পরের উপর অত্যাচারে পরিণত করে নি।এখানেই হিন্দুত্বের জয়।

বেদে কোনো বর্ণভেদ নেই

এটা ভীষণ দুর্ভাগ্যজনক যে, যে বিশ্বের হিন্দু সম্প্রদায়ে বেদ হলো সমাজের মূল ভিত্তি, সেখানে আমরা ভুলেই গেছি বেদের মূল শিক্ষাগুলো এবং নিজেদেরকে নানা ভুল-ভ্রান্তিসমূহের ধারণায় জড়িয়ে ফেলেছি যেমন, জন্মগত caste system-সহ নানারকম বৈষম্য। এরকম বিপথগামী চিন্তা-চেতনা, ধ্যান-ধারণা আমাদের সমাজকে ভীষণ ক্ষতিসাধন করেছে এবং বৈষম্যের সূত্রপাত ঘটিয়ে দিয়েছে। দলিত নামক জাতিচ্যুত ব্যক্তিদের আমরা দূরে ঠেলে দিয়েছি এবং এর ফলে আমাদের উন্নতি ও প্রগতির বিকাশ স্থবির হচ্ছে। এর একমাত্র সমাধান হচ্ছে হিন্দু সমাজের মূলে গিয়ে বেদকে জানা - যার ফলে আমরা আমাদের মধ্যে ভাঙা সম্পর্কগুলো পুনরায় স্থাপণ করতে পারব। এই লেখায় আমরা চেষ্টা করব বেদ অনুযায়ী আমাদের caste system সম্পর্কে প্রকৃত ইতিহাস উদঘাটন করার এবং শূদ্রের আসল অর্থ খোঁজার। ১। প্রথমত, কোনো প্রকার হিংসা বা বৈষম্যের স্থাণ নেই বেদে যেকোনো ব্যক্তি সম্পর্কে - সে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, বা শূদ্র কিনা। ২। Caste system প্রায় নতুন। বেদে কোনো শব্দ নেই যার অর্থ বর্ণ/জাতি হতে পারে। আসলে, caste, জাতি আর বর্ণ এগুলো এক একটি এক এক অর্থ বহন করে। Caste হলো একটি ইউরোপীয় নবধারা যার সাথে বৈদিক সংস্কৃতির কোনো সামঞ্জস্যতা নেই। জাতি 'জাতি'র অর্থ হচ্ছে এক শ্রেণীভুক্তকরণ যার উৎস হচ্ছে জন্মে। ন্যায় সূত্র বলেছে "সমানপ্রসাভাত্মিকা জাতিহ্‌" অথবা তারা যাদের একইপ্রকার জন্মসূত্র যা এদেরকে একটি জাতিতে সমষ্টিবদ্ধ করে। একটি প্রাথমিক আরো বড় শ্রেণীভুক্তকরণ ঋষিদের দ্বারা করা হয়েছে চারভাবে: উদ্ভিজ (অর্থাৎ গাছপালা), আন্ডাজ (অর্থাৎ ডিম থেকে যার উৎপত্তি যেমন পাখি এবং সরীসৃপ), পিন্ডজ (স্তন্যপায়ী), উষ্মজ (তাপমাত্রা বা পরিবেষ্টনকারী আবহাওয়ার জন্য যার জন্ম যেমন ভাইরাস, ব্যাক্টেরিয়া ইত্যাদি)। তেমনিভাবে নানাপ্রকার পশুসমূহ যেমন হাতি, সিংহ, খরগোশ ইত্যাদি তৈরি করে এক ভিন্ন 'জাতি'। একইভাবে সমস্ত মানবকুল তৈরি করে একটি 'জাতি'। একটি নির্দিষ্ট জাতির থাকবে একই ধরনের বাহ্যিক বৈশিষ্ট্য যারা সেই জাতি থেকে আরেক জাতিতে পরিবর্তিত হতে পারবে না এবং ভিন্ন জাতির বাচ্চা প্রসব করতে পারবে না। অর্থাৎ, জাতি হচ্ছে ঈশ্বরের সৃষ্টি। ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শূদ্রেরা কোনোভাবেই ভিন্ন জাতি নয় কারণ তাদের মধ্যে জন্ম সূত্রগত বা বাহ্যিক বৈশিষ্ট্যগত কোনো পার্থক্য নেই যা তাদেরকে ভিন্ন করবে। পরবর্তীতে 'জাতি' শব্দটি ব্যবহৃত হতে শুরু করে যেকোনো প্রকার শ্রেণীভেদকরণের জন্য। তাই সাধারণ ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমরা ভিন্ন ভিন্ন সমাজকেও ভিন্ন ভিন্ন 'জাতি' হিসেবে আখ্যা দেই। কিন্তু এ শুধু ব্যবহারের সুবিধার জন্য। আসলে আমরা মানবকুল এক জাতিরই অংশ। বর্ণ প্রকৃত যে শব্দ ব্যবহার করা হয়েছিল ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শূদ্র বোঝাতে তা হলো 'বর্ণ' ('জাতি' নয়)। 'বর্ণ' শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে এই চারকে বোঝাতেই নয়, বরং দস্যু ও আর্যদেরকেও। 'বর্ণ' অর্থ হচ্ছে তাহাই যাহা গ্রহণ করা হয় পছন্দের দ্বারা। তাই, যেখানে 'জাতি' ঈশ্বর দ্বারা প্রদত্ত, 'বর্ণ' হচ্ছে আমাদের নিজস্ব পছন্দগত। যারা আর্য হতে পছন্দ করে তাদের বলা হয় 'আর্য বর্ণ'। তেমনি যারা দস্যু হতে পছন্দ করে, তারা হয় 'দস্যু বর্ণ'। একইভাবে হয় ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শূদ্র। এই কারণেই বৈদিক ধর্মকে বলা হয় 'বর্ণাশ্রম ধর্ম'। বর্ণ শব্দটি ইঙ্গিত করে যে এটির ভিত্তি হচ্ছে নিজ পছন্দকে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দেয়া ও যোগ্যতা অনুসারে পরিচালিত ব্যবস্থাকে অনুমোদন দেয়া। ৩। যারা বুদ্ধিবৃত্তিক কর্মকান্ডে নিয়োজিত, তারা পছন্দ করেন 'ব্রাহ্মণ বর্ণ'। যারা প্রতিরক্ষা, যুদ্ধ-বিগ্রহ পছন্দ করেন, তারা হন 'ক্ষত্রিয় বর্ণ'। যারা অর্থনীতি ও পশুপালনাদি পছন্দ করেন তারা হন 'বৈশ্য বর্ণ' এবং যারা নিয়োজিত আছেন অন্যান্য সেবামূলক কাজ-কর্মে, তারা হন 'শূদ্র বর্ণ'। এসব শুধু বোঝায় নানা ধরনের পছন্দ যেসব মানুষজন তাদের কর্মের জন্য নির্বাচন করেন এবং এর সাথে 'জাতি' বা জন্মের কোনো সম্পর্ক নেই। ৪। পুরুষ সুক্তের অন্যান্য মন্ত্রসমূহ উদ্ধৃতি দিয়ে প্রমাণ করেছে যে, ব্রাহ্মণ এসেছে ঈশ্বরের মুখ থেকে, ক্ষত্রিয় হাত থেকে, বৈশ্য উরু থেকে এবং শূদ্র পা থেকে। সেইভাবে এইসব বর্ণসমূহ জন্মগত। কিন্তু কোনোকিছুই এর চেয়ে বেশী ভ্রান্তিজনক হতে পারে না। আসুন দেখি কেন: (অ) বেদ ঈশ্বরকে বর্ণনা করে আকারহীন ও অপরিবর্তনশীল হিসেবে। এমন ঈশ্বর কিভাবে বিশাল আকৃতির মানুষের রূপ ধারণ করতে পারে যদি তিনি আকারহীনই হন? (যজুর্বেদ ৪০.৮) (আ) যদি ইহা সত্যিই হয়, তাহলে তাহা বেদের কর্মতত্ত্বের বিরোধীতা করবে। কারণ কর্মতত্ত্ব অনুযায়ী, একজন ব্যক্তির জন্মগত পরিবার পরিবর্তিত হতে পারে তার কর্ম অনুসারে। সুতরাং একজন ব্যক্তি যে শূদ্র পরিবারে জন্ম নেয়, পরের জন্মে এক রাজার পরিবারে জন্ম নিতে পারে। কিন্তু যদি শূদ্রেরা ঈশ্বরের পা থেকে এসে থাকে, তাহলে সেই একই শূদ্র ঈশ্বরের হাত থেকে কিভাবে জন্ম নেয়? (ই) আত্মা হলো সময়হীন এবং কখনো জন্ম নেয় না। সুতরাং আত্মার কখনোই কোনো বর্ণ হতে পারে না। এ শুধুমাত্র যখন আত্মা জন্ম নেয় মনুষ্য হিসেবে তখনই এর সুযোগ থাকে বর্ণ বেছে নেবার। তাহলে বর্ণ দ্বারা কি বোঝানো হয় যা ঈশ্বরের একাংশ হতে আসে? যদি আত্মা ঈশ্বরের দেহ থেকে জন্ম না নিয়ে থাকে, তাহলে কি এই বোঝায় যে আত্মার দেহ তৈরি হয়েছে ঈশ্বরের দেহের অংশ থেকে? কিন্তু বেদ অনুযায়ী, এমনকি প্রকৃতিও চিরন্তন। এবং এই একই অনু-পরমানু পুনর্ব্যবহৃত হচ্ছে নানা মনুষ্যের মধ্যে। তাই কৌশলগতভাবে ঈশ্বরের দেহ থেকে জন্ম নেয়া কারো পক্ষে অসম্ভব, এমনকি আমরা যদি ধরেও নেই ঈশ্বরের দেহ আছে। (ঈ) উপরে উল্লেখ করা পুরুষ সুক্ত রয়েছে যজুর্বেদের ৩১তম অধ্যায়ে (এবং ঋগবেদ ও অথর্ববেদ বাদে যেগুলোতে কিছু ভিন্নতা রয়েছে। যজুর্বেদে এ হচ্ছে ৩১.১১)। প্রকৃতভাবে এর অর্থ কি তা বোঝার জন্য, আসুন দেখি এর আগের মন্ত্রের দিকে লক্ষ্য করি ৩১.১০। এতে প্রশ্ন করা হয়েছে - কে মুখ? কে হাত? কে উরু আর কেই বা পা? এর পরের মন্ত্র এর উত্তর দিয়েছে - ব্রাহ্মণ হলো মুখ, ক্ষত্রিয় হলো হাত, বৈশ্য হলো উরু এবং শূদ্র হলো পা। লক্ষ্য করুন, মন্ত্রটি কিন্তু বলছে না ব্রাহ্মণ "জন্ম নেয়" মুখ থেকে...এটি বলছে ব্রাহ্মণ "হলো" মুখ। কারণ যদি মন্ত্রটির অর্থ হতো "জন্ম নেওয়া" তাহলে এটি উত্তর দিত না আগের মন্ত্রের প্রশ্নটির "কে মুখ?" যেমন, যদি আমি প্রশ্ন করি "দশরথ কে?" উত্তরটি যদি হয় "রাম জন্ম নেন দশরথের ঘরে" তাহলে তা হবে অর্থহীন। প্রকৃত অর্থ হচ্ছে: সমাজে ব্রাহ্মণ বা বুদ্ধিজীবিরা তৈরি করে মস্তিষ্ক বা মাথা বা মুখ যা চিন্তা করে এবং বলে। ক্ষত্রিয় বা রক্ষণকর্মীরা তৈরি করে হাত যা রক্ষা করে। বৈশ্য বা উৎপাদনকারীরা এবং ব্যবসায়ীরা তৈরি করে উরু যা ভার বহন করে এবং যত্ন করে (লক্ষ্য করুন উরুর হাড় অথবা উর্বাস্থি তৈরি করে রক্ত এবং এ হচ্ছে দেহের সবচেয়ে শক্ত হাড়)। অথর্ববেদে উরুর বদলে "মধ্য" শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে যার অর্থ বোঝায় পাকস্থলী এবং দেহের মধ্যের অংশ। শূদ্র বা শ্রমিকেরা তৈরি করে পা যা কাঠামোটিকে দাঁড় করায় এবং দেহকে চলতে সক্ষম করে। পরবর্তী মন্ত্রগুলো আলোচনা করেছে অন্যান্য দেহের অংশ সম্পর্কে যেমন - মন, চোখ ইত্যাদি। পুরুষ সুক্ত বর্ণনা করেছে সৃষ্টির সূত্রপাত এবং তার স্থায়ী থাকা সম্পর্কে যার মধ্যে অন্তর্গত মানব সমাজ এবং বর্ণনা করেছে অর্থপূর্ণ সমাজের উপাদানসমূহকে। তাই এ ভীষণ করুণ অবস্থা যে এমন সুন্দর সমাজ সম্পর্কে রূপক বর্ণনা এবং সৃষ্টি সম্পর্কিত বর্ণনা বিকৃত হয়েছে যা সম্পূর্ণভাবে বৈদিক মূল্যবোধের বিরুদ্ধে। এমনকি ব্রহ্ম গ্রন্থগুলো, মনুস্মৃতি, মহাভারত, রামায়ণ এবং ভগবদগীতা বলে নাই কোনোকিছুই যার কাছাকাছি উপপ্রমেয় হতে পারে এমন অদ্ভূত যে ঈশ্বর তৈরি করেছেন ব্রাহ্মণদের তাঁর মুখ হতে মাংস ছিঁড়ে কিংবা ক্ষত্রিয়দের তাঁর হাতের মাংস থেকে বা অন্যান্যসমূহ। ৫। তাই এটি স্বাভাবিক কেন ব্রাহ্মণরা বেদ অনুসারে সবচেয়ে বেশী সম্মান লাভ করেছে। এমনটিই হচ্ছে আজকের বর্তমান সমাজে। বুদ্ধিজীবিরা এবং অভিজ্ঞরা আমাদের সম্মান অর্জন করেন কারণ তারা তৈরি করেন দিক প্রদর্শনকারী সারা মানবতার জন্য। কিন্তু যেমনভাবে পূর্বে আলোচিত হয়েছে যে, বেদে শ্রমের মর্যাদা সমভাবে জোর দেওয়া হয়েছে এবং এই কারণেই কোনো প্রকার বৈষম্যের উপাদান নেই। ৬। বৈদিক সংস্কৃতিতে সবাইকে ধরা হয় শূদ্র হিসেবে জন্ম। তারপর ব্যক্তির শিক্ষা-দীক্ষা দ্বারা সে পরিণত হয় ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্যতে। এই শিক্ষা-দীক্ষার পূর্ণতাকে ধরা হয় দ্বিতীয় জন্ম। একারণেই এই তিন বর্ণকে বলা হয় "দ্বিজ" বা দু'জন্মা। কিন্তু যারা রয়ে যায় অশিক্ষিত (যেকোনো কারণেই হোক) তারা সমাজ থেকে বিচ্যুত হয়। তারা চালিয়ে যায় শূদ্র হিসেবে এবং করে যায় সমাজের সেবামূলক কাজসমূহ। ৭। এক ব্রাহ্মণের পুত্র, যদি সে তার শিক্ষা-দীক্ষা সম্পূর্ণ করতে অসমর্থ হয়, পরিণত হয় শূদ্রে। তেমনিভাবে শূদ্রের পুত্র অথবা এমনকি দস্যু, যদি সে তার শিক্ষা-দীক্ষা সম্পূর্ণ করে, তাহলে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয় কিংবা বৈশ্য হতে পারে। এ হচ্ছে নির্ভেজাল যোগ্যতা অনুযায়ী ব্যবস্থা। যেমনভাবে এখনকার সময়ে ডিগ্রী প্রদান করা হয়, যজ্ঞপবিত দেয়া হতো বৈদিক নিয়ম অনুসারে। তাছাড়া, আচরণবিধির সাথে অসম্মতি ঘটলে যজ্ঞপবিত নিয়ে নেয়া হতো বর্ণগুলোর। ৮। বৈদিক ইতিহাসে অনেক উদাহরণ রয়েছে বর্ণ পরিবর্তনের - (ক) ঋষি ঐতরেয়া ছিলেন দাস বা অপরাধীর পুত্র কিন্তু তিনি পরিণত হন শীর্ষ ব্রাহ্মণদের মধ্যে একজন এবং লেখেন ঐতরেয়া ব্রহ্ম এবং ঐতরেয়াপোনিষদ। ঐতরেয়া ব্রহ্মকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে ধরা হয় ঋগবেদ বোঝার জন্য। (খ) ঋষি ঐলুশ জন্মেছিলেন দাসীর ঘরে যিনি ছিলেন জুয়াখোর এবং নিচু চরিত্রের লোক। কিন্তু এই ঋষি ঋগবেদের উপর গবেষণা করেন এবং কিছু বিষয় আবিষ্কার করেন। তিনি শুধুমাত্র ঋষিদের দ্বারা আমন্ত্রিতই হতেন না এমনকি আচার্য্য হিসেবেও অধিষ্ঠিত হন। (ঐতরেয়া ব্রহ্ম ২.১৯) (গ) সত্যকাম জাবাল ছিলেন এক পতিতার পুত্র যিনি পরে একজন ব্রাহ্মণ হন। (ঘ) প্রীষধ ছিলেন রাজা দক্ষের পুত্র যিনি পরে শূদ্র হন। পরবর্তীতে তিনি তপস্যা দ্বারা মোক্ষলাভ করেন প্রায়ঃশ্চিত্তের পরে। (বিষ্ণু পুরাণ ৪.১.১৪) যদি তপস্যা শূদ্রদের জন্য নিষিদ্ধ হতো যেমনভাবে উত্তর রামায়ণের নকল গল্প বলে, তাহলে প্রীষধ কিভাবে তা করল? (ঙ) নবগ, রাজা নেদিস্থের পুত্র পরিণত হন বৈশ্যে। তার অনেক পুত্র হয়ে যান ক্ষত্রিয়। (বিষ্ণু পুরাণ ৪.১.১৩) (চ) ধৃষ্ট ছিলেন নবগের (বৈশ্য) পুত্র কিন্তু পরে ব্রাহ্মণ হন এবং তার পুত্র হন ক্ষত্রিয়। (বিষ্ণু পুরাণ ৪.২.২) (ছ) তার পরবর্তী প্রজন্মে কেউ কেউ আবার ব্রাহ্মণ হন। (বিষ্ণু পুরাণ ৯.২.২৩) (জ) ভগবদ অনুসারে অগ্নিবেশ্য ব্রাহ্মণ হন যদিও তিনি জন্ম নেন এক রাজার ঘরে। (ঝ) রাথোটর জন্ম নেন ক্ষত্রিয় পরিবারে এবং পরে ব্রাহ্মণ হন বিষ্ণু পুরাণ ও ভগবদ অনুযায়ী। (ঞ) হরিৎ ব্রাহ্মণ হন ক্ষত্রিয়ের ঘরে জন্ম নেয়া সত্ত্বেও। (বিষ্ণু পুরাণ ৪.৩.৫) (ট) শৌনক ব্রাহ্মণ হন যদিও ক্ষত্রিয় পরিবারে জন্ম হয়। (বিষ্ণু পুরাণ ৪.৮.১) এমনকি বায়ু পুরাণ, বিষ্ণু পুরাণ ও হরিবংশ পুরাণ অনুযায়ী শৌনক ঋষির পুত্রেরা সকল বর্ণের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। একই ধরনের দৃষ্টান্ত পাওয়া যায় গ্রীতসমদ, বিতব্য ও বৃৎসমতির মধ্যে। (ঠ) মাতঙ্গ ছিলেন চন্ডালের পুত্র কিন্তু পরে ব্রাহ্মণ হন। (ড) রাবণ জন্মেছিলেন ঋষি পুলৎস্যের ঘরে কিন্তু পরে রাক্ষস হন। (ঢ) প্রবৃদ্ধ ছিলেন রাজা রঘুর পুত্র কিন্তু পরে রাক্ষস হন। (ণ) ত্রিশঙ্কু ছিলেন একজন রাজা যিনি পরে চন্ডাল হন। (ত) বিশ্বামিত্রের পুত্রেরা শূদ্র হন। বিশ্বামিত্র নিজে ছিলেন ক্ষত্রিয় যিনি পরে ব্রাহ্মণ হন। (থ) বিদুর ছিলেন এক চাকরের পুত্র কিন্তু পরে ব্রাহ্মণ হন এবং হস্তিনাপুর রাজ্যের মন্ত্রী হন। ৯। "শূদ্র" শব্দটি বেদে দেখা গেছে প্রায় ২০ বারের মতো। কোথাও এটি অবমাননাকরভাবে ব্যবহৃত হয়নি। কোথাও বলা হয়নি শূদ্রেরা হলো অস্পর্শযোগ্য, জন্মগতভাবে এই অবস্থাণে, বেদ শিক্ষা হতে অনুনোমোদিত, অন্যান্য বর্ণের তুলনায় নিম্ন অবস্থাণের, যজ্ঞে অনুনোমোদিত। ১০। বেদে বলা হয়েছে শূদ্র বলতে বোঝায় কঠিন পরিশ্রমী ব্যক্তি। (তপসে শূদ্রম্‌ - যজুর্বেদ ৩০.৫) একারণেই পুরুষ সুক্ত এদের বলে পুরো মানব সমাজের কাঠামো। ১১। যেহেতু বেদ অনুযায়ী চার বর্ণসমূহ বলতে বোঝায় চার প্রকারের কর্মকান্ড যা পছন্দের উপর ভিত্তি করে, একই ব্যক্তি প্রকাশ করতে পারে চার বর্ণের বৈশিষ্ট্য চার ভিন্ন ভিন্ন পরিস্থিতিতে। এইভাবে সকলেই চার বর্ণের অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু সারল্যতার জন্য, আমরা বলি প্রধান পেশাকে বর্ণের পরিচয় হিসেবে। এবং এই কারণে সকল মানুষের উচিত পূর্ণভাবে চার বর্ণ হবার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করা, যেমনভাবে বেদের জ্ঞান আমাদের বলে। এই হলো পুরুষ সুক্তের সারাংশ। ঋষি বশিষ্ঠ, বিশ্বামিত্র, অঙ্গীরা, গৌতম, বামদেব ও কন্ব - এরা সকলেই চার বর্ণের বৈশিষ্ট্যের দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন। তারা বৈদিক মন্ত্রের অর্থ উদ্ভাবন করেছেন, দস্যু দমন করেছেন, দৈহিক শ্রমের কর্ম করেছেন এবং নিজেদেরকে যুক্ত করেছেন সমাজ কল্যাণের জন্য সম্পদ ব্যবস্থাপনায়। আমাদেরও উচিত এমনটিই হওয়া। অবশেষে আমরা দেখলাম বৈদিক সমাজ সকল মানুষকে একই জাতি বা গোষ্ঠী হিসেবে গণ্য করে, শ্রমের মর্যাদা বহাল রাখে, এবং সকল মানুষের জন্য সমান সুযোগ প্রদান করে যাতে তারা নিজ নিজ বর্ণ গ্রহণ করতে পারে। বেদে কোনো প্রকার জন্মগত বৈষম্যের উল্লেখ নেই। আমরা যেন সকলে একযুক্ত হয়ে একটি পরিবারের ন্যায় একতাবদ্ধ হতে পারি, প্রত্যাখান করতে পারি জন্মগত সকল বৈষম্যকে এবং একে অপরকে ভাই-বোন হিসেবে সদ্ব্যবহার করতে পারি। আমরা যেন সকল পথভ্রষ্টকারীদের ভুল পথে এগুনো ব্যাহত করতে পারি যারা বেদে বর্ণভেদ সম্পর্কে ভিত্তিহীন দাবী করে এবং দমন করি সকল দস্যু, অসুর, রাক্ষসদের। আমরা যেন সকলে আসতে পারি বেদের আশ্রয়ে এবং একত্রে কাজ করে মানবতার বন্ধনকে আরো দৃঢ় করতে পারি এক পরিবার হিসেবে। সুতরাং বেদ অনুযায়ী কোনো বর্ণভেদ নেই।

আর্য আক্রমণ তত্ত্ব: নির্লজ্জ এক মিথ্যাচারের গল্প

ছোটবেলা থেকেই আমরা কল্পকাহিনী শুনতে অভ্যস্ত। এগুলো আমাদের পাঠ্য পুস্তকেও পড়ানো হয়। যেমন আর্যরা ছিল বহিরাগত। তারা ইউরোপ থেকে এসে ভারত দখল করে। বিজয়ী আর্যরা পরাভূত প্রাগার্য গোষ্ঠী ও কৌমের মানুষদের দাস, দস্যু, রাক্ষস বা অসুর বলে উল্লেখ করেছে আর নিজেদের মনে করেছে উন্নততর মানবপ্রজাতির অংশ। এই আর্যদের ধর্মই বৈদিক ধর্ম যা কালক্রমে হিন্দু ধর্ম নামে পরিচিতি পায়। হিন্দু সমাজের প্রচলিত বর্ণপ্রথায় শুদ্ররাই হচ্ছে এই অনার্যদের বংশধর। গত দেড়শ বছর ধরে এই ‘আর্য আক্রমণ তত্ত্ব’ বা Aryan Invasion Theory হিন্দু ধর্মের বিরুদ্ধে হিন্দুবিরোধীরা ব্যবহার করছে। চরম হিন্দুবিদ্বেষী দৈনিক আমার দেশে কয়েক বছর আগে লেখা হয় হিন্দু ধর্ম বর্বর আর্যদের আমদানি করা ধর্ম। দক্ষিণ ভারত আর উত্তর শ্রীলংকার তামিলরা নিজেদের দ্রাবিড় বলে আখ্যা দিয়ে তারা উত্তর ভারতের তথাকথিত আর্য হিন্দুদের ঘৃণা করতে শিখে। হিন্দু পণ্ডিতরা যেমন স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী , স্বামী বিবেকানন্দ শুরু থেকেই এই তত্ত্বের বিরোধিতা করেছেন। আমরা কয়েকটি পর্বে এই আর্য আক্রমণ তত্ত্বের মিথ্যাচার উন্মোচন করব। ১। খ্রিস্টান মিশনারিদের চক্রান্তঃ এই তত্ত্ব সম্প্রসারণের পিছনে লর্ড মেকলে আর জার্মান দার্শনিক মাক্সমুলারের অবদান সবথেকে বেশি। এরা প্রত্যেকে খ্রিস্টধর্ম প্রচারের জন্য এই কাজটি করেন। এই মাক্সমুলার প্রথম জীবনে ছিলেন একজন উদ্বাস্তু। তার আত্মজীবনীতেই রয়েছে …Had not a penny left, and that in spite of every effort to make a little money, I should have had to return to Germany.(ref –the life and letters of Maxmuller, vol.1, p.61, London edn) তাই ব্রিটিশদের ধর্মপ্রচারের কাজে তাকে যোগদান করতে হয়। তিনি তার মেধাকে ব্রিটিশদের হাতে বেঁচে দিলেন। I am to hand over to the company, ready for the press, fifty sheets each year-the same I had promised to samter in Germany; for this I have asked 200 pounds a year, 4 pounds a sheet.(ref. the life and letters of Maxmuller, vol.1, p.60-61, London edn.) কর্নেল জোসেফ বোডেন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সেনাবাহিনীতে বোম্বেতে চাকরি করতেন। তিনি ছিলেন একজন খ্রিস্টান উগ্রবাদী। হিন্দুদের খ্রিস্টান বানাতে তিনি মিশনারিদের সহায়তা করতেন। ১৮০৭ সালে অবসর গ্রহণের পর তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়কে ২৫০০০ পাউন্ড অনুদান করেন সেখানে সংস্কৃত ভাষার উপর চেয়ার প্রতিষ্ঠা করতে। বিশ্ববিদ্যালয় তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে এর নাম করে বোডেন চেয়ার। বোডেনের লক্ষ্য ছিল বাইবেলকে সংস্কৃত ভাষায় অনুবাদ করে এর মাধ্যমে হিন্দুদের খ্রিস্টধর্মে ধর্মান্তরিত করার। এছাড়া মিশনারিরা হিন্দুধর্মকে একটি বহুশ্বরবাদী ধর্ম হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিল। কিন্তু হিন্দুদের একেশ্বরবাদী চেতনার উৎসই হল বেদ। তাই তাদের লক্ষ্য ছিল বেদকে আক্রমণ করা। এর জন্য মাক্সমুলারের মত ধূর্ত লোকদের দরকার ছিল আরও অনেক বেশী যার ইংরেজি এবং সংস্কৃত ভাষার উপর দখল ছিল অতি জঘন্য। তার কাজ ছিল হিন্দু শাস্ত্রগুলোর অপব্যাখা করা। লর্ড মেকলে যাকে ইংরেজি ভাষা শিক্ষা প্রবর্তনের জন্য আমাদের বুদ্ধিজীবীরা পূজা করেন তিনি জন্ম নেন এক ডানপন্থী খ্রিস্টান পরিবারে। ইংরেজি শিক্ষা এবং ইউরোপীয় ভাষা প্রচারের প্রধান লক্ষ্যই ছিল খ্রিস্টধর্ম প্রচার। ১৮৩৫ এর ফেব্রুয়ারিতে ভারতের শিক্ষা ব্যবস্থায় ইংরেজি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করেন তিনি। ১৮৩৬ সালের ১২ অক্টোবর তিনি তার পিতাকে চিঠিতে লিখেন, “ our English schools are flourishing wonderfully. We find it difficult – indeed, in some places impossible – to provide instructions for all who want it. At the single town of hoogle fourteen hundred boys are learning English. The effect of this education on the hindoos is prodigious. No hindoo, who has received an English education, ever remains sincerely attached to his religion. Some continue to profess it as a matter of policy; but many profess themselves pure deists, and some embrace Christianity. It is my firm belief that if, our plans of education are followed up, there will not be a single idolater among the respectable classes in Bengal thirty years hence. And this will be affected without any efforts to proselytize; without the smallest interference with religious liberty; merely by the natural operation of knowledge and reflection. I heartily rejoice in the prospects. Ref. the life and letters of Lord Macaulay, pp. 329-330 ” লর্ড মেকলে আর মাক্সমুলারের প্রথম সাক্ষাৎ হয় ১৮৫১ সালে লন্ডনে। পরবর্তী সাক্ষাৎ হয় ১৮৫৫ সালের ডিসেম্বরে। তাদের সেই সাক্ষাৎকারে মাক্সমুলার ভাষাকে ব্যবহারের কথা জানান। তিনি লিখেন। “…I made acquaintance this time in London with Macaulay, and had along conversation with him on the teaching necessary for the young men who are sent out to India. He is very clear headed, and extraordinarily eloquent…I went back to oxford a sadder, and, I hope, a wiser man. Ref. –the life and letters of Maxmuller, vol.1, p.162, London edn” মাক্সমুলার ক্রমাগত সংস্কৃত শাস্ত্রের অপব্যাখা করতে থাকেন। এই বিষয়ে স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী তার সত্য প্রকাশ বইয়ের ২৭৮ পৃষ্ঠাতে লেখেন “the impression that the Germans are the best Sanskrit scholars, and that no one has read so much of Sanskrit as Prof Maxmuller, is altogether unfounded exposed Maxmuller. Yes, in a land where lofty trees never grow, even recinus communis or the castor oil plant may be called as oak…. I came to learn from a letter of a principal of some German university, that even men learned enough to interpret a Sanskrit letter are rare in Germany. I have also learnt from the study of Maxmuller’s history of Sanskrit literature and his comments on some mantras of the Veda, that prof. Maxmuller has been able to scribble out something by the help of the so-called tikas or paraphrases of the Vedas current in India” এই মাক্সমুলারই বেদের বিভিন্ন মন্ত্রের অপব্যাখা দিয়ে আর্য আক্রমণ তত্ত্বের প্রবর্তন করেন। ২। আর্য দ্রাবিড় বিভক্তিঃ ঋগবেদে কোথাও এই কথা নেই যে আর্যরা আক্রমণ করেছে বা বেদের দ্রষ্টা ঋষিরা ভারতের বাইরে থেকে এসেছেন। তারপরও হিন্দুবিরোধীরা অপপ্রচার চালায় ঋগবেদের বিরুদ্ধে। তারা বলে অঙ্গিরা বংশের ঋষিরা ইন্দ্রের আহ্বান করেছেন দস্যু এবং পানিদের দমন করতে এবং এটাই বুঝায় যে আর্য সেনাবাহিনী স্থানীয় ভূমিপুত্র দ্রাবিড়দের হত্যা করেছে। দ্রাবিড় শব্দের মানে কি? এর সংস্কৃত মূল দ্রব। এর অর্থ তরল জাতীয় বা জলীয়। তার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল তামিলদের সঙ্গম সাহিত্যে দ্রাবিড় বলতে কোন শব্দ নাই। তামিলদের সঙ্গম সাহিত্য ঐ অঞ্চলের জীবন, সময়, ঘটনাপ্রবাহ এবং বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সুনির্দিষ্ট ঘটনাপ্রবাহ ইঙ্গিত করে। এটা তামিলদের ব্যাকরণেরও বিবর্তন নির্দেশ করে। এর সময়সীমা খ্রিস্টের জন্মের ২০০ বছর আগে থেকে খ্রিস্টের জন্মের ৬০০ বছর পরে পর্যন্ত। তাহলে আর্য বলে যদি কোন জাতি বাইরে থেকে এসে দ্রাবিড়দের হত্যা করে তাদের দক্ষিণ ভারতের দিকে অভিবাসী হতে বাধ্য করে তাহলে তামিলদের এই প্রাচীন সাহিত্যে কেন এই ঘটনার উল্লেখ নেই? নবম শতাব্দীর দিকের তামিল সাহিত্যে দ্রাবিড় শব্দটি প্রথম পাওয়া যায়। সেন্থান দিবাকরম নামে একটি শব্দভাণ্ডারে দ্রাবিড় নামটি পাওয়া যায়। এটি ব্যবহৃত হয়েছিল তামিল বুঝাতে। এটি পরিষ্কার যে দ্রাবিড়দের নিয়ে গল্পটি একটি নির্লজ্জ মিথ্যাচার। উনবিংশ শতাব্দীতে রবার্ট ক্যাডঅয়েল নামক এক খ্রিস্টান ইভানজেলিস্ট প্রথম এই দ্রাবিড় শব্দটি ব্যবহার করেন আর্য আক্রমণ তত্ত্বে। এরপরই এটা রাজনৈতিক রূপ পায়। ৩। ঋগবেদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারঃ দেখা যাক মহাজ্ঞানীরা ঋগবেদের কোন মন্ত্রগুলো ব্যবহার করছে আর্য আক্রমণ তত্ত্ব প্রমাণ করতে। তারা ঋগবেদের ১০/৪৮ সুক্তকে দেখায় যেখানে আছে ইন্দ্র দস্যু, বৃত্র এবং পানিদের দমন করেছেন, তাদের সম্পদ নিয়ে নিয়েছেন এবং বলেছেন যারা তাঁর অনুসারী তাঁরা ব্যর্থ হবে না। বৃত্র এবং পানি দস্যুর প্রকারভেদ। কিন্তু ঋগবেদের ১/৩৩/১-১০ মন্ত্রগুলো পড়লে বুঝতে পারা যায় দস্যুদের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া ইন্দ্রের সম্পদ আসলে জ্ঞান। ঋগবেদের ১/৩৩/১ মন্ত্রটি শেষ হয় “gavam ketam param avarjate nah” এই কথাগুলো দিয়ে। এর অর্থ দীপ্তিময় গাভীর সর্বোচ্চ জ্ঞান। এই মন্ত্রটির অর্থ হচ্ছে come let us go seeking the cows to Indra, it is he that increases the thought in us, for us, he releases supreme knowledge of the luminous cows. বেদে যারা আধ্যাত্মিক কর্ম করেন তাদের যাজ্যু বলা হয়েছে। এই উৎসর্গ যেই সত্ত্বাদের উদ্দেশে করা হত তাদের যাজত বলা হত। যাজ্যুকে তার শুভবুদ্ধির জন্য সুক্রাতু বলা হত। সুক্রাতু যখন ঐশ্বরিক বানী লাভ করতেন তাদের বলা হত বিশ্বের গায়ক। দস্যু শব্দটি সুক্রাতু এবং যাজ্যুর ঠিক বিপরীত। একে বলা হত অযাজ্যু। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে দস্যু বিশ্বের গায়কদের ঘৃণা করে। এই জন্য একজন দস্যুকে বলা হত ব্রহ্মদ্ভিসা এবং অনাসা ( যার কথা বলার কোন মুখ নেই ) ও অমানযামানা ( যার কোন মানসিক বিবেকবোধ নাই )। বেদে বলা আছে দস্যুদের যে জ্ঞান তা ইন্দ্র কেড়ে নেন মানুষের সাহায্যে। ঋগবেদের আরেক জায়গাতে আছে পানি এমন এক ধরণের দস্যু যারা পবিত্র গাভি চুরি করে তাদের গুহাতে আটকে রাখে। ইন্দ্র মানুষের সহায়তায় তা উদ্ধার করেন। ঋগবেদের ৬/৫১/১৪ তে ইন্দ্রের প্রতি প্রার্থনা করা হয়েছে পানিদের ধ্বংস করতে এবং পানিদের নেকড়ের সাথে তুলনা করা হয়েছে। ঋগবেদের ৩/৩৪/৭-১০: ৭। ইন্দ্র,সাহসীদের প্রভু,যিনি সকলের শাসনকর্তা,যিনি সকল শক্তির মুল,যার শৌর্যে শক্তিশালী শৌর্যময়, এই পৃথিবীতে তার এই দান এর জন্য জ্ঞানীগন তার প্রশংসা করেন। ৮। অনন্যসাধারন,সর্বজয়ী,সকল জয়ের দাতা,আলোক এবং পানির উত্স ,স্বর্গ ও মর্তের মালিক,সেই ইন্দ্রকেই সকলে ভক্তিসহকারে বন্দনা করে। ৯। তিনি শক্তিশালী সূর্য ও অশ্ব এর মালিক(সংস্কৃত তে শক্তি এর প্রতীক হিসেবে সূর্য,অশ্ব এবং বৃষ এই তিনটি শব্দ প্রায়শই ব্যবহৃত হয়ে থাকে)।তিনি আমাদের গোসমূহ যোগান দিয়ছেন যা আমাদের দুগ্ধের যোগান দেয়।তিনিই স্বর্নময় সকল গুপ্তধনের উত্স(,তিনি দস্যুদের ধ্বংস করেন এবং আর্যদের রক্ষা করেন। ১০। তার শক্তিতেই গাছপালা বেড়ে উঠে,দিনের পর দিন আবর্তিত হয়;তিনি এই ভুখন্ড এবং বায়ুমন্ডল এর অধিকারী,তিনি অসতদের বিনাশ করেন,দাম্ভিকদের নিবৃত্ত করেন।তিনিই গাছপালা, বনজঙ্গল, আকাশ, দিনরাত্রির শৃঙ্খল রক্ষা করেন। এখন দস্যুরা যদি মনুষ্য সন্তান হয় এবং তারা অনার্য আদিবাসী হয় তবে তাদের থেকে ইন্দ্র কি করে আকাশ এবং দিনকে মুক্ত করেন? বেদে আরও আছে ইন্দ্র দস্যুদের তাড়া করেন এবং তাদের বিতাড়িত করেন স্বর্গ এবং মর্ত্য থেকে তার বজ্রের সাহায্যে। ইন্দ্রের মহত্ত্ব বাড়তে থাকে এবং ইন্দ্রের দীপ্তি দস্যুদের পলায়নের রাস্তা বন্ধ করে দেয়। এরপর ইন্দ্র হারিয়ে যাওয়া সূর্যকে উদ্ধার করেন এবং সেই সূর্য যখন উদিত হয় তখন তার আলোয় গুহাগুলো আলোকিত হয় যেখানে ভালা (এক ধরণের দস্যু) পবিত্র গাভীগুলি লুকিয়ে রেখেছে। তাহলে আমরা এমন এক চিত্র পাই যেটা সম্পূর্ণভাবে আর্য আক্রমণ তত্ত্বের বিরুদ্ধে যায়। পরবর্তী লেখায় বেদে দস্যু তাদের বলা হয়েছে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। ৪। সঙ্গম সাহিত্য থেকে প্রমাণঃ আমরা এখন তামিলদের সাহিত্যের দিকে নজর দেই। আমরা দেখি আসলেই কি তামিলরা তথাকথিত দ্রাবিড় যারা আর্যদের হাতে নির্যাতিত হয়েছিল। সঙ্গম সাহিত্যে পৃথিবীকে ভাগ করা হয়েছে মুল্লাই (বন), কুরিঞ্ছি (পাহাড়), মারুদাম (কৃষি ভূমি), নেইদাল (সমুদ্র সৈকত) এবং পালাই (খোলা ভূমি) এই পাঁচ ভাগে। তল্কাপ্পাইয়াম সাহিত্যে আছে এই জায়গাগুলোর দেবতা হচ্ছে মুল্লাইঃ তিরুমাল/ বিষ্ণু। কুরিঞ্ছিঃ সেয়ন ( কুমার/মুরুগুয়া/ কার্ত্তিকেয়)। মারুদামঃ ভেন্দান/ইন্দ্র। নেইদালঃ বারুনান/ বরুণ। পালাইঃ কররাভাই/ শক্তি। সঙ্গম সাহিত্যের আরেকটি অংশ হচ্ছে পুরানানুরু। সেখানে আছে শিব তিনটি শহরকে ধ্বংস করেছেন (ত্রিপুরা সামহারা)। সেখানে আছে শিব এক হাতে মেরু পর্বত তুলে নেন তীরধনুক হিসেবে। একটা ভয়ংকর সরীসৃপকে তীর ধনুকের ছিলা হিসেবে ব্যবহার করেন। একটা তীরের আঘাতে শহর তিনটিতে আগুন লেগে যায় এবং তা ধ্বংস হয়ে যায়। পুরানানুরু সাহিত্যে কার্তিককে বারবার দেখা যায় শিবের ছেলে হিসেবে। এটা আমাদের অগ্নিকুমার যিনি পুরাণের কার্তিকেয়র প্রতিচ্ছবি তার সাথে শিবের সম্পর্ক স্থাপনে সহায়তা করে। আর্য আক্রমণ তত্ত্বের সমর্থকদের দেখা যায় শিবকে শুধু দ্রাবিড়দের দেবতা বলতে দেখা যায়। সত্য এই যে বেদের রুদ্র থেকে পৌরাণিক শিবের উৎপত্তি। তৈত্তিরীয় সংহিতা বা কৃষ্ণ যজুর্বেদ এর রুদ্রম ভাগের বিভিন্ন ভাগে রুদ্র সম্পর্কে নির্দিষ্ট ধরনের বেশকিছু বৈশিষ্ঠ্য উল্লেখিত হয়েছে।আর শিব হল সেই বেশ কিছু গুলের একটি নির্দিষ্ট অংশের প্রতীক।পরবর্তীতে রুদ্রের বদলে অধিকাংশ স্থানেই শিব শব্দটির ব্যবহার শুরু হয়।তামিল গ্রন্থসমুহ যেমন পেরিয়া বা পুরানাম সমুহে শিবের যে বৈশিষ্ঠ্য দেখানো হয়েছে তা বেদের রুদ্রের সমরুপ।চিদাম্বরাম,থেবারাম এলাকাগুলোতে এখনও রুদ্রাম/চমকম পাঠ করা হয়।যদি তামিলদের শিব আর বৈদিক শিব আলাদা হত তবে তা নিশ্চয় করা হতনা।আসলে তৈত্তিরীয় সংহিতার রুদ্রাম সংস্কৃতিটাই এখনো তামিলনাড়ু, কর্ণাটকে বিদ্যমান। ৫। কেন এই আর্য আক্রমণ তত্ত্বঃ ইন্দোইউরোপিয়ান ভাষাগুলোর পারস্পরিক মিল দেখে ধারণা করা হয় যে এই ভাষাভাষীরা সকলে একই পূর্বআবাসস্থল থেকে এসেছে। সংস্কৃতের সাথে ইউরোপিয়ান বেশ কয়েকটি ভাষার মিল দেখে কেবল ভাষাগত মিল দেখেই জার্মান ইন্ডোলোজিস্ট ম্যাক্স মুলারই প্রথম আর্য আক্রমণ তত্ত্বের সূচণা করে। এই তত্ত্ব অনুযায়ী আর্যরা রাশিয়ার দক্ষিণ অংশ থেকে মাইগ্রেট করে ভারতীয় উপমহাদেশের আদিম অধিবাসীদের আবাস তথা সিন্ধু উপত্যকায় পৌছে। ম্যাক্স মুলারের এই তত্ত্বে কেবল ভাষাগত মিলকে বিবেচনায় নিয়েই এরকম একটি তত্ত্বকে দাঁড় করানো হয়। সিন্ধু সভ্যতার কোন আর্কিওলজিকাল এভিডেন্স তখনও আবিস্কৃত হয়নি। পরবর্তীতে ১৯২০ সালের দিকে যখন হরপ্পা, মহেঞ্জোদারো ও লোথাল নগর সভ্যতা আবিস্কৃত হয় তখন তত্ত্বটির খানিকটা পরিবর্তন হয়। যাযাবর বর্বর আর্যরা ইউরোপ থেকে এসে উন্নত নগর সভ্যতায় আক্রমণ করে এবং তাদেরকে পরাজিত করে সভ্যতাগুলোকে ধ্বংস করে। মহেঞ্জোদারো খনন করতে গিয়ে মন্টিমার হুইলার একেবারে উপরের অংশে কিছু মানুষের খুলি-হাড়গোড় পেলে এ তত্ত্বটি আরো দৃঢ় হয় এবং মোটামুটি সর্বজনবিদিত তত্ত্বে রূপান্তরিত হয়। তত্ত্বটি অনুযায়ী খ্রীষ্টপূর্ব ১৫০০ সালের দিকে আর্যরা ভারতের প্রাচীন কিন্তু সভ্য অধিবাসী দ্রাবিড়দের আক্রমণ করে। এই অসভ্য-বর্বর-যাযাবর-পশুপালক জাতিই আর্য জাতি। এদের হাতেই ঋগ্বেদ রচিত হয়। কী সহজ ইতিহাস! এবারে দেখি তাদের এ ধরণের ইতিহাস লেখার কারণগুলো কী কী। ম্যাক্স মুলার বা অন্য যারা এই তত্ত্বের প্রবক্তা ও প্রচারক তারা সবাইই মনে করতেন বাইবেলের সৃষ্টিতত্ত্ব নির্ভুল। সুতরাং পৃথীবীর বয়স কোনক্রমেই খ্রীষ্টপূর্ব ৪০০০ অব্দের বেশী যেতে পারে না। সুতরাং খ্রীষ্টপূর্ব ১৫০০ এর বেশি তারা মোটেই ভাবতে পারেনি কারণ বাইবেল অনুযায়ী নুহের প্লাবন হয়েছে খ্রীষ্টপূর্ব ২৫০০ সালের দিকে। কেউ কেউ অবশ্য আরো নিচে নেমে এসেছেন। কারো কারো মতে খ্রীষ্টপূর্ব ১১০০-৯০০ সালও হতে পারে। এর সাথে যুক্ত হয়েছে জার্মান আর্যশ্রেষ্ঠ তত্ত্ব। যেহেতু ঋগ্বেদের রচয়িতারা নিজেদেরকে আর্য বলেছেন সুতরাং ইতিহাস তৈরি হয়ে গেল। এবার আসি এই ইতিহাসের পূনর্মূল্যায়নে। ঋগ্বেদে আর্য শব্দটি কি একটি জাতিকে বুঝিয়েছে? ঋগ্বেদে আর্য শব্দটি গৌরব বা মর্যাদার অর্থ বহন করেছে, মোটেই কোন জাতিকে বুঝায়নি। ইরানী আবেস্তায়ও আর্য শব্দটি গৌরব ও শ্রেষ্ঠত্ববোধের পরিচায়ক। আর্য ও দ্রাবিড় যদি দুটো ভিন্ন জাতি হত তাহলে উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের অধিবাসীদের একই দেবতা, একই ঈশ্বর, প্রায় একই ভাষা (সংস্কৃত থেকে উদ্ভুত), একই পৌরাণিক বিশ্বাস ও গল্প হতে পারত না। দ্রাবিড়িয়ান কি কোন আলাদা জাতিগোষ্ঠী? তা তো নয়। তাহলে দাড়ায়- ককেশিয়ানরা দুই ভাগে ভাগ হয়ে একদল আর্য আরেকদল দ্রাবিড়িয়ান হয়েছে। দুই মহাদেশের বিশাল অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষদের ভাষা একই পরিবারভুক্ত হওয়ায় এবং একইসাথে আবেস্তা ও ঋগ্বেদের মিল দেখে পণ্ডিতগণ অনুমান করেছিলেন যে এরা একই আদি জনগোষ্ঠী থেকে ছড়িয়ে পড়ে সভ্যতা গড়ে। তাদের অনুমান ঠিকই ছিল কিন্তু যখন তারাই এই আর্যদের যাযাবর পশুপালক বর্বর বলেন আবার ঋগ্বেদও তাদের দ্বারা রচিত বলেন তখন তাদের ইতিহাস প্রশ্নবিদ্ধ না হয়ে উতড়ে যেতে পারে না। ঋগ্বেদ যদি তথাকথিত আর্যদের দ্বারা রচিত হয় তাহলে কেন ঋগ্বেদে কোথাও ইউরোপীয় স্থান, নদী ইত্যাদির নামও নেই? তারা যখন বলেন আর্যরা খ্রীষ্টপূর্ব ১৫০০ সালে সিন্ধু সভ্যতা আক্রমণ করে আর এদিকে আমরা ঋগ্বেদে খরস্রোতা স্বরস্বতী নদী দেখতে পাই, যে নদী খ্রীষ্টপূর্ব ৪০০০ অব্দে মরে যায় (সম্ভবত প্লেট টেকটোনিক মুভমেন্টের জন্য) তখন এ ইতিহাস যে মিথ্যা তা আর দ্বিতীয়বার ভাবতে হয় না। তাছাড়া পাকিস্তানের বেলুচিস্তানের মেহরগড় প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানটি খননের পর দেখা যায় প্রায় ৯৫০০ বছর আগে নবপ্রস্তর যুগে এখানকার অধিবাসীরা যাযাবর জীবন ছেড়ে স্থিতিশীল গ্রামীণ কৃষি জীবনে চলে গিয়েছিল। খ্রীষ্টপূর্ব ৮০০ সাল পর্যন্ত সেখানে কোন বাইরের জনগোষ্ঠীর আগমণ ঘটেনি। ঋগ্বেদ যে কোন যাযাবর জনগোষ্ঠীর রচিত হতে পারে না তা ফুটে ওঠে এর সমাজচিত্র রূপায়নে, গৃহনির্মাণের উপমা প্রয়োগে, অট্টালিকা, তন্তুবায়, ভেষজ চিকিৎসা ইত্যাদি শব্দপ্রয়োগে। চান্দ্রমাসে হিসাব করলে যে প্রতি তিন বছর একটি ১৩ মাসে বছর হতে হয় (যা কৃষিকাজ ইত্যাদির জন্য খুবই প্রয়োজনীয়), যাকে বৈদিক সমাজ মলমাস বলত (এখনো হিন্দুরা বলে) তাও বেদে উল্লেখ পা্ওয়া যায়। এরকম কয়েকশ উদাহরণ দেয়া যাবে যাতে প্রমাণিত হয় যে বেদের রচয়িতা মোটেই তথাকথিত আর্যরা হতে পারে না। প্রত্মতাত্ত্বিকভাবে এখন জানা যাচ্ছে যে মেহেরগড়ে মৃৎশিল্প-পূর্ব যুগে এখানকার মানুষ স্থিতিশীল বসতি গড়ে এবং পশুপালন ও কৃষিকাজ শুরু করে। পরবর্তীতে কালক্রমে তারা বৃহত্তর সিন্ধু-সরস্বতী উপত্যকায় ছড়িয়ে পড়ে। তাম্রযুগ ও আদি হরপ্পান পর্যায় পেরিয়ে তারা প্রায় ২৬০০ খ্রীস্টপূবাব্দ থেকে ১৯০০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত এক স্থায়ী নগর সভ্যতা গড়ে তোলে যাকে হরপ্পান সভ্যতাও বলা হয়। সকলকে জানিয় দিন‌। নমস্কার‌। লেখক- রজত দাশ গুপ্ত