মঙ্গলবার, ৩১ জানুয়ারী, ২০১৭

আপনার দাম্পত্য জীবন সুখের হবেতো????


দাম্পত্য সুখের ভিত্তি হ’ল স্বামী স্ত্রীর মধ্যে পারস্পরিক প্রেম-প্রীতি ভালবাসা-বোঝাপড়া। উভয়ের মনোবৃত্তি অনুরূপ হলে দাম্পত্য জীবনে সুখের অভাব ঘটার কথা নয়.
কিন্তু বাস্তবে সকলের জীবনে এই প্রার্থনা পূর্ণ হয় না। বিবাহের, এমন কি প্রেমজ বিবাহের অনতিকাল পরেই ব্যক্তিত্বের সংঘাত বাধে। পতি ও পত্নীর মধ্যে মানসিক দূরত্ব সৃষ্টি হয় ও তা অনেক সময় উভয়ের মধ্যে দুস্তর ব্যবধানে পরিণত হয়, সুখের পরিবর্তে আসে অশান্তি, কোন কোন সময় বিচ্ছেদ।
এখন প্রশ্ন এই যে, জ্যোতিষ কি এই বিষয়ে আমাদের পূর্বেই সাবধান করতে পারে?
কোন জাতক বা জাতিকার কোষ্ঠী বিচারে আগেই যদি জানতে পারা যায় যে তাহার দাম্পত্য সুখের যোগ নেই, তা হলে তার বিবাহের আগে সতর্কতা অবলম্বন করা যেতে পারে.. বিবাহিত জীবন বিষয়ে সপ্তমভাবের মত দ্বিতীয়ভাবও বিচার করতে হবে ।
তা ছাড়া, দ্বিতীয়ভাব কুটুম্বস্থান। বিবাহিত জীবনে সাফল্য বা অসাফল্যের পিছনে কুটুম্বদের ভূমিকা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ, পতি পত্নীর উভয় পক্ষেরই। সেই কারণেই বিবাহিত জীবনের জ্যোতিষিক অনুসন্ধানে ধনভাব ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ, চতুর্থভাব (সুখ) এবং দ্বাদশ (শয্যা সুখ) ভাবেরও গুরুত্ব আছে।
স্থির কাকরত্বে শুক্র পত্নীকারক গ্রহ। সপ্তমভাবপতি ও সপ্তমপতির নবাংশপতি হতে পতির বিচার করতে হয়।
বিবাহোত্তর জীবনে সুখলাভের সম্ভাবনা বিষয়ে প্রাচীন জ্যোতিষ গ্রন্থাদিতে যা পত্নীসুখ বিষয়ে লিখিত, তা পতিসুখ সম্বন্ধেও প্রযোজ্য।
লগ্নের সপ্তমস্থান শুভ গ্রহের ক্ষেত্র এবং শুভগ্রহ দ্বারা যুক্ত বা দৃষ্ট হলে পত্নীসুখ ও শ্বশুর কুলোদ্ভব সুখ হয় এবং স্ত্রী রূপবতী গুণবতী হয়। বিপরীতে- বিপরীত ফল হয় অর্থাৎ সপ্তমস্থান পাপক্ষেত্র হয়ে পাপগ্রহযুক্ত বা দৃষ্ট হলে ঐ প্রকার সুখ হয় না। শুভাশুভ মিশগ্রহে মিশ্র ফল চিন্তনীয়।
লগ্নাপেক্ষা সপ্তমে বহু পাপগ্রহের অবস্থানে বহু স্ত্রী সত্ত্বেও স্বল্প সুখ এবং বহু শুভগ্রহের অবস্থানে একটি স্ত্রী হলেও বিশেষ সুখ হয়। পতির কুন্ডলীতে লগ্নপতি ও সপ্তমপতি যে গ্রহের ক্ষেত্রে ও নবাংশে অবস্থিত, সেই গ্রহের ক্ষেত্রে বা নবাংশে স্ত্রীর জন্ম হলে সেই পত্নী স্বামীর সুখদায়িনী হয়ে থাকে। পতির জন্মকুন্ডলীতে চন্দ্র যে রাশিতে অবস্থিত, সেই রাশির সপ্তমরাশিদর্শী গ্রহের বা তদরাশি স্থিত গ্রহের ক্ষেত্রে যদি স্ত্রীর জন্ম হয়, তাহা হলে সেই স্ত্রী পতিপ্রিয়া হয়।
নারীর জন্মকুন্ডলীতে দ্বিতীয়, সপ্তম ও দ্বাদশপতি বৃহস্পতি দৃষ্ট এবং কেন্দ্র কোনস্থ হলে, অথবা সপ্তমপতির দ্বিতীয়ে, সপ্তমে বা একাদশ স্থানে শুভ গ্রহের অবস্থানে জাতক/ জাতিকা স্ত্রী/ পতি পুত্র সুখে সুখী হয়।
চন্দ্র ও লগ্ন হতে সপ্তমভাব যদি নবমপতি বা স্বীয় পতি বা শুভগ্রহ যুক্ত/দৃষ্ট হয়, তাহা হলে সপ্তমভাবের শুভ হয় এবং সেক্ষেত্রে বিবাহিত জীবন সুখের হয়।
সপ্তমভাব যদি সমরাশি হয়, সেই রাশ্যাধিপতি ও শুক্র যদি সমরাশিস্থিত হয় এবং পঞ্চম ও সপ্তমভাবের অধিপতিদ্বয় বলবান হয় ও অস্তমিত না হয়, তাহা হলে স্ত্রী পুত্র সুখ হয়।
কোন নারীর জন্মকুন্ডলীতে যদি
ক) লগ্ন বা লগ্নপতি ও চন্দ্র সমরাশিস্থিত এবং শুভগ্রহ যুক্ত, অথবা
খ) চন্দ্র, লগ্ন ও চতুর্থভাব যদি শুভ গ্রহ যুক্ত বা দৃষ্ট, বা
গ) লগ্নাপেক্ষা ত্রিকোণে (লগ্নে, পঞ্চমে, নবমে) শুভগ্রহেরা অবস্থিত, অথবা যদি সপ্তমভাব ও ঐ ভাব নবংশের অধিপতি শুভগ্রহ হয়, তাহা হলে সেই নারী গুণবতী ও সৌভাগ্যবতী হয়। পতিসুখ না পেলে সেই নারীকে সৌভাগ্যবতী বলা যাবে না, সুতরাং এই সকল যোগে পত্নী পতিসৌখ্যলাভ করে।
পত্নীর পতিপ্রিয়া হবার আরও কয়েকটা যোগ —-
ক) লগ্ন সমরাশিতে এবং মঙ্গল, বুধ, বৃহস্পতি ও শুক্র অতীব বলবান,
খ) লগ্নের নবাংশপতি শুভ গ্রহ
গ) লগ্নে শুক্র ও চন্দ্র বা বুধ ও চন্দ্র বা বুধ ও শুক্র অথবা শুভগ্রহ থাকলে,
ঘ) সপ্তমে একাধিক শুভগ্রহ বা পূর্ণচন্দ্র থাকলে,
ঙ) গুরু, শুক্র, বুধ ও চন্দ্র সকলেই লগ্নকে পূর্ণদৃষ্টি দিলে,
চ) লগ্ন থেকে কেন্দ্র কোণে বৃহস্পতি, বিশেষতঃ স্বগৃহে বা তুঙ্গ রাশিতে,
ছ) অষ্টমভাব থেকে নবমে এবং লগ্ন হতে নবমে শুধুমাত্র শুভ গ্রহের অবস্থান,
জ) লগ্ন ও রাশি শুধুমাত্র শুভগ্রহ দ্বারা দৃষ্ট।
দাম্পত্য সুখ বিচারে পতি-পত্নীর মিত্রতা-বৈরিতা বিচার ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। বিবাহে পাত্র-পাত্রীর কোষ্ঠীর মিল দেখার জন্য প্রচলিত যে অষ্টকূট যোটক বিচার পদ্ধতি ঐ পদ্ধতির অষ্টকুটের অন্যতম কুট, বর ও কন্যার উভয়ের রাশির অধিপতির মিত্রতা, ভাবী স্বামী-স্ত্রীর মানসিক সৌখ্যের অন্যতম নির্ণায়ক হিসাবে গণ্য হতে পারে। তবে এ’ছাড়া উভয়ের চন্দ্রস্থিত নবাংশ পতিদ্বয়ের এবং উভয়ের চন্দ্রস্থিত রাশির অধিপতির দ্বয়ের যে যে নবাংশে অবস্থিত সেই নবাংশ পতিদ্বয়েরও মিত্র আছে কিনা দেখা প্রয়োজন, থাকলে ভাবী বর বধুর মানসিক সম্প্রীতি বুঝতে হবে, না থাকলে সম্প্রীতির অভাব বুঝতে হবে।
দাম্পত্য সম্প্রীতি বা পতি-পত্নীর পরস্পর মিত্রতা-শত্রুতা বিষয়ে নানা যোগের উল্লেখ করার সময় অনেক সময় দাম্পত্যসুখের অভাবের যোগের কথাও বলা হয়েছে, তবে
দাম্পত্য সুখের অভাব সম্পর্কে নির্দিষ্ট কিছু যোগ —
১) শুক্র অবস্থিত রাশি হতে সপ্তমে পাপগ্রহের অবস্থান বা শুক্র পাপযুক্ত,
২) চন্দ্র সপ্তমস্থ, সপ্তমপতি ব্যয়স্থ এবং শুক্র দুর্বল,
৩) দ্বাদশপতি লগ্নে বা সপ্তমে,
৪) ব্যয়াধিপ শত্রু নবাংশে নীচ নবাংশে. অষ্টমভাব-নবাংশে বা ষষ্ঠাষ্টমে স্থিত,
৫) শুক্রের ত্রিকোণে অর্থাৎ পঞ্চমে বা নবমে শনির অবস্থান,
৬) সপ্তমে শনির অবস্থান,
৭) সপ্তমপতি পাপ নবাংশে, বা নীচ নবাংশে,
৮) ক্রুর ষষ্ঠাংশে,
৯) শুক্র নীচ নবাংশে,
১০) সপ্তমপতি রবির রাশিতে অর্থাৎ সিংহে এবং রবি পাপগ্রহের রাশিতে বা নবাংশে এবং পাপগ্রহ যুক্ত,/দৃষ্ট,
১১) চন্দ্রের রাশিতে সপ্তম পতি ও চন্দ্র পাপ নবাংশে,
১২) স্ত্রীজাতকের সপ্তমে বা অষ্টমে পাপগ্রহ, বিশেষতঃ সপ্তমে একাধিক দুর্বল পাপগ্রহের অবস্থান, অথবা সপ্তমে পাপগ্রহ দৃষ্ট রবি স্থিত হলে।
দাম্পত্য সুখ বা সুখের অভাব সম্বন্ধে নির্দিষ্ট কিছু যোগের উল্লেখ এই প্রবেন্ধে করা হল, তবে কোন দম্পতির জীবনে সুখ বিষয়ে সিদ্ধান্ত করার জন্য, শুধুমাত্র এই যোগগুলি বা এই ধরণের যোগের উপর সম্পূর্ণ নির্ভর করা যাবে না-উভয়ের কোষ্ঠীর সামুহিক মূল্যায়ন, যোগকারী গ্রহের এবং চন্দ্র ও শুক্রের বলাবল ও শুভাশুভত্ব বিবেচনা করতে হয় ।
এছাড়া পাত্র পাত্রির লগ্ন থেকে দ্বাদশ ভাবের এবং গ্রহের যথা অগ্নি,পৃথবী,বায়ু,জল পরস্পরের বন্ধুত্বেব পূর্ণ সম্পর্ক হতে হবে তা না হলে হাজার চেষ্টা করেও উভয়ের মনের মিলন ঘটা সম্ভব নয় এতে অশান্তি অবসম্ভাবি ।

কুরুক্ষেত্রে, শ্রীকৃষ্ণের বলা গীতার বাণী শুনলো কে আর লিখলো ই বা কে, কিভাবে ?


(Requested post : request by- Sudarson Surjo)উপরের ঠিক এই প্রশ্নসহ আরো কিছু প্রশ্ন Prithwiraj Modak নামের এক ব্যক্তি আমাকে করেছে, আগে দেখে নিন তার সেই প্রশ্নগুলো, তারপর দেখবেন আমার উত্তর :“আমি যদি আপনার দেখানো পথে আপনাকেই প্রশ্ন করি যে প্রমাণ করুন কিসনো বলে একজন কেউ ছিলেন যে গীতার বাণী বলেছিল! এবং সে যদি বলে থাকে তাহলে লিখলোই বা কে? আর যদি বলেই থাকে বা কেউ লিখেই থাকে, তাহলে কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ কতক্ষণ থামিয়ে কতক্ষণ বা কতদিন ধরে তার বাণী বলেছিল ও লেখা হয়েছিল? কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধক্ষেত্রে বলা বাণী পরে কে কিভাবে লিখলো, সে কি তখন সেই যুদ্ধক্ষেত্রে উপস্থিত ছিল ও পরে লিখেছিল নাকি যুদ্ধ থামিয়ে দুপক্ষের সেনাদের দিবানিদ্রায় পাঠিয়ে তবে লিখতে বসেছিল সেই মাঠেই? @ Uttam Kumar Das Das”ভগবান মানে কী ?আপনার পদবি দাস দাস, দুবার কেন দাস বুঝলাম না? আপনি কেন গীতার গুনগান করছেন যে গীতা আপনার দাস পদবী চাপিয়ে দেওয়ার জন্য দায়ী এই পৃথীবির ঘৃণ্যতম বর্ণব্যবস্থাকে স্থায়ী করার কথা বলে? আপনি নিজে যে চরম ঘৃণার শিকার তাকেই আবার মাথায় তুলে নাচছেন?Like • Reply • 1 hr • Edited(যে আই.ডিতে উনার সাথে আমার এই বাকযুদ্ধ আমার সেই আই.ডির নাম ছিলো Uttam Kumar Das Das)আমার জবাব:অনেক হিন্দুর মাথাতেই এই প্রশ্ন উঁকি দিতে পারে যে, আরে তাই তো, কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধক্ষেত্রে শ্রীকৃষ্ণ তো গীতার এসব কথা শুনিয়েছিলো শুধু অর্জুনকে, কিন্তু অর্জুন তো আর মহাভারত এবং তার মধ্যে গীতা লিখে নি, তাহলে গীতার বাণীগুলো লিপিবদ্ধ করলো কে এবং কিভাবে ? এর সাথে এই প্রশ্নও আসতে পারে যে, যুদ্ধক্ষেত্রের মধ্যে দাঁড়িয়ে কিভাবে কৃষ্ণ ১৮ অধ্যায়ের ৭০০ শ্লোক সম্বলিত গীতার এত কথা বললেন, তা শুধু অর্জুনই শুনলো, আর অন্য কেউ শুনলো না ? এই সময়টি তিনি পেলেন কোথায় ? যে প্রসঙ্গটি Prithwiraj Modak তার কমেন্টের মাধ্যমে আমাকে মনে করিয়ে দিয়েছে। এটা সহ তার সকল প্রশ্নেরই জবাব দিচ্ছি নিচে-আমরা সাধারণভাবে মনে করি, শ্রীকৃ্ষ্ণের মুখে গীতার বানী শুধু অর্জুন একাই শুনেছিলো, কিন্তু ব্যাপারটা তা নয়, গীতার বাণী শুনেছিলো আরো কয়েকজন, এর মধ্যে একজন বর্বরিক।বর্বরিক, ভীম ও হিডিম্বার পুত্র ঘটোৎকচের ছেলে। এককথায় পাণ্ডুপুত্র ভীমের নাতী । বর্বরিক ছিলো খুবই কৃ্ষ্ণ ভক্ত। একদিন সে তার মাকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারে কৃষ্ণের হাতে মরলেই সে কেবল মোক্ষলাভ করতে পারবে। তাই সে কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের আগে সব রকম প্রস্তুতি নিয়ে কৌরবদের পক্ষ হয়ে যুদ্ধ করার জন্য আসছিলো, কারণ কৃষ্ণ পাণ্ডবদের পক্ষে যুদ্ধ করবে। বিষয় টি জানতে পেরে কৃষ্ণ এক বৃদ্ধ ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশে বর্বরিকের সাথে রাস্তায় দেখা করে এবং নানা কথাবার্তার পর সুদর্শন চক্র দিয়ে বর্বরিকের মাথা কেটে তার কৃষ্ণের হাতে মরার শখ পূরণ করে দেয়। শেষে বর্বরিকের অনুরোধে কৃষ্ণ তার মাথাটাকে যুদ্ধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত জীবিত রাখে, যাতে সে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ দেখতে পায়। এই বর্বরিকের কাটা মাথা একটা গাছের উপর থেকে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের সব দৃশ্য দেখে, এ্ইভাবে সে গীতার বাণীও শুনে। কিন্তু বর্বরিক তো গীতা লিখে নি। তাহলে ?বর্বরিক ছাড়াও গীতার বাণী শুনেছিলো আরেকজন, পবন পুত্র হনুমান; কিন্ত কিভাবে ?অর্জুন পাশুপত অস্ত্র সংগ্রহ করতে যাওয়ার সময় দেখে এক বৃদ্ধ বানর তার পথরোধ করে শুয়ে আছে। পথ ছাড়তে বললে বানরটি অর্জুনকে বলে তার লেজ সরিয়ে পথ করে নিতে, কিন্তু অর্জুন তার লেজ সরাতে না পেরে বুঝতে পারে যে এটা সাধারণ কোনো বানর নয়। এর পর অর্জুনের অনুরোধে বানর তার আসল রূপ দেখায় এবং আশীর্বাদ স্বরূপ যুদ্ধের সময় অর্জুনের রথের উপর অবস্থান করে তাকে সাহায্য করবেন বলে কথা দেন। এজন্য অর্জুন তার রথের উপর হনুমানের আশীর্বাদের চিহ্ন হিসেবে কপিধ্বজ (পতাকা) স্থাপন করে, যেখানে হনুমান অশরীরীভাবে অবস্থান করে অর্জুনকে সাহায্য করে। এভাবে বর্বরিকের সাথে সাথে হনুমানও গীতার বাণী শুনে। কিন্তু হুনমানও তো গীতা লিখে নি। তাহলে ?গীতার বাণী সরাসরি শুনেছিলো আর একজন। তিনি সঞ্জয়, ধৃতরা্ষ্ট্রের অনুচর, কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধক্ষেত্র থেকে অনেক দূরে হস্তিনাপুরের প্রাসাদে থেকে। কিন্তু সেটা কিভাবে সম্ভব হয়েছিলো ?যুদ্ধ শুরুর ঠিক আগ মূহুর্তে কোনো একটা কারণে মহর্ষি বেদব্যাস হস্তিনাপুরে ধৃতরাষ্ট্রের প্রাসাদে যান। সেখানে তিনি বলেন, ধৃতরাষ্ট্র জন্মান্ধ হলেও তিনি তার দিব্যশক্তি দ্বারা কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের সমস্ত ঘটনা তাকে দেখাতে সক্ষম, তিনি তা দেখতে চান কি না ?ধৃতরাষ্ট্র যুদ্ধক্ষেত্রের ভয়াবহতাকে দেখতে চান না বলে সেই ক্ষমতা তার সহচর সঞ্জয়কে দিতে বলেন, যাতে সঞ্জয়ের কাছ থেকে তিনি তা শুনে নিতে পারেন। একজন্য বেদব্যাস, সঞ্জয়কে সেই দিব্যদৃষ্টি দান করেন, যাতে সঞ্জয় হস্তিনাপুরের প্রাসাদে থেকেও যুদ্ধের সব ঘটনা দেখে তা ধৃতরাষ্ট্রকে বর্ণনা করতে পারে এবং বর্ণনা করে। গীতার প্রথম অধ্যায়ে এই সঞ্জয়ের ই কথা বলা্ আছে। কিন্তু এই সঞ্জয়ও তো গীতা লিখে নি। তাহলে গীতা লিখলোটা কে ?কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ শেষ হলে মহর্ষি বেদব্যাস ধ্যানযোগে মহাভারতের সমস্ত ঘটনা স্মরণ করেন এবং পৃথিবীর লোকজনের জন্য তা লিপিবদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেন। এই কাজে তিনি নাকি গণেশ এর সাহায্য নেন। যা হোক, সেটা অন্য প্রসঙ্গ। মহর্ষি বেদব্যাস যে মহাভারত রচনা করেছেন, সেটাই আমরা জানি এবং সেই সূত্রেই আমরা দেখার চেষ্টা করবো আসলে গীতা কিভাবে লিখিত হলো ?আমরা এও জানি যে, গীতা মহাভারতেরই একটি অংশ, যা “আদি শংকরাচার্য” কর্তৃক মহাভারত থেকে সংকলিত হয়ে আলাদ পুস্তক হিসেবে স্বীকৃতি পায়। এই শংকরাচার্য সেই শংকরাচার্য, যিনি মাত্র ৮ বছর বয়সের মধ্যে চারটি বেদ আয়ত্ব করেছিলেন এবং সম্রাট অশোকের সময়ে বৌদ্ধধর্মে দীক্ষিত হয়ে যাওয়া ভারতের বেশির ভাগ লোককে- বৌদ্ধ ভিক্ষুদেরকে তর্কে পরাজিত করে- হিন্দুধর্মে ফিরিয়ে এনেছিলেন। ভারতে বৌদ্ধ ধর্মের প্রভাবে ম্লান হয়ে যাওয়া হিন্দুধর্মকে এই শংকরাচার্য ই পুনর্জীবন দান করেন ৭০০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে।যা হোক, ব্যাসদেব, কিভাবে মহাভারত স্মরণ করলো এবং তার মধ্যে কিভাবে গীতা লিখলো সেটা বোঝার জন্য এবার কমনসেন্সটাকে একটু খাটান। যে ব্যক্তি জন্মান্ধ ধৃতরাষ্ট্রকে যুদ্ধ দেখানোর ক্ষমতা রাখে, যে ব্যক্তি যুদ্ধক্ষেত্র থেকে ২৩০ কি.মি. দূরের হস্তিনাপুরের প্রাসাদে অবস্থিত সঞ্জয়কে যুদ্ধ দেখাতে পারে, একটু ভাবুন সেই ব্যক্তি কোন ক্ষমতা বলে এই কাজটি করলো ? যে ব্যক্তি নিজে দেখে নি, সেই ব্যক্তি কি অন্যকে কিছু দেখাতে পারে? মূলত ব্যাসদেব, সঞ্জয়কে যুদ্ধ দেখানোর সময় আধুনিক যুগের রিলে স্টেশন হিসেবে কাজ করেছিলো, প্রথমে সে দেখেছিলো, তারপর সঞ্জয়কে দেখিয়েছিলো; যেমন আধুনিক যুগের বেতার এবং টিভির রিলে স্টেশনগুলো মূল কেন্দ্র থেকে পাঠানো অনুষ্ঠানগুলো প্রথমে ধরে তারপর তা নিজের এলাকায় সম্প্রচার করে; ব্যাসদেব ঠিক এই কাজটিই করেছিলেন।আশা করছি- গীতা, কে এবং কিভাবে লিখলো সে বিষয়টি পাঠকদের কাছে পরিষ্কার হয়েছে।গীতার বাণী কে এং কিভাবে লিখলো, এটা Modak সাহেব এর প্রধান প্রশ্ন হলেও তার প্রথম প্রশ্ন ছিলো, আপনি প্রমান করুন যে কৃষ্ণ নামে কেউ ছিলো।এর উত্তরে বলছি,আপনার দাদু ছিলো বলেই তার নাম আপনি জানেন এবং আপনার আশে পাশের বা আপনার গ্রামের কিছুলোক তার সম্বন্ধে জানে, না থাকলে কিন্তু জানতো না। সেই রকম কৃষ্ণ নামে কেউ ছিলো বলেই তাকে নিয়ে এত কথা, এত কাহিনী, চারেদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে; কৃষ্ণ না থাকলে এসবের কিছুই থাকতো না।তার অন্য প্রশ্ন হচ্ছে, “তাহলে কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ কতক্ষণ থামিয়ে কতক্ষণ বা কতদিন ধরে তার বাণী বলেছিল ও লেখা হয়েছিল?”কিভাবে গীতার বাণী লিখা হয়েছে তার বিস্তারিত বর্ণনা তো একটু আগেই দিয়েছি। এখন বলছি, যুদ্ধক্ষেত্রের মধ্যে দাঁড়িয়ে শ্রীকৃষ্ণ কিভাবে ১৮ অধ্যায়ের ৭০০ শ্লোক সম্বলিত গীতার এত কথা বললেন, যা শুধু অর্জুনই শুনলো, আর অন্য কেউ শুনলো না ? এই কথা বলাবলির সময় কৃষ্ণ এবং অর্জুন পেলেন কোথায় ?ঈশ্বর যদি সর্বশক্তিমান হয় তাহলে তার পক্ষে সব কিছুই করা সম্ভব। যুদ্ধক্ষেত্রে যখন দুই বাহিনী দুই প্রান্তে প্রস্তুত, নিজের স্বজন ও গুরুর বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলতে হচ্ছে দেখে যখন অর্জুন বিমর্ষ, অর্জুন যখন শক্তিহীন, যখন যুধিষ্ঠির এবং ভীষ্ম শংখ বাজিয়ে যুদ্ধের ঘোষণা্ দিতে যাচ্ছে, ঠিক তখন অর্জুনের এই অবস্থা দেখে কৃষ্ণ দুই পক্ষের সমস্ত যোদ্ধাকে ফ্রিজ করে দেন, যে যেখানে যে অবস্থায় বা যে ভঙ্গিতে ছিলো, সে সেই অবস্থাতেই থেকে যায়, ২০১৪ সালে স্টারপ্লাস বা স্টার জলসা যে মহাভারত দেখালো সেটা যদি কেউ দেখে থাকেন তাহলে আমি যে সিচুয়েশনের কথা ব্যাখ্যা করছি তা ভালোভাবে বুঝতে পারবেন; অথবা আগে দেখে না থাকলে ইউটিউবে ভিডিও আছে সার্চ করে শুধু কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের শুরুটা দেখে নিয়েন, তাহলেও বুঝতে পারবেন আমি কী বলতে চাইছি। এভাবে সবাইকে কৃষ্ণ স্থির করে রাখেন ততক্ষণ, যতক্ষণ গীতার বাণী বলা্ শেষ না হয় এবং অর্জুনের দ্বিধা কেটে না যায়। এরপর অর্জুন স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরলে, শ্রীকৃষ্ণ সবাইকে স্থির অবস্থা থেকে মুক্ত করে দেয় এবং তারপর যুদ্ধ শুরু হয়। সুতরাং যুদ্ধক্ষেত্রে গীতা বলা্র সময় কৃষ্ণ কেথায় পেলো আশা করি তা পরিষ্কার হয়ে গেছে।তার পরের প্রশ্ন হচ্ছে, ভগবান মানে কী ?বিষ্ণুপুরাণ (৬.৫.৭৯) এ বলা আছে,যার- ঐশ্বর্য, বীর্য, যশ, শ্রী, জ্ঞান ও বৈরাগ্য এই ৬ টি গুণ আছে তিনিই ভগবান। যে কেউ এই ৬ টি গুন অর্জন করে ভগবান হতে পারেন। তবে সাধারণ মানুষের পক্ষে এইসব গুণ অর্জন করে ভগবান হওয়া অসম্ভব, একমাত্র অবতারদের মধ্যেই এই সব গুণের সমম্বয় হতে পারে। কৃষ্ণের মধ্যে এই সব গুণ ছিলো বলেই তাকে বলা হয় ভগবান, যদিও তিনি সকল গুণের আধার হিসেবে পরমেশ্বরও। তবে এখানে একটা সূত্র মনে রাখতে হবে যে, কেবলমাত্র ঈশ্বরকেই ভগবান বলে ডাকা যেতে পারে; সকল ভগবানকে ঈশ্বর নয়। কারণ, ঈশ্বর এক এবং তিনি সকল গুণের আধার কিন্তু ভগবান বহু এবং তারা মাত্র উপর্যুক্ত ৬ টি গুণের অধিকারী। একারণে বুদ্ধ ভগবান, পরশুরাম ভগবান, কিন্তু তারা ঈশ্বর নন। সূত্রটিকে এমনভাবে বলা যেতে পারে- ঈশ্বরই ভগবান, কিন্তু সকল ভগবান ই ঈশ্বর নয়। যেমন- প্রধানমন্ত্রী ই মন্ত্রী, কিন্তু সকল মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী নয়।তার শেষ বাক্যবাণ,“আপনার পদবি দাস দাস, দুবার কেন দাস বুঝলাম না? আপনি কেন গীতার গুনগান করছেন যে গীতা আপনার দাস পদবী চাপিয়ে দেওয়ার জন্য দায়ী এই পৃথীবির ঘৃণ্যতম বর্ণব্যবস্থাকে স্থায়ী করার কথা বলে? আপনি নিজে যে চরম ঘৃণার শিকার তাকেই আবার মাথায় তুলে নাচছেন? “আমি চেয়েছি এই আইডিতে এভাবেই নিজেকে পরিচিত করাতে, তাই দুই বার দাস লিখেছি। আপনি যদি আপনার নাম Prithwiraj Modak না লিখে Prithwiraj Modon লিখতেন, তাহলে আপনাকে সবাই মদন নামেই চিনতো এবং আপনি হতেন মদন, তাই এটা নিয়ে এত মাথা ঘামানোর কী আছে ?এবার আসি পদবী চাপিয়ে দেওয়ার প্রসঙ্গে-শুধু আমার ‘দাস’ পদবী ই নয়, গীতা পৃথিবীর কারো উপর কোনো পদবীই চাপিয়ে দেয় নি, প্রচলিত সামাজিক ব্যবস্থাটাকে জাস্ট প্রকাশ করেছে বা তুলে ধরেছে মাত্র। আমি বৈষ্ণব ঘরের সন্তান, আমার পরিবারের সবাই ‘মহন্ত’ পদবী লিখলেও আমি লিখি দাস, যে দাস পদবী মুচি এবং জেলেরাও লিখে; কারণ, আমি সমাজের দৃষ্টিতে নীচু স্তরকে নিজে ধারণ করে উপরে উঠাতে চাই, তাই আমি মনে করি সকল মানুষ সমান- অবশ্য যদি তারা মানুষ হয় এবং ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মতোই আমিও মনে করি- জন্মসূত্রে কেউ আমার কাছে প্রিয় বা অপ্রিয় নয়, কেউ যদি আমার কাছে প্রিয় বা অপ্রিয় হয় সেটা হয় বা হবে তার কর্মগুণে। এই পদবীর ব্যাপারটা আমি আমার নিজের ইচ্ছায় করেছি, গীতা বা আমার পরিবার আমাকে করতে বাধ্য করে নি ।আপনার সবচেয়ে মারাত্মক অভিযোগ হলো, “গীতা পৃথিবীর ঘৃণ্যতম বর্ণ ব্যবস্থাকে স্থায়ী করার কথা বলে।” আমি আপনাকে এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করছি, বর্ণ ব্যবস্থা পৃথিবীর কোন সমাজে, কখন ছিলো না ? বর্ণ ব্যবস্থা রয়েছে পৃথিবীর সর্বত্র, এমন কি রয়েছে আপনার পরিবারের মধ্যেও । বর্ণ মানে হচ্ছে শ্রেণী বিভাজন। এই শ্রেণী বিভাজন ছাড়া কোনো সমাজ কখনো চলতে পেরেছে বা চলতে পারবে ?আপনি এবং আপনার স্ত্রী দুইজন দুই বর্ণের মানুষ। এখানে আমি গোত্র বা কাস্ট এর কথা বলছি না। এসব সাধারণ কথা আরো পরে বলবো, তার আগে কিছু উচ্চস্তরের কথা বলে নিই। আগেই উল্লেখ করেছি, বর্ণ মানে হচ্ছে শ্রেণী বিভাজন। এই বিভাজনে আপনার স্ত্রী নারী এবং আপনি পুরুষ। আপনি যখন একজন নারীকে বিয়ে করেছেন তখনই কিন্তু আপনি শ্রেনী বিভাজনকে স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছেন, গীতা কি আপনাকে এটা করতে বাধ্য করেছে ? শ্রেনী বিভাজনকে না মানলে সমকামিদের মতো আপনাকে অন্য একজন পুরুষকে বিয়ে করতে হতো, তাহলে আপনার বাবা হওয়ার বা আপনার বংশ রক্ষার কী হতো ?যখন বিয়ে করেছেন, তখন নিশ্চয় খুঁজেছেন একটি ফর্সা, সুন্দরী মেয়ে; এটা কি বর্ণ প্রথাকে স্বীকার করা নয় ? আপনি তো সুস্থ, সবল, পঙ্গু নয় এবং সন্তান জন্মদানে সক্ষম যেকোনো মেয়ে, সে দেখতে যেমনই হোক, তার গায়ের রং যেমনই হোক, তাকে বিয়ে করতে পারতেন, কিন্তু করেন নি কেনো ? গীতা কি আপনাকে এটা করতে বাধ্য করেছিলো, না আপনার স্বাভাবিক প্রবৃত্তি আপনাকে এটা করতে বাধ্য করেছে ? নিজের ছেলের বিয়ে দেওয়ার সময়ও আপনি আবার সেই একই ঘটনা ঘটিয়ে ফর্সা, সুন্দরী মেয়ে খুঁজবেন। এই যে স্বাভাবিক প্রবৃত্তি, এটা আপনার মধ্যে কে সৃষ্টি করেছে, আপনি নিজে, না প্রকৃতি নামের ঈশ্বর ? খেয়াল রাখবেন, আমি কিন্তু আগেই বলেছি, গীতা কারো উপর কিছু চাপিয়ে দেয় নি, সমাজের স্বাভাবিক বাস্তব অবস্থাকে প্রকাশ করেছে বা তুলে ধরেছে মাত্র।আপনার যদি একাধিক ভাই থাকে, তাহলে কোনো অবস্থাতেই আপনারা সব ভাই সব দিক থেকে সমান নন। কেউ হয়তো জ্ঞানে বেশি, কেউ অর্থ বিত্তে, কেউ সামাজিক প্রভাবে মানে মাস্তানিতে বা কেউ মান সম্মানে। একই পিতা-মাতার সন্তান হয়ে, একই বাড়িতে বড় হয়ে আপনাদের মাঝে এই শ্রেণী বৈষম্য কেনো ? গীতা কি আপনাদেরকে এটা করতে বাধ্য করেছে ?আপনি যদি কোনো অফিসে চাকরি করেন, তাহলে নিশ্চয় আপনার অফিসে আপনার উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং অধঃস্তন কর্মচারী আছে, কারণ আপনি তো আর দেশের রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রী নন যে আপনার উপরে কথা বলার কোনো লোক থাকবে না। এটাও এক ধরণের বর্ণ বিভাজন বা শ্রেণী বৈষম্য, এই শ্রেনী বিভাজন মানতে কে আপনাকে বাধ্য করেছে ? গীতা ?বর্ণপ্রথা নিয়ে এতক্ষণ যা বললাম সেগুলো খুবই উচ্চস্তরের কথা বার্তা, এগুলো যদি আপনার মাথায় না ঢোকে, তাহলে আপনি আমাকে যে বিষয় ইঙ্গিত করে খুঁচিয়েছেন, এখন আপনাকে সেই লেভেলে নামিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।ইসলামে নাকি কোনো জাত-পাত নেই, বর্ণ প্রথা নেই, সেখানে মানুষ মাত্র সবাই সমান। এটাকে বেজ করেই তো আপনি গীতাকে কটাক্ষ করেছেন ? এখন তাহলে এই ইসলামের বর্ণ প্রথা নিয়েই কথা বলি-আগে না থাকলেও, বর্তমানে মুসলমানদের মধ্যে হিন্দু সমাজের বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে- ঘোষ, নাপিত, সুইপার বা মেথরের মতো শ্রেণী সৃষ্টি হয়েছে; এদের কথা না হয় বাদ ই দিলাম; কোনো কসাই, মাছ ব্যবাসায়ী বা সবজিওয়ালাদের ছেলে মেয়েদের সাথে, কোনো সম্ভ্রান্ত ঘরের মুসলমান, যাদের বড় ব্যবসা বা চাকরি আছে, তারা কি তাদের ছেলে মেয়েদের বিয়ে দিয়ে তাদের সাথে আত্মীয়তার সম্পর্ক তৈরি করবে ?আপনার কমনসেন্স কী বলে ?করবে না।কিন্তু কেনো ? সবাই তো মুসলমান ? সবাই একই আল্লা এবং তার রাসূল মুহম্মদকে মানে, একই মসজিদে একই কাতারে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ে, একই কোরান-হাদিস পড়ে, তাহলে তারা এই ধরণের সম্পর্ক তৈরি করবে না কেনো ?বলবেন, তাদের সামাজিক স্ট্যাটাস এক নয়।-সামাজিক স্ট্যাটাস এক নয় কেনো ? সবাই তো মুসলমান ? আর মুসলমানদের মধ্যে তো কোনো জাত-পাত, বর্ণ প্রথা নেই, তাহলে তাদের মধ্যে এই শ্রেণী বৈষম্য কেনো ? গীতা কি মুসলমানদেরকে বাধ্য করেছে এই বর্ণ বৈষম্য মানতে ?একই ধর্মের অন্তর্ভূক্ত হওয়ার পরেও যেহেতু তাদের সামাজিক স্ট্যাটাস এক হয় নি, এর মানে হচ্ছে তাদের কর্ম বা পেশা বা তাদের গুণ বৈশষ্ট্যি তাদেরকে আলাদা করেছে। মুসলমানরা তো গীতা মানে না, তাহলে তাদেরকে তাদের গুণ ও বৈশিষ্ট্য অনুসারে আলাদা করেছে কে ? নিশ্চয় সামাজিক বাস্তবতা ? সমাজের এই বাস্তবতাকেই গীতায় তুলে ধরে বলা হয়েছে,“চাতুর্বণ্যং ময়া সৃষ্টং গুণকর্মবিভাগশঃ" ( ৪/১৩)সুতরাং গীতা যে কারো উপর কিছু চাপিয়ে দেয় নি, সেটা চোখ-কান খোলা রেখে চারদিকে একটু তাকালেই উপলব্ধি করা যায়। অবশ্য নির্বোধদের কথা আলাদা, বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের এত সন্ত্রাস দেখেও যে নির্বোধরা, মুসলমান হয়ে বা না হয়েও মনে করে ইসলাম শান্তির ধর্ম, সেই নির্বোধদের কথা বলছি; কারণ, এই নির্বোধরা হয় জেগে ঘুমিয়ে আছে অথবা এদের ঘুমই ভাঙে নি। কোনো হিন্দুর যদি ঘুম না ভাঙে তাহলে সেটা অবশ্য হিন্দু সমাজেরই দোষ, এই দোষ আমাদের পিতু বা পূর্ব পুরুষের, যারা ঘুম ভাঙানোর মন্ত্র আমাদের কানে দেয় নি।এই প্রসঙ্গে জাত-পাত বা বর্ণ প্রথা নিয়ে হিন্দু ও মুসলমানদের আচরণের কিছু বিষয় তুলনা না করে পারছি না।হিন্দু ধর্মে জাতিভেদ আছে সত্য, কিন্তু তার জন্য এক হিন্দু কখনো অন্য হিন্দুর গলা কাটে না, এ নিয়ে কোনো মন্দিরে গন্ডগোলও হয় না; জাতিভেদ নিয়ে হিন্দুদের মধ্যে খুনাখুনির কথাও কখনো শোনা যায় নি। কিন্তু তথাকথিত সাম্যের ধর্ম ইসলাম, যাতে নাকি কোনো জাতিভেদ নাই, যাতে সব মানুষই নাকি সমান- সেই মহান ধর্ম ইসলাম, ভিন্নমতের কারণে শুধু- হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, ইহুদিদেরকেই হত্যা করে না, হত্যা করে সামান্য মতভেদের কারণে নিজের জাতি ভাই মুসলমানদেরকেই এবং এইসব হত্যাকাণ্ড মসজিদের মধ্যে ঢুকে করতেও তারা দ্বিধাবোধ করে না, প্রত্যেকটা মুসলিম দেশে রয়েছে যার অসংখ্য উদাহরণ। এ প্রসঙ্গে আরও বলে রাখি, ইসলামে সব মুসলমান যেটুকু সমান, তা শুধু আপন মতবাদে বিশ্বাসীদের মধ্যে মসজিদে নামাজ পড়ার সময়। শিয়া, সুন্নী, আহমেদিয়া, কাদিয়ানীসহ আরও যেসব জাতিভেদ ইসলামে আছে তাদের কিন্তু আবার মসজিদ আলাদা আলাদা। এক বিশ্বাসীদের মসজিদে অন্যরা নামাজ পড়তে যায় না বা পড়তে পারে না।যখন কোনো মুসলমান বা যে কেউ হিন্দুধর্মের জাতিভেদ বা বর্ণ প্রথা নিয়ে প্রশ্ন তুলবে, তখন তাকে শুধু এই কথাটা বলবেন যে, হিন্দু ধর্মে জাতিভেদ আছে, এটা সত্য, কারণ জাতিভেদ সমাজের বাস্তবতা, অন্য পেশার লোকজেনের কথা না হয় বাদ ই দিলাম, সব মানুষ সমান হলে পায়খানা পরিষ্কার করতো কে ? কিন্তু তাই বলে আপনাদের শিয়া-সুন্নীর মতো এক হিন্দু অন্য হিন্দুকে খুন করে না। দেখবেন, ধর্ম নিয়ে চুলকানি বন্ধ হয়ে গেছে, কানের কাছে ঘেউ ঘেউ আর নেই।সুতরাং গীতা নিয়ে কেনো আমার এত গর্ব এবং এত নাচানাচি তা নিশ্চয় মোদক সাহেব বুঝতে পেরেছেন এবং সেই সাথে আমি এটাও আশা করছি যে, মোদক সাহেবের সকল প্রশ্নের এবং হিন্দুধর্ম নিয়ে তার নাক সিটকানির জবাব আমি দিতে পেরেছি।জয় হিন্দ।জয় শ্রীরাম। জয় শ্রী কৃষ্ণ

প্রকৃতির মূল সত্তা


যে সমস্ত বর্তমান সাধক প্রকৃতি বিনা সাধনা করেন, তাঁরা বলেন— সমস্ত রসের ভিতর শৃঙ্গার রসই শ্রেষ্ঠ এবং প্রকৃতি হল শৃঙ্গের রসের আধার। শৃঙ্গার রসমাধুর্যের মধ্যে প্রকৃতির মূল সত্তাটি নিহিত রয়েছে এবং লীলাবিলাস বা আনন্দ প্রকৃতি আশ্রয় করেই হয়ে থাকে। সেইহেতু প্রকৃতি একাধারে জননী এবং রমণী। সুতরাং প্রকৃতিতে মাতৃভাব আরোপ করেও ঠিক ঐ একই ভাবে চরম অবস্থায় উপনীত হওয়া যায় এবং ব্যভিচারেরও কোন সম্ভাবনা থাকে না। অধিকারী বিশেষে সাধক মাতৃভাবে বিভোর হয়ে যৌনপ্রীতি বর্জিত হয়ে অতি সহজেই ঊর্ধ্বরেতা অবস্থা লাভ করতে পারেন। আর তা ঐ সাধকদের নিকট কোন সমস্যাই নয়। এই প্রসঙ্গে একটা পদ মনে পড়েছে, পদটি শোন— তাহলেই বুঝতে পারবে—‘জননী-মন্দিরে প্রবেশি দেখিনু/ কহিতে না মানি বাধা,/ শ্যামা হল শ্যাম চরণের শিব/ উঠিয়া হইল রাধা।’
সুতরাং এখন নিশ্চয় বুঝতে পারলে যে, বাৎসল্য রস এবং মধুর রস মুখ্যতঃ একই। বাৎসল্য রসে সামান্য যৌনপ্রীতি যোগ করলেই তা মধুর রসে পরিণত হয়। বাউলগণ বলেন ঊর্ধ্বরেতা হতে হলে যে প্রকৃতি-সঙ্গ করতে হবে এমন কোন কারণ নেই। প্রকৃতির সঙ্গ বিনা অনায়াসে ঐ অবস্থায় উপনীত হওয়া সম্ভব। কিন্তু সর্বাপেক্ষা বড় সমস্যা হল—রসের পূর্ণ কলসী হতে রস ঢেলে অর্থাৎ প্রকৃতির সঙ্গে যৌনপ্রীতি বর্জন করে কেমন করে সহজে ঐ রস আস্বাদন করা যায়! সাধকের জীবনে এটা অপেক্ষা বড় সমস্যা আর দ্বিতীয় নেই। উপমাস্বরূপ বলা যেতে পারে—মাকড়সার জালের উপর দিয়ে একটা প্রমত্ত ঘোড়াকে ছুটিয়ে নিয়ে চলার মতো ভয়ঙ্কর অবস্থা অথবা একটা সূতার উপর দিয়ে একটা মত্ত হস্তীকে নিয়ে যাবার মতো বিপদসঙ্কুল পরিস্থিতি। এই সমস্যা বা বিপদ যে কোন প্রকার সাধকের পক্ষেই হওয়া সম্ভব— তা তিনি প্রকৃতি নিয়েই সাধনা করুন বা প্রকৃতি বর্জিত হয়ে এককভাবেই সাধনা করুন। উভয়ের পক্ষেই এটা বিপদসঙ্কুল পরিস্থিতি।
সেইজন্য বাউলগণ বলেন—রসিক ভিন্ন এই শৃঙ্গার রসের অপরোক্ষ অনুভব করার সামর্থ্য অন্য কারও নেই।
সহজিয়া বৈষ্ণবগণ শৃঙ্গার রসকে আট প্রকারে বিভক্ত করে বিশ্লেষণ করেছেন, এগুলি হল যথাক্রমে— দর্শন, স্পর্শন, কেলি, কীর্তন, গুহ্যভাষণ, সংকল্প, আসক্তি (তীব্র মিলনাকাঙ্ক্ষা) ও মিলন (সম্ভোগ)।
যাঁরা প্রকৃতি নিয়ে সাধনা করেন, তাঁরা এগুলি স্থূলভাবে গ্রহণ করে থাকেন এবং যাঁরা প্রকৃতি বর্জিত হয়ে এককভাবে সাধনা করেন, তাঁরা এগুলি অন্তর ভাবের পরিচর্যার দ্বারা পরিপুষ্টি বিধান করে থাকেন। পরিপূর্ণ অবস্থায় অষ্টপ্রহর শৃঙ্গার রসমাধুর্যে নিমজ্জিত থাকেন। বৈষ্ণবগণ বলেন—শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য মহাপ্রভু রায় রামানন্দের সহিত এইরূপ ভাবেতে শৃঙ্গার রস অনুভব করতেন। এই শৃঙ্গার রস হল অনাবিল, অফুরন্ত এবং অনন্ত বৈচিত্র্যের উৎসে ভরা। আর এই রসের সন্ধান যিনি পেয়েছেন তিনি হলেন রসিক। তিনি তখন দেখতে পান— সমস্ত চরাচর—বিশ্বের ভিতরে এবং বাইরে ঐ শৃঙ্গার রসের মেলা বসেছে এবং সমগ্র বিশ্বপ্রকৃতিতে ঐ অফুরন্ত মাধুর্যরস অনাবিল উল্লাসে স্ফূর্তিপ্রাপ্ত হচ্ছে।
সুতরাং এখন নিশ্চয় বুঝতে পারলে যে, বাৎসল্য রস এবং মধুর রস মুখ্যতঃ একই। বাৎসল্য রসে সামান্য যৌনপ্রীতি যোগ করলেই তা মধুর রসে পরিণত হয়। বাউলগণ বলেন ঊর্ধ্বরেতা হতে হলে যে প্রকৃতি-সঙ্গ করতে হবে এমন কোন কারণ নেই। প্রকৃতির সঙ্গ বিনা অনায়াসে ঐ অবস্থায় উপনীত হওয়া সম্ভব। কিন্তু সর্বাপেক্ষা বড় সমস্যা হল—রসের পূর্ণ কলসী হতে রস ঢেলে অর্থাৎ প্রকৃতির সঙ্গে যৌনপ্রীতি বর্জন করে কেমন করে সহজে ঐ রস আস্বাদন করা যায়! সাধকের জীবনে এটা অপেক্ষা বড় সমস্যা আর দ্বিতীয় নেই। উপমাস্বরূপ বলা যেতে পারে—মাকড়সার জালের উপর দিয়ে একটা প্রমত্ত ঘোড়াকে ছুটিয়ে নিয়ে চলার মতো ভয়ঙ্কর অবস্থা অথবা একটা সূতার উপর দিয়ে একটা মত্ত হস্তীকে নিয়ে যাবার মতো বিপদসঙ্কুল পরিস্থিতি। এই সমস্যা বা বিপদ যে কোন প্রকার সাধকের পক্ষেই হওয়া সম্ভব— তা তিনি প্রকৃতি নিয়েই সাধনা করুন বা প্রকৃতি বর্জিত হয়ে এককভাবেই সাধনা করুন। উভয়ের পক্ষেই এটা বিপদসঙ্কুল পরিস্থিতি।
সেইজন্য বাউলগণ বলেন—রসিক ভিন্ন এই শৃঙ্গার রসের অপরোক্ষ অনুভব করার সামর্থ্য অন্য কারও নেই।
সহজিয়া বৈষ্ণবগণ শৃঙ্গার রসকে আট প্রকারে বিভক্ত করে বিশ্লেষণ করেছেন, এগুলি হল যথাক্রমে— দর্শন, স্পর্শন, কেলি, কীর্তন, গুহ্যভাষণ, সংকল্প, আসক্তি (তীব্র মিলনাকাঙ্ক্ষা) ও মিলন (সম্ভোগ)।
যাঁরা প্রকৃতি নিয়ে সাধনা করেন, তাঁরা এগুলি স্থূলভাবে গ্রহণ করে থাকেন এবং যাঁরা প্রকৃতি বর্জিত হয়ে এককভাবে সাধনা করেন, তাঁরা এগুলি অন্তর ভাবের পরিচর্যার দ্বারা পরিপুষ্টি বিধান করে থাকেন। পরিপূর্ণ অবস্থায় অষ্টপ্রহর শৃঙ্গার রসমাধুর্যে নিমজ্জিত থাকেন। বৈষ্ণবগণ বলেন—শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য মহাপ্রভু রায় রামানন্দের সহিত এইরূপ ভাবেতে শৃঙ্গার রস অনুভব করতেন। এই শৃঙ্গার রস হল অনাবিল, অফুরন্ত এবং অনন্ত বৈচিত্র্যের উৎসে ভরা। আর এই রসের সন্ধান যিনি পেয়েছেন তিনি হলেন রসিক। তিনি তখন দেখতে পান— সমস্ত চরাচর—বিশ্বের ভিতরে এবং বাইরে ঐ শৃঙ্গার রসের মেলা বসেছে এবং সমগ্র বিশ্বপ্রকৃতিতে ঐ অফুরন্ত মাধুর্যরস অনাবিল উল্লাসে স্ফূর্তিপ্রাপ্ত হচ্ছে।

Who is Allah বা কে আল্লা ?


হে নবী, ওদেরকে বলো, আমি কেবল মক্কার অধিষ্ঠাতা আল্লাহর আরাধনা করতে আদিষ্ট হয়েছি (কোরান, ২৭/৯১)। এখানে, মক্কার কোন আল্লার কথা বলা হয়েছে ? জানতে হলে পড়ুন এই পোস্টটি।
মুসলমানরা নিজেরা যেমন আল্লাকে ভয় পায়, তেমনি অন্যকেও সেই আল্লার ভয় দেখায়, যেন আল্লা একটা সাংঘাতিক ভয়ংকর জাতীয় কিছু, সাংঘাতিক ভয়ংকর তার ক্ষমতা!
বাংলাদেশের এক বিখ্যাত সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট আব্দুল গাফফার চোধুরী 2015 সালের জুলাই মাসে একবার বলে ফেললো, ‘হযরত মুহম্মদ ‘আল্লাহ’ নামটি নিয়েছিলেন প্যাগানদের এক দেবতার নাম থেকে’। এখানে উল্লেখ্য যে, ইসলামের আবির্ভাবের পূর্বে মক্কায় যারা মূর্তি পূজা করতো তাদেরকে বলা হয় প্যাগান।
গাফফারের ওই কথা শুনে মুসলমানদের মধ্যে সে কী প্রতিক্রিয়া ! না, এটা হতেই পারে না, নবী, মুশরিকদের দেবতার নাম থেকে আল্লার নাম নেবে কেনো ? এই পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ, তাই পৃথিবীতে মানুষ সৃষ্টির শুরু থেকেই আল্লা শব্দটি আছে, হযরত মুহম্মদ সাল্লায়লাহু ওয়া সাল্লাম প্যাগানদের দেবতার থেকে আল্লা নাম নিতে যাবে কেনো ? গাফফার নাস্তিক হয়ে গেছে, ও কাফের মুশরিক, ওকে হত্যা করা দরকার, ইত্যাদি ইত্যাদি।
যে সত্য কথা বলে বা সত্যকে ধারণ করে, মুসলমানদের কাছে সে ই- নাস্তিক, কাফের, মুরতাদ; কারণ, আগা গোড়া সম্পূর্ণ মিথ্যার উপর মুসলমানদের বসবাস, তাই সত্য কথা শুনলেই তাদের গা জ্বালা করে, এলার্জি বেড়ে যায়; কারণ, প্রকৃত সত্য ও মুসলমান দুটাই সম্পূর্ণ বিপরীতর্মী দুটো ব্যাপার।
আমার লেখায় আমি ইসলামের গোমর ফাঁস করি ব’লে মুসলমানদের সেটা সহ্য হয় না, কিন্তু তারা তার জবাব লেখার মাধ্যমে দিতে না পেরে পাইকারিভাবে রিপোর্ট করে, ফলে আমার কোনো আই.ডি ই আমি বেশিদিন চালাতে পারি না, মাঝে মাঝেই ব্লক হয়ে যাই। আমি জানি এই পোস্টের জন্যও হাজার হাজার রিপোর্ট পড়বে এবং আইডি ব্লক হবে, কিন্তু তবু সত্য প্রকাশ থেকে আমি বিরত হবো না; কারণ, ইসলামের রীতি ই তো, যে সত্য প্রকাশ করবে সেটা যদি মুহম্মদের বিরুদ্ধে যায় তাকে হত্যা করে তার মুখ বন্ধ করা, সেক্ষেত্রে এরা না হয় আমার শুধু আই.ডি ই ব্লক করতে পারছে, এটা এমন আর কী ক্ষতির বিষয় ?
কিন্তু এইসব হিজড়েপনা বাদ দিয়ে প্রকৃত পুরুষের মতো কাজ করার জন্য মুসলমানদের কাছে একটা চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি, এই পোস্টে আমি যেসব যুক্তি তুলে ধরবো, প্রত্যেকটার রেফারেন্সসহ পাল্টা যুক্তি তুলে ধরতে পারলে, আমি কথা দিচ্ছি ইসলামের বিরুদ্ধে লিখা আমি বন্ধ করে দেবো; শুধু তাই ই নয় ইসলামের বিরুদ্ধে আমার যত পোস্ট আছে সবগুলোর যুক্তি খণ্ডন যদি মুসলমানরা করতে পারে ইসলাম গ্রহন করে আমি মুসলমান হয়ে যাবো। কাপুরুষের মতো পেছন থেকে ছুরি মেরে আইডি ব্লক করার জন্য রিপোর্ট না করে পুরুষ হওয়ার জন্য তোদেরকে একটা সুযোগ দিলাম, চেষ্টা করে দ্যাখ।
অনেকেই জানেন যে, কাবা একসময় মন্দির ছিলো এবং তাতে ৩৬০টি দেব-দেবীর মূর্তি ছিলো, কুরাইশদের সাথে ১০ বছরের যুদ্ধবিরতি চুক্তি থাকা সত্ত্বেও, মাত্র ২ বছরের মাথায় সেই চুক্তি ভঙ্গ ক’রে, কুরাইশদেরকে কোনো পূর্ব সিগন্যাল না দিয়ে অর্থাৎ কুরাইশদের অপ্রস্তুত অবস্থায়, মুহম্মদ জনশক্তির জোরে প্রথমে রাতের বেলা মক্কা আক্রমন ক’রে কাবা দখল করে এবং পরদিন নিজের হাতে কাবার মধ্যে থাকা মূর্তিগুলো ভেঙ্গে ফেলে। এই ৩৬০টি দেব-দেবীর মধ্যে প্রধান দেবতা ছিলো মহাদেব শিব। এই মহাদেব শিব যে কত গুরুত্বপূর্ণ দেবতা ছিলো, তার প্রামন পাবেন নিচের এই ঘটনায়-
তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে ‘মাকতেব-এ-সুলতানিয়া’ নামের একটি গ্রন্থাগার আছে, যেখানে পশ্চিম এশিয়ার অনেক পুঁথি রাখা আছে। এরকম একটি পুঁথির নাম ‘সায়র-উল-ওকুল’, যার মধ্যে প্রাক ইসলামী যুগের আরবের অনেক কবিদের কবিতা আছে। সেই গ্রন্থে মুহম্মদের এক চাচা, ‘উমর-বিন-হাসনাম’ এর একটি কবিতা আছে; এই কবিতাটি একবার মক্কার নিরকটবর্তী ওকাজের মেলায় শ্রেষ্ঠ কবিতা বলে বিবেচিত হয়েছিলো। নিচে কবিতাটির প্রথম ৬ লাইন আরবিতে এবং পরে তার বাংলায় অনুবাদ দেখে নিন:
“ওয়া আহলোলাহা আজাহু আর্মিমান মহাদেব ও,
মানাজেল ইলামুদ্দিনে মিনজুম ওয়া সয়াত্তারু,
ওয়া সাহাবি কেয়ম ফিম কামিল হিন্দে ইয়োমান,
ওয়া ইয়াকুলুন লাতাহাজান ফৈন্নাক তারাজ্জারু,
মায়াসেয়ারে আখলাকান হাসনান কুল্লাহুম,
নাজমুল অজ্জাত্ সুম গবুল হিন্দ।"
এর অর্থ- যদি কেউ একবার শ্রদ্ধাভরে মহাদেব এর পূজা করে, তবে সে ন্যায় ও আধ্যাত্মিকতার চরম শিখরে পৌঁছতে পারে। হে প্রভু, তুমি আমার এই জীবন নিয়ে নাও, বদলে আমার এই প্রার্থনা পূরণ কর যে, আমি অন্তত পক্ষে একদিনের জন্যও হিন্দে (ভারতে) যেতে পারি এবং সেখানকার আধ্যাত্মিকতার পবিত্র পরিবেশে নিজেকে বিলিয়ে দিতে পারি। কারণ, হিন্দে তীর্থ করার ফলে মানুষ অনেক মহৎ কাজ করার পুন্য অর্জন করে এবং সেখানকার পুন্যাত্মা শিক্ষকের স্পর্শে জীবন ধন্য করতে পারে।”
আপনার অনেকেই জানেন, মহাদেব শিব এর মাথায় শোভা পায় চন্দ্র। এই চন্দ্রের আরেক বাংলা নাম ‘সোম’, এই সূত্রেই কোথাও কোথাও শিবের মন্দিরকে বলা হয় সোমনাথের মন্দির, যার মধ্যে একটি মন্দিরকে গজনীর সুলতান মাহমুদ ১৭ বার আক্রমন করে ধ্বংস করেছিলো। বাংলা সাত বারের নাম এসেছে আমাদের সৌরজগতের সাতটি গ্রহের নাম থেকে, এর মধ্যে ‘রবি’ হলো সূর্য আর ‘সোম’ মানে চন্দ্র, অন্য ৫টি নাম, ৫টি গ্রহের নামে। এই ৭ বারের নাম, মানব সভ্যতায় হিন্দু মুনি ঋষিদের অবদান; কারণ, এই বার প্রকরণ জ্যোতিষ শাস্ত্রের বিষয়, যে জ্যোতিষ শাস্ত্র বেদের একটি অংশ এবং যা পৃথিবীতে আছে প্রায় ৮/১০ হাজার বছর যাবৎ। সুতরাং সপ্তাহের ৭ বারের জন্য শুধু মুসলমানরা নয়, পৃথিবীর সকল জাতি হিন্দুদের কাছে ঋণী।
যা হোক, এই চন্দ্রের বাংলা প্রতিশব্দ যেমন সোম, তেমনি এর আরবি প্রতিশব্দ হলো ‘আল্লাত’। শিবের মাথায় চন্দ্র থাকে বা থাকতো বলে আরব এলাকায় এর আরেক নাম ছিলো চন্দ্রের দেবতা বা ‘চন্দ্রদেবতা’। চাঁদ, পৃথিবীর প্রাচীন সমাজে ছিলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ; কারণ, তখনও সৌর ক্যালেণ্ডার চালু না হওয়ায় দিন ও মাস গণনায় এবং বিকল্প আলোর ব্যবস্থা না থাকায় রাতের আঁধার কাটাতে চন্দ্রের ভূমিকা ছিলো অপরিসীম এবং একারণেই মুহম্মদ তার ইসলামে চাঁদের ভূমিকাকে গুরুত্বপূর্ণ করে তোলে; এজন্যই এই আধুনিক যুগেও যেখানে চাঁদের আর কোনো দরকারই নেই, সেখানেও প্রাচীন ধ্যান ধারণার অধিকারী মুসলমানরা চাঁদ না দেখে রোযা ও ঈদ পালন করতেই পারে না। কেননা, মুহম্মদ যেহেতু বলে গেছে যে, "তোমরা চাঁদ দেখে রোযা ও ঈদ পালন করো"। এইসব মুহম্মদীয় আদেশ নির্দেশের প্রকৃত কারণ না বোঝার কারণেই, এই আধুনিক যুগে বাস করেও মুসলমানরা কোনোদিনই আধুনিক হতে পারে নি আর পারবেও না। কারণ, মুসলমানরা এইটুকুও বোঝে না যে, তখন দিনের হিসেব রাখার জন্য মুহম্মদ চাঁদ দেখে রোযা ও ঈদ পালন করার কথা বলে গেছে; কেননা, তখন দিন ও মাসের হিসেব রাখার জন্য অন্য কোনো ব্যবস্থা ছিলো না। কিন্তু গরু খেয়ে খেয়ে গরুতে পরিণত হওয়ায় এসব যুক্তি তাদের মাথায় ঢোকে না, আর যাদের মাথায় এসব ঢোকে, আর যখন তারা এসব বলতে যায়, তখনই তারা মুসলমানদের চোখে হয়ে যায়- নাস্তিক, কাফের, মুরতাদ; মুসলমানদের ভবিষ্যত কী ?
অবশ্য মুসলমানদের ভবিষ্যতের দরকারই বা কী ? জিহাদের নামে হিন্দু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ আর নাস্তিকদের কুপিয়ে মারতে পারলেই তো তাদের ৭২ হুর সমৃদ্ধ বেহেশত নিশ্চিত, সাথে গেলমান নামের কিছু হিজড়াও ফ্রি; পৃথিবীতে মুসলমানদের উদ্দেশ্যই তো এটাই- জিহাদে গিয়ে মরা অথবা মারা। কোনোটাতেই তাদের কোনো লস নেই। বেঁচে থাকলে গনিমতের নামে লুটের মাল আর তার মধ্যে অমুসলিম নারী, আর মরে গেলে তো বেহেশতের ৭২ ন্যাংটা হুর।
যা হোক, শিবের মাথায় চন্দ্র থাকার কারণেই আরবদের মধ্যে, কাবায় রক্ষিত চন্দ্রদেবতা, তাদের কাছে প্রধান দেবতা হয়ে উঠেছিলো এবং চন্দ্রের আরবি নাম ‘আল্লাত’ থেকে বিবর্তিত হতে হতে আস্তে আস্তে ঐ দেবতার নাম হয়ে উঠেছিলো আল্লা বা আল্লাহ, যে আল্লাহকে মুহম্মদ তার আল্লাহ হিসেবে স্বীকার করে নিয়েছিলো কিন্তু তার মূর্তিকে করেছিলো অস্বীকার এবং প্রচার করেছিলো- আল্লা নিরাকার, তার কোনো মূর্তি নেই; যে কথাটি গাফফার চৌধুরী বলে লতিফ সিদ্দিকীর মতো এক প্রকার প্রায় ফেঁসে যেতে লেগেছিলো। যারা জানেন না তাদের জন্য বলছি, বাংলাদেশের প্রাক্তন মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী আমেরিকায় গিয়ে হজ বিরোধী মন্তব্য করায় এখন জেলে, জেল থেকে সে কোনোদিন মুক্তি পাবে কি না সন্দেহ, আর মুক্তি পেলেও অন্ধ মুসলমানরা তাকে বাংলাদেশে বাঁচতে দেবে কি না সন্দেহ। বাঁচতে হলে লতিফকে তসলিমা নাসরিনের মতো বিদেশে গিয়েই বাস করতে হবে, ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বলায় যে তসলিমা নাসরিন ১৯৯৩ সাল থেকে বিদেশে।
এখন কেউ কেউ প্রশ্ন করতে পারেন, কাবার মধ্যে রক্ষিত প্রধান দেবতার নামই যে ছিলো আল্লা, তার প্রমান কী ? যাদের মনে এই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, তাদেরকে দুটো প্রশ্ন করছি, আপনার কি মনে হয় তথ্য প্রমান যুক্তি যোগাড় না করেই এটা নিয়ে আমি লিখতে বসে গেছি ? আর রেফারেন্স ছাড়া এরকম একটি চ্যালেঞ্জিং বিষয়ের অবতারণা করে, এটাকে একটা রাবিশ পোস্ট বানানোর জন্য কি সময় নষ্ট করে লিখছি ? অপেক্ষা করুন, সব প্রমান পাবেন; কারণ, আমি যা বলি তা প্রমান করার ক্ষমতা আমার আছে।
প্রাপ্ত তথ্য মতে জানা যাচ্ছে, কাবায় রক্ষিত ঐ চন্দ্রদেবতা বা আল্লার তিনজন মেয়ে ছিলো এবং যাদের নাম ছিলো লাত, উজ্জা ও মানাত। এদের মূর্তি শুধু কাবার মধ্যেই ছিলো না, আরবের বিভিন্ন এলাকাতেও ছিলো এবং সেসব জায়গাতেও তারা পূজিত হতো। নাখালায় উজ্জার মূর্তি ছিলো, মুহম্মদের নির্দেশ খালেদ নামের এক মুসলমান সেই মূর্তি ধ্বংস করে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে- লাত, উজ্জা ও মানাত ব’লে যাদের কথা বলা হচ্ছে এবং এদের পিতা হিসেবে যাকে বলা হচ্ছে, সে ই যে মুহম্মদের আল্লা বা তার নাম থেকেই যে মুহম্মদ আল্লা নামটি নিয়েছে, তার প্রমান কী ?
কোরানের ৫৩ নং সূরা, ‘আন নাজম’ এর ১৯, ২০ নং আয়াতে বলা হয়েছে,
“এখন বলো, তোমরা কি এই ‘লাত’ ও ‘উজ্জা’ এবং তৃতীয় আর একটি দেবী ‘মানাত’ এর প্রকৃত ব্যাপার সম্পর্কে কখনো কিছু চিন্তা-বিবেচনা করেছো ?”
সম্ভবত আল্লার নাম ভাঙিয়ে কোরানের বাণী হিসেবে মুহম্মদ এই প্রশ্নটি তার বিরোধী মক্কাবাসীকে করেছিলো। তখন মক্কাবাসী সম্ভবত এই উত্তর দেয় যে, কেনো, এরা তো আল্লার কন্যা। এর পর মুহম্মদ আবার আল্লার নাম ভাঙ্গিয়ে কোরানের বাণী হিসেবে বলে,
“তোমাদের জন্য কি পুত্রসন্তান! আর কন্যাগুলো শুধু আল্লার জন্য ?” (কোরান, ৫৩/২১)
এখানে কিন্তু স্পষ্টভাবে এই প্রশ্ন করা হচ্ছে যে, “কন্যাগুলো শুধু আল্লার জন্য?”
তাহলে এখানে কোন কন্যার কথা বলা হয়েছে এবং কোন আল্লার কন্যার কথা বলা হয়েছে ?
প্রকৃত ব্যাপার হচ্ছে, মুহম্মদ যখন মক্কাবাসীকে এই প্রশ্ন করে যে, লাত, উজ্জা ও মানাত, এরা আসলে কারা ? মক্কাবাসী উত্তর দেয়, এরা আল্লার কন্যা। কিন্তু মানুষের তো সাধারণভাবে কন্যা ও পুত্র উভয়ই থাকে, তাই মুহম্মদ উল্টো প্রশ্ন করে, তোমাদের জন্য পুত্র সন্তান আর আল্লার জন্য শুধু কন্যা ? এই কথোপকথনের বিষয়টিই ৫৩নং সূরার ১৯, ২০ ও ২১ নং আয়াতের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
আরেকটি ঐতিহাসিক তথ্য- মুহম্মদের যে বংশে জন্ম, বংশ পরম্পরায় সেই কুরাইশ বংশের কাছে ছিলো কাবার রক্ষণাবেক্ষণ ও কাবা উপলক্ষে মক্কায় আগত লোকজনের দেখা শোনা ও তাদের সেবাযত্নের ভার। মক্কায় একটি কূপ ছিলো, যাকে বলে জমজম কূপ, এই কূপের জলের জন্যই মক্কায় প্রথম জনবসতি গড়ে উঠে। ইসলামের ইতিহাস তো দখলের ইতিহাস। ৬১০ খ্রিষ্টাব্দের আগে পৃথিবীতে ইসলামের নাম বা দুর্গন্ধ না থাকলেও, মুহম্মদ, তওরাত ও বাইবেলের সৃষ্টিতত্ত্বকে দখল করে কোরানের মধ্যে ঢুকিয়ে বললো আদম ও হাওয়া ই পৃথিবীর প্রথম মানব মানবী, যাদেরকে সৃষ্টি করেছিলো আল্লা। অথচ আদম ও হাওয়া পূর্ববর্তী সংস্করণ এ্যাডাম ও ইভের কাহিনীর যখন জন্ম, তখন কোরানের আল্লার জন্মই হয় নি। খ্রিষ্টানরা তাদের সৃষ্টিকর্তাকে বলতো গড আর ইহুদিরা বলতো জেহোবা বা জিহোবা। তারপর, মুসারও পূর্ববর্তী নবী, যে মুসা ইহুদি ধর্মের জনক, সেই মুসার আগের নবী ইব্রাহিমকে দখল করার জন্য তার সম্পর্কে মুহম্মদ বলে,
“ইব্রাহিম না ছিলো ইহুদি, আর না ছিলো খ্রিষ্টান, বরং সে তো ছিলো একনিষ্ঠ মুসলিম।” (কোরান, ৩/৬৭)
অথচ মুসার আমলে ইসলাম এবং আল্লার নাম-গন্ধও ছিলো না।
ইসলামকে বানাতে মুহম্মদের যা কিছু দরকার, এইভাবে তার সব কিছু ইহুদি ও খ্রিষ্টানদের থেকে মুহম্মদ দখল করেছে, আর যখনই সেই সব বিষয় নিয়ে ইহুদি খ্রিষ্টানরা কোনো প্রশ্ন তুলেছে, তখনই মুহম্মদ তাদের বিরুদ্ধেই পাল্টা অভিযোগ করেছে, তারা তাদের ধর্মগ্রন্থ বিকৃত করে ফেলেছে। বোঝেন ঠেলা। জোর যার মুল্লুক তার, এই কথাটি সম্ভবত সবচেয়ে বেশি প্রযোজ্য ইসলাম ও মুসলমানদের বেলায়।
যা হোক এই দখল প্রক্রিয়ায় ইসলাম দাবী করে যে, ইব্রাহিম যখন তার স্ত্রী হাজেরা ও শিশুপুত্র ইসমাইলকে মক্কার মরুভূমিতে নির্বাসন দিয়েছিলো, তখন একদিন পানির জন্য হাজেরা, সাফা ও মারওয়া পর্বতের মধ্যবর্তী জায়গায় সাতবার দৌড়াদৌড়ি করেছিলো, যার জন্য মুসলমানরা এখনও হজ করতে গেলে সাফা ও মারওয়ার মধ্যে দৌড়ায়; হাজেরার সেই দৌড়াদৌড়ির সময় জিবরাইল ফেরেশতা সেখানে উপস্থিত হয় এবং নিজের পায়ের খুর দিয়ে মাটি খুড়লে সেখানে জম জমকূপের সৃষ্টি হয়। জিবরাইলের পায়ের খুর আছে, এটা আবার কী অদ্ভূত জন্তু কে জানে, ইসলামের তো একটা অদ্ভূত জন্তু আছে, বোরাক, যার দেহ ঘোড়ার কিন্তু মুখ নারীর।
যা হোক, ইসলাম মানুষকে তার কর্মের স্বীকৃতি দিতে ভীষণভাবে কৃপণ; কারণ, সকল মুসলমান এটা বিশ্বাস করে যে, মানুষের কোনো ক্ষমতা নেই, যা ক্ষমতা তা শুধু আল্লার, আর মানুষ যা করে তা আল্লা ই করায়। তো সব কিছু যখন আল্লা ই করায়, তখন ইসলামের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে বা কিছু লিখলে তোদের পাছায় এত লাগে কেনো, হ্যাঁ ?
যা হোক, এটা নিশ্চিত যে, কেউ না কেউ কোনো এক সময় মক্কার ঐ জমজম কূপ খনন করেছিলো, কারণ, মক্কা ছিলো তৎকালীন বাণিজ্য নগরী সিরিয়ায় যাওয়ার পথে, সিরিয়ার বিপরীত দিকের অন্যান্য এলাকার মানুষের বিশ্রামস্থল। একারণে মক্কায় সকল ধর্মের লোকদের জন্য কাবা মন্দির স্থাপিত হয়, যাতে লোকজন বিশ্রাম করার সাথে সাথে ধর্মকর্মও করতে পারে। এজন্যই কাবার মধ্যে শুধু হিন্দুদের মূর্তিই ছিলো না, ছিলো সেই সময়ের মানুষের বিশ্বাসের সকল দেব-দেবী, এমন কি যীশুর মা, মেরি এবং যীশু খ্রিষ্টের মূর্তিও ছিলো। এভাবে বিভিন্ন মানুষের বিশ্বাসের দেব-দেবীকে স্থান দিতে দিতে সংখ্যাটা গিয়ে দাঁড়ায় ৩৬০টিতে, বিষয়টা কখনো কল্পনা করেছেন ৩৬০ টা মানে কতগুলো মূর্তি ? বর্তমানেও পৃথিবীতে এমন কোনো মন্দির বা সংগ্রহশালা সম্ভবত নেই, যেখানে এতগুলো মূর্তি আছে। প্রকৃতপক্ষে কাবা ছিলো এক বিশাল সংগ্রহশালা এবং এই সংগ্রহের মধ্যে মহাদেব শিব ছিলো প্রধান দেবতা, যার আরবি নাম হয়ে উঠেছিলো আল্লাহ।
মক্কা যেহেতু মরূভূমি এবং সেখানে যেহেতু কোনো চাষবাস হতো না বা এখনো হয় না, তাই ইসলাম পূর্ববর্তী মক্কার লোকজনের আয়ের প্রধান উৎস ছিলো এই পথচলতি মানুষের সেবার বিনিময়েপ প্রাপ্ত অর্থ। এ কারণে মক্কার লোকজন সব ধর্মের মানুষকে শ্রদ্ধা করতো এবং তাদের কাবায় ঐ সকল মানুষের বিশ্বাসের মূর্তি স্থাপন করতো বা করতে দিতো, যাতে তারা সন্তুষ্ট হয়ে তাদেরকে বেশি বেশি অর্থ দেয়, ঠিক যেমন পর্যটন ব্যবসার উপর নির্ভরশীল দেশ বা জাতি এখনও করে; এই কাবার ইতিহাস এবং কাবাকেও, মুহম্মদ, আদম ইব্রাহিম ইসমাইলের নামে নানা কাহিনী বানিয়ে দখল করে।
যা হোক, মক্কার সেই জমজম কূপ, মুহম্মদের জন্মের কিছু আগে ভূ প্রাকৃতিক কারণে হারিয়ে যায়। জল না থাকায় মক্কায় আগের মতো লোক জন আর আসছিলো না বা থাকছিলো না। তখন কাবার দেখাশোনা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে ছিলো মুহম্মদের দাদা আব্দুল মোতালেব এর উপর। বলা যায়, সে ই ছিলো কাবার সেবায়েত বা পুরোহিত। তো জলের অভাবে লোকজন আগের মতো আর না আসায় মক্কার লোকজন পরে ভয়াবহ অভাবের মধ্যে। তাই জমজম কূপ পুনরুদ্ধারের জন্য মোতালেব বেপরোয়া হয়ে সিদ্ধান্ত নেয় যে, তার প্রচেষ্টা যদি সফল হয়, তাহলে সে তার ১০ পুত্রের মধ্যে থেকে একজনকে কাবার প্রধান দেবতা আল্লার উদ্দেশ্যে বলি দেবে। এরকম বিশ্বাস ও ঘটনা প্রাচীন সমাজের জন্য অসম্ভব কিছু নয়।
মানুষ বেপরোয়া বা ডেসপারেট হলে কি না করতে পারে, মোতালেবও তার প্রচেষ্টায় সফল হয়, পুনরায় খুঁজে বের করে জম জম কূপ বা এমনও হতে পারে, সে আরেকটি কূপ ই খনন করে, এ আর অবিশ্বাস্য বা অসম্ভব কী, মাটি খুঁড়লে পানি তো পাওয়া যাবেই, এই ৫০/১০০ বছর আগেও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে হাজার হাজার কূপ ছিলো। কিন্তু এইসব বাস্তব ইতিহাস দিয়ে তো আর ইসলাম বানালে হবে না, ইসলামের জন্য দরকার ছিলো কোনো এক অদৃশ্য আল্লার সাথে সবকিছুর এক অদৃশ্য কানেকশন। এজন্য মুহম্মদ- কাবা, জমজম সবকিছুকে দখল করে নিজের মতো তাদের ইতিহাস বানিয়ে তার সেই কল্পিত আল্লার সাথে জুড়ে দিয়েছে।
যা হোক, জমজম কূপ যখন ফিরে পাওয়া গেলো, তখন কোন পুত্রকে বলি দেওয়া হবে তার জন্য একটা লটারী করা হলো এবং সেই লটারীতে নাম উঠলো মুহম্মদের বাপ আব্দুল্লাহর। তখন হয়তো তার নাম ছিলো শুধু আব্দুল বা আব্দুল এর সাথে আরো কোনো শব্দ থাকলেও থাকতে পারে; কিন্তু ইসলামের ইতিহাস থেকে সেটা সম্ভবত হারিয়ে গেছে, তাই তা আর জানার কোনো উপায় নেই।
তো মোতালেব যেহেতু প্রতিজ্ঞা করেছে যে, জমজম কূপের বিনিময়ে সে তার এক পুত্রকে কোরাবানী দেবে, সেই কোরবানীতে নাম উঠেছে এক পুত্রের, তাকে কি এখন সত্য সত্যই হত্যা করা হবে ? এরকম প্রশ্ন উঠতে থাকে মক্কাবাসীদের মধ্যে। শেষ পর্যন্ত মক্কাবাসীদের অনুরোধে এই সিদ্ধান্ত হয় যে মোতালেব এর কোনো পুত্রকে কোরবানী দেওয়া বা হত্যা করা হবে না, তার বিনিময়ে ১০০ উট কোরবানী দেওয়া হবে এবং যেহেতু মোতালেব এর পুত্র আব্দুল এর নাম কোরবানীর জন্য সিলেক্ট হয়েছে, তাই আব্দুলকে কাবার প্রধান দেবতা আল্লাহর উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা হবে, অর্থাৎ সে হবে আল্লাহর দাস, এজন্য আব্দুল+ আল্লাহ এই দুই শব্দ মিলে তার নাম হয় আব্দুল্লাহ, যার পুত্রের নাম মুহম্মদ এবং যে মুহম্মদের জন্মের পূর্বেই মারা যায়।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, মুসলমানরা এইসব ইতিহাস না জানলেও, তারা তো এটা স্বীকার করবে যে, আব্দুল্লাহ মানে আল্লাহর দাস, তাহলে এই আল্লা কোন আল্লা, যার দাস বানানো হচ্ছে কোনো একজন মানুষকে ?
এই আল্লা, সেই আল্লা ই যে কাবার মধ্যে স্থাপিত প্রধান দেবতা, যার কথা বলেছে গাফফার চৌধুরী, কোরানে যার সম্পর্কে এই প্রশ্ন তোলা হয়েছে, তোমাদের জন্য পুত্র আর আল্লার জন্য শুধু কন্যা ? এই আয়াতের মাধ্যমে তো বলেই দেওয়া ই হচ্ছে যে, কে আল্লা।
তো এখন শেষ কথা হচ্ছে যে, মুসলমানদের যে আল্লা হিন্দুদের একজন দেবতা, সেই দেবতা্র ভয় আবার মুসলমানরা দেখায় হিন্দুদেরকেই। আমি এই বিষয়গুলো জানি বলে, যখন কেউ আমাকে আল্লার নাম দিয়ে ইহকাল বা পরকালের ভয় দেখায়, সেটা বাস্তবেই হোক আর নেট দুনিয়ার কমেন্টেই হোক, শুনলে বা পড়লেই হাসি পায়। ভাবি, কার কাছে কিসের গল্প শোনাচ্ছে ? যে পাথরের মূর্তির নাম ছিলো আল্লাহ, সেই মূর্তিকে ভেঙ্গে ফেলে আল্লাকে অদৃশ্য কোনো সত্ত্বা বানিয়ে দিলেই যে সে সর্বজ্ঞানী ও সর্বশক্তিমান হয়ে যাবে, এটা মূর্খরা বিশ্বাস করতে পারে, আমি করি না।
জয় হিন্দ।

নিজেদের রক্ষায় স্ত্রী লোকদের করণী কি???


.
#উত্তর- স্ত্রী লোকদের রক্ষার কথা সনাতন ধর্মে খুব
গুরুত্বের সাথে বলা আছে।
সনাতনীদের অনেক বীর যোদ্ধাকে দেখা যায়
নারীদের রক্ষায় জীবন উৎসর্গ করতে! সনাতন
ধর্মে এটাও বলা আছে যে-
.
"স্ত্রীলোককে রক্ষণরূপ ধর্ম সকল বর্ণের পক্ষে
শ্রষ্ঠ ধর্ম"
#মনুঃ ৯।৬.
.
এখন প্রশ্ন হল তাই বলে কি নারীদের নিজেদের
রক্ষায় কোন দায়িত্ব নেই??? আছে, অবশ্যই
আছে! তাইতো মনুরাজ বলেছেন-
.
"যে স্ত্রী দুঃশীলতাহেতু নিজে আত্মরক্ষায়
যত্নবতী না হয়, তাকে আপ্তপুরুষেরা গৃহমধ্যে
অবরুদ্ধ করে রাখলেও সে অরক্ষিতা হয়। কিন্তু যে
নারী সর্বদা আপনা আপনি আত্মরক্ষায় তৎপর,
কেউ তাদের রক্ষা না করলেও তারা সুরক্ষিতা হয়ে
থাকে।"
#মনুসংহিতা ৯।১২.
.
এখন প্রশ্ন হল কোন প্রকৃতির নারীরা নিজেদের
রক্ষায় যত্নবতী নয় বা কি কারণে নারীরা দূষিত
হয়?
এর উত্তরে মনু ৬টি কারণ বলেছেন, যথা-
.
"মদ্যপান, দুষ্ট লোকের সাথে মেলামেশা করা,
স্বামীর সাথে বিচ্ছেদ, যেখানে সেখানে ঘুরে
বেড়ানো, অসময়ে ঘুমানো এবং পরের বাড়ীতে বাস
করা এই ছয়টি বিষয় নারীদের দূষিত করে।"
#মনুঃ৯।১৩.
.
এখন প্রশ্ন হল তারা যেন
দূষিত হতে না পারে তার জন্য কি করতে হবে?
তাদেরকে কি শারীরিক ভাবে বল প্রয়োগ তথা
মারধর করতে হবে? অথবা মানসিক নির্যাতন
করতে হবে? না, এই সব কিছুই নয়। আসুন এই
ব্যাপারে মনুরাজ কি বলেছেন তা দেখি-
.
"স্ত্রীলোককে কেউ বলপূর্বক বা মারধর করে
রক্ষা করতে পারে না। কিন্তু বক্ষমাণ বা উপযুক্ত
উপায়গুলো অবলম্বন করলে তাদের রক্ষা করা
যায়।"
#মনুসংহিতা ৯।১০.
অর্থাৎ উপযুক্ত কৌশল গ্রহণ করতে হবে।
.
এখন প্রশ্ন হল সেই উপায়গুলো কি? এই
ব্যাপারে মহর্ষি মনু বলেছেন-
.
"অর্থ সংগ্রহ বা আয় ও ব্যায়ের দ্বারা, গৃহ ও
গৃহস্থালী শুদ্ধ রাখা, ধর্ম-কর্ম সমূহের আয়োজন
করা, অন্নপাক করা এবং শষ্যাসনাদির
তত্ত্বাবধান করা- এই সব কাজে স্ত্রীলোকদের
নিযুক্ত করে অন্যমনষ্ক রাখবে।"
#মনুঃ ৯।১১.
অর্থাৎ মনু মহারাজ বলছেন তাদেরকে কাজে
নিয়োজিত রাখতে হবে। কেননা আমরা সকলেই জানি
অলস মস্তিষ্ক শয়তানের কারখানা!
.
আর এতেও যদি কাজ না হয় অর্থাৎ নারী নিজেই
তার অজ্ঞানতা হেতু উদ্যোগী হয়ে অরক্ষিতা
থাকতে চায় তার জন্য মনু মহারাজ বলেছেন যে-
.
"যে স্ত্রী দুঃশীলতাহেতু নিজে আত্মরক্ষায়
যত্নবতী না হয়, তাকে আপ্তপুরুষেরা গৃহমধ্যে
অবরুদ্ধ করে রাখলেও সে অরক্ষিতা হয়। কিন্তু যে
নারী সর্বদা আপনা আপনি আত্মরক্ষায় তৎপর,
কেউ তাদের রক্ষা না করলেও তারা সুরক্ষিতা হয়ে
থাকে।"
#মনুসংহিতা ৯।১২.
.
এই শ্লোকের মর্ম বাণী আমার মত করেই বলি-
.
১. যেতে চাইলে তাকে আর ধরে রাখা যায় না!
২. পিপীলিকার পাখা উঠে মরিবার তরে!
৩. দুধ বেশি
উতরালে আগুনে পড়ে।
.
যে ধর্মে স্ত্রীলোকদের #দেবী বলে আখ্যা দেয়
সেই ধর্মের নারীদের এমন করাটাই তো অনুচিত। তাই
প্রত্যেকেরই উচিত নিজেকে রক্ষায় যত্নবতী হওয়া।
.

শ্রীমদ্ভগবদগীতা


ওঁ তৎ সৎ
ওঁ তৎ সৎ
শ্রীমদ্ভগবদগীতা
ত্রয়োদশ অধ্যায়ঃ ক্ষেএ - ক্ষেত্রজ্ঞ - বিভাগযোগ
-------------------------------------------
শ্রীভগবান্ উবাচ
ঋষিভির্বহুধা গীতং ছন্দোভির্বিবিধৈঃ পৃথক্।
ব্রক্ষসূত্রপদৈশ্চৈব হেতুমদ্ভির্বিনিশ্চিতৈঃ।।৫।।
অনুবাদঃ শ্রীভগবান্ বলিলেন- এই ক্ষেএ ও ক্ষেত্রজ্ঞের জ্ঞান ঋষিগণ কর্তৃক বিবিধ বেদবাক্যের দ্বারা পৃথক পৃথকভাবে বর্ণিত হয়েছে। বেদান্তসূত্রে তা বিশেষভাবে যুক্তিযুক্ত সিদ্ধান্ত সহকারে বর্ণিত হয়েছে।
তাৎপর্যঃ এই তত্ত্বজ্ঞান বিশ্লেষণ করার ব্যাপারে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষক। তবুও চিরাচরিত প্রথা অনুসারে, পণ্ডিত ও আর্চাযেরা সর্বদাই পূর্বতন আর্চাযদের নজির দিয়ে থাকেন। আত্মা ও পরমাত্মা সর্ম্পকে অত্যন্ত বির্তকমূলক দ্বৈতবাদ ও অদ্বৈতবাদ ব্যাখা করতে গিয়ে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য প্রমাণ্য গ্রন্থ বেদান্ত শাস্ত্রের উল্লেখ করেছেন। প্রথমে তিনি বিভিন্ন ঋষিদের মতের উল্লেখ করেছেন। মমস্ত ঋষিদের মধ্যে বেদান্ত- সূত্রের প্রণেতা ব্যাসদেব হচ্ছেন মহর্ষি এবং বেদান্ত- সূত্রে দ্বৈতবাদকে পূর্ণরূপে ব্যাখা করা হয়েছে। ব্যাসদেবের পিতা পরাশর মুনিও ছিলেন একজন মহর্ষি এবং তাঁর প্রণীত ধর্মশাস্ত্রে তিনি লিখেছেন, অহং ত্বং চ তথানো ----- " আমরা, আপনি,আমি এবং অন্য সমস্ত জীব- জড় দেহে থাকলেও জড়াতীত। এখন আমরা আমাদের বিভিন্ন কর্ম অনুসারে জড় জগতের তিনটি গুণের মধ্যে পতিত হয়েছি। তার ফলে, কেউ উচ্চ স্তরে আছে,আবার কেউ নিম্ন স্তরে। অজ্ঞানতার ফলে উচ্চ ও নিম্ন প্রকৃতি বিদ্যমান হয় এবং অগণিত জীবের মধ্যে তা প্রকাশিত হচ্ছে। কিন্তু পরমাত্মা, যিনি অচ্যুত, তিনি কখনই তিন গুণের দ্বারা কুলষিত হন না এবং তিনি হচ্ছেন গুণাতীত"। তেমনই, আদি বেদে, বিশেষ করে কঠ উপনিষদে আত্মা, পরমাত্মা ও দেহের পার্থক্য নিরূপণ করা হয়েছে। বহু মুনি-ঋষি এর ব্যাখা করেছেন এবং পরাশর মুনিকে তাঁদের মধ্যে প্রধান বলে গণ্য করা হয়ে থাকে।
ছন্দোভিঃ শব্দটির দ্বারা বিভিন্ন বৈদিক শাস্ত্রাদিকে উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন, যজুর্বেদের একটি শাখা তৈত্তিরীয় উপনিষদে প্রকৃতি,জীবসত্তা ও পরম পুরুষোত্তম ভগবানের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।
আগেই বলা হয়েছে , ক্ষেত্র বলতে বোঝায় কর্মের ক্ষেএ এবং দুই ধরনের ক্ষেএজ্ঞ আছেন -- স্বতন্ত্র জীবাত্মা ও পরম আত্মা। তৈত্তিরীয় উপনিষদে (২/৯) বলা হয়েছে -- ব্রক্ষ পুচ্ছং প্রতিষ্ঠা। পরমেশ্বর ভগবানের ' অন্নময়' নামে একটি শক্তির প্রকাশ হয়,যার ফলে জীব তার জীবন ধারণের জন্য অন্নের উপর নির্ভর করে। এটি পরমেশ্বর সম্বন্ধে একটি জড় উপলব্ধি। তারপর ' প্রাণময়' অর্থাৎ অন্নের মধ্যে পরমেশ্বরকে উপলব্ধি করার পর প্রাণের লক্ষণের মধ্যে তাঁকে উপলব্ধি করা। প্রাণময় লক্ষণের অতীত ' জ্ঞানময়' উপলব্ধি চিন্তা,অনুভূতি ও ইচ্ছা পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। তারপর ব্রক্ষ উপলব্ধিকে বলা হয় ' বিজ্ঞানময়' যার ফলে জীবের মন ও প্রাণের লক্ষণগুলি থেকে জীবকে স্বতন্ত্র বলে উপলব্ধি করা যায়। তার পরে পরম স্তর হচ্ছে ' আনন্দময়' অর্থাৎ সর্ব আনন্দময় প্রকৃতির উপলব্ধি।
ত্রয়োদশ অধ্যায়ঃ ক্ষেএ - ক্ষেত্রজ্ঞ - বিভাগযোগ
-------------------------------------------
শ্রীভগবান্ উবাচ
ঋষিভির্বহুধা গীতং ছন্দোভির্বিবিধৈঃ পৃথক্।
ব্রক্ষসূত্রপদৈশ্চৈব হেতুমদ্ভির্বিনিশ্চিতৈঃ।।৫।।
অনুবাদঃ শ্রীভগবান্ বলিলেন- এই ক্ষেএ ও ক্ষেত্রজ্ঞের জ্ঞান ঋষিগণ কর্তৃক বিবিধ বেদবাক্যের দ্বারা পৃথক পৃথকভাবে বর্ণিত হয়েছে। বেদান্তসূত্রে তা বিশেষভাবে যুক্তিযুক্ত সিদ্ধান্ত সহকারে বর্ণিত হয়েছে।
তাৎপর্যঃ এই তত্ত্বজ্ঞান বিশ্লেষণ করার ব্যাপারে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষক। তবুও চিরাচরিত প্রথা অনুসারে, পণ্ডিত ও আর্চাযেরা সর্বদাই পূর্বতন আর্চাযদের নজির দিয়ে থাকেন। আত্মা ও পরমাত্মা সর্ম্পকে অত্যন্ত বির্তকমূলক দ্বৈতবাদ ও অদ্বৈতবাদ ব্যাখা করতে গিয়ে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য প্রমাণ্য গ্রন্থ বেদান্ত শাস্ত্রের উল্লেখ করেছেন। প্রথমে তিনি বিভিন্ন ঋষিদের মতের উল্লেখ করেছেন। মমস্ত ঋষিদের মধ্যে বেদান্ত- সূত্রের প্রণেতা ব্যাসদেব হচ্ছেন মহর্ষি এবং বেদান্ত- সূত্রে দ্বৈতবাদকে পূর্ণরূপে ব্যাখা করা হয়েছে। ব্যাসদেবের পিতা পরাশর মুনিও ছিলেন একজন মহর্ষি এবং তাঁর প্রণীত ধর্মশাস্ত্রে তিনি লিখেছেন, অহং ত্বং চ তথানো ----- " আমরা, আপনি,আমি এবং অন্য সমস্ত জীব- জড় দেহে থাকলেও জড়াতীত। এখন আমরা আমাদের বিভিন্ন কর্ম অনুসারে জড় জগতের তিনটি গুণের মধ্যে পতিত হয়েছি। তার ফলে, কেউ উচ্চ স্তরে আছে,আবার কেউ নিম্ন স্তরে। অজ্ঞানতার ফলে উচ্চ ও নিম্ন প্রকৃতি বিদ্যমান হয় এবং অগণিত জীবের মধ্যে তা প্রকাশিত হচ্ছে। কিন্তু পরমাত্মা, যিনি অচ্যুত, তিনি কখনই তিন গুণের দ্বারা কুলষিত হন না এবং তিনি হচ্ছেন গুণাতীত"। তেমনই, আদি বেদে, বিশেষ করে কঠ উপনিষদে আত্মা, পরমাত্মা ও দেহের পার্থক্য নিরূপণ করা হয়েছে। বহু মুনি-ঋষি এর ব্যাখা করেছেন এবং পরাশর মুনিকে তাঁদের মধ্যে প্রধান বলে গণ্য করা হয়ে থাকে।
ছন্দোভিঃ শব্দটির দ্বারা বিভিন্ন বৈদিক শাস্ত্রাদিকে উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন, যজুর্বেদের একটি শাখা তৈত্তিরীয় উপনিষদে প্রকৃতি,জীবসত্তা ও পরম পুরুষোত্তম ভগবানের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।
আগেই বলা হয়েছে , ক্ষেত্র বলতে বোঝায় কর্মের ক্ষেএ এবং দুই ধরনের ক্ষেএজ্ঞ আছেন -- স্বতন্ত্র জীবাত্মা ও পরম আত্মা। তৈত্তিরীয় উপনিষদে (২/৯) বলা হয়েছে -- ব্রক্ষ পুচ্ছং প্রতিষ্ঠা। পরমেশ্বর ভগবানের ' অন্নময়' নামে একটি শক্তির প্রকাশ হয়,যার ফলে জীব তার জীবন ধারণের জন্য অন্নের উপর নির্ভর করে। এটি পরমেশ্বর সম্বন্ধে একটি জড় উপলব্ধি। তারপর ' প্রাণময়' অর্থাৎ অন্নের মধ্যে পরমেশ্বরকে উপলব্ধি করার পর প্রাণের লক্ষণের মধ্যে তাঁকে উপলব্ধি করা। প্রাণময় লক্ষণের অতীত ' জ্ঞানময়' উপলব্ধি চিন্তা,অনুভূতি ও ইচ্ছা পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। তারপর ব্রক্ষ উপলব্ধিকে বলা হয় ' বিজ্ঞানময়' যার ফলে জীবের মন ও প্রাণের লক্ষণগুলি থেকে জীবকে স্বতন্ত্র বলে উপলব্ধি করা যায়। তার পরে পরম স্তর হচ্ছে ' আনন্দময়' অর্থাৎ সর্ব আনন্দময় প্রকৃতির উপলব্ধি।

রামায়ণ ও মহাভারত


মহাকাব্যের ঐতিহাসিকতা নিয়ে বিতর্ক কোনো নতুন বিষয় নয়। ইউরোপে মহাকবি হোমারের লেখা ইলিয়াড, ওডেসি নিয়ে যেমন ইতিহাসবিদ-প্রত্নতাত্ত্বিকরা যুগে যুগে মাথা ঘামিয়েছেন, তেমনই আমাদের দেশের রামায়ণ ও মহাভারত নিয়েও কম গবেষণা হয়নি।
বহুকাল ধরে চর্চা বহমান রয়েছে মহাভারতের ঐতিহাসিকতা নিয়ে। সত্যিই কি ঘটেছিল কুকক্ষেত্র যুদ্ধ? কৃষ্ণ নামে সত্যিই কি কেউ রাজত্ব করতেন দ্বারকায়? কৌরব আর পাণ্ডবদের কথা কি পুরোটাই বানানো? নাকি সত্যই এই দুই কুল পরস্পরের সঙ্গে সংঘাতে ধ্বংস করে ফেলেছিল নিজেদের? এই সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে বিশেষজ্ঞরা কখনও প্রবেশ করেছেন ইতিহাসের আঙিনায়, কখনও প্রমাণ খুঁজেছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানে, কখনও বা ভাষাতত্ত্বের সড়ক বয়ে অগ্রসর হয়েছেন। কী বলছে এই সব প্রমাণ? নিচে তার মধ্যে থেকে কয়েকটি উল্লিখিত হলো।
• মহাভারতকার বেদব্যাস স্বয়ং তাঁর রচনাকে ইতিহাস বলেছেন। এখানে ইতিহাস-এর অর্থ- এইসব ঘটেছিল। যদি মাহাভারত কপোলকল্পনা হতো, বেদব্যাস একে মহাকাব্য বা কথা বলে উল্লেখ করতেন।
• মহাভারতের আদিপর্বের ৬২তম অধ্যায়ে ভারত-রাজবংশ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য উল্লিখিত হয়েছে। মনু থেকে ৫০ পুরুষ সেখানে উল্লিখিত। যদি মহাভারত কল্প-কথাই হতো, তা হলে এত বিস্তরিত উল্লেখের কী প্রয়োজন ছিল?
• প্রত্নত্ত্বের সাক্ষ্যও মহাভারতের ঐতিহাসিকতাকে সমর্থন করছে। গুজরাটের সমুদ্রতলে অনুসন্ধান চালিয়ে প্রাচীন দ্বারকা নগরীর ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কৃত হয়েছে। পৌরাণিক বর্ণনার সঙ্গে সেই ধ্বংসাবশেষের মিল যথেষ্ট।
• মৌষল পর্বে দ্বারকা নগরীর সমুদ্রে ডুবে যাওয়ার বর্ণনা রয়েছে। প্রাচীন দ্বারকা আজ সমুদ্রে নিমজ্জিত।
• এমন ৩৫টিরও বেশি ভারতীয় নগরীর কথা মহাভারতে রয়েছে, যাদের অস্তিত্ব ঐতিহাসিকভাবে প্রমাণিত। প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধানে আরও বেশ কিছু জনপদের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে।
• মহাভারতের উদ্যোগ পর্বে লিখিত রয়েছে, কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ শুরুর অব্যবহিত পূর্বে কৃষ্ণ হস্তিনাপুরে গমন করেন কার্তিক মাসের সেই তিথিতে, যে দিন চন্দ্র রোহিনী নক্ষত্রে অবস্থান করছিলেন। পথে কৃষ্ণ বৃকস্থল নামে একটি জায়গায় বিশ্রাম নিতে থামেন। চন্দ্র তখন ভরণী নক্ষত্রে বিরাজ করছেন। যেদিন দুর্যোধনের পতন ঘটে, সেদিন চন্দ্র পূষা নক্ষত্রে অবস্থান করছেন। জ্যোতির্বদরা মহাভারতের আনুমানিক কালের সঙ্গে এই সব উল্লিখিত তিথির সাযুজ্য পেয়েছেন।
• পুরাণগুলিতে মৌর্য্য, গুপ্ত এবং ইন্দো-গ্রিক রাজবংশগুলির স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে। এই রাজবংশগুলির ঐতিহাসিকতা মেনে নেওয়া হয় এই কারণেই যে, পুরাণের পাশাপাশি সমকালীন গ্রিক ঐতিহাসিকরা এই সমর্থন করেছেন। গ্রিক আগমনের আগেকার রাজবংশগুলি সেই যুক্তিতে কি 'অনৈতিহাসিক'? এই রাজবংশগুলিই মহাভারতে উল্লিখিত হয়েছে বার বার।

গিট্টু শিল্পী সমাচার



মন্দিরে মন্দিরে গিয়ে মন্দিরের সবুজ গাছ গুলিতে ইচ্ছে পূরণের নিমিত্তে যারা গিঁট মারেন তাঁদেরকে গিট্টু শিল্পী বলে। এটা একটা অদ্ভুত শিল্প কর্ম। বাবুই পাখি যেমন করে তাঁদের নীর তৈরি করে ঠিক সেই ভাবেই গিট্টু শিল্পীরা গিঁটের শিল্প রচনা করেন শিল্প গুণ নিয়ে। বাবুই পাখি যুক্তি যুক্ত ভাবে নিজের গৃহ নির্মাণে নিমিত্তে শিল্প রচনা করেন আর গিট্টু শিল্পীরা পরিশ্রম হীন, শ্রম হীন, চেষ্টা হীন ইচ্ছে পূরণের নিমিত্তে গিঁট মারেন এবং শিল্প রচনা করেন।
সোজা বিষয় নয় প্রাই ৫ কিলোমিটার পাহাড়ী পথ বেয়ে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিরূপাক্ষ ও চন্দ্রনাথ ধামে উঠে গিট্টু শিল্প রচনা করেন তাঁরা। এতো পরিশ্রম করে এতো উপরে উঠে গিঁট না মেরে যে ইচ্ছে পূরণের জন্যে এই গিঁট মানের সেই ইচ্ছে পূর্ণ করার জন্যে নিজেকে আত্ম নিয়োগ করলে সেই ইচ্ছ পূর্ণ হয়ে যেতেও পারে।
এদের বেশির ভাগই গীতা পাঠ করেন নিয়মিত। অথচ গীতায় বার বার উল্লেখ করা হয়েছে কর্ম করলেই ফল লাভ হয়, যেমন কর্ম করবে তেমন ফল লাভ করবে, কর্ম করো ফলের চিন্তা করবেনা - ঈশ্বর নিজেই ফল প্রদান করবেন। তাহলে গিট্টুর আবেদনে গীতা ও শ্রী কৃষ্ণের বানীও অসার হয়ে যায়। গিট্টুর আবেদনের এমনই শক্তি যেখানে শ্রীকৃষ্ণের বানিও ব্যর্থ হয় !! ------------ একেই বলে অজ্ঞানতা। জ্ঞানের কথা হৃদয়ঙ্গম করতে হয়, হৃদয়ঙ্গম না করে মুখুস্ত করলে সেটা কোন কাজে আসেনা।
কি কি দিয়ে গিট্টু মারা হয়? কাল বেশ ভাল ভাবে খেয়াল করলাম। রজ্জু, ঘাস, মৃত পশুর চামড়া, ইলাস্ট্রিক, গাছের পাতা, পলিথিন, ধুপ কাঠির প্যাকেট, গামছা ছেরা, রুমাল, ছেরা কানি, জামার ফিতা, তার, গাছের বালক থেকে শুরু করে গিঁট মারা যায় এমন সব পদার্থ দিয়েই এই গিঁট মারা হয়। একটা গাছে এতো জাতের পদার্থ দিয়ে গিঁট মারাকে শিল্প বলবো না তো কি বলবো?
মন্দিরে গাছ গুলকে মেরে ফেলছে এই ভাবে। আদিনাথের বিশাল পারিজাত বৃক্ষের কথা জানিয়েছিলাম আগেই। শুধু আদিনাথ কেন? সব মন্দিরেই দেখা যায়। কাল সীতাকুণ্ড থেকে তুলে আনলাম আরো কিছু তথ্য। চট্টগ্রামের নবগ্রহ বাড়িতে গাছ নেই বলে মন্দিরের গেইটেই গিঁট বাঁধে ভক্তরা।
উনারা অনবদ্য। অর্জনের জন্যে যোগ্যতা, বুদ্ধি, শ্রমের দরকার আছে সেটা উনারা মনে করেননা। উনারা গিঁট মেরেই নিউজিল্যান্ডের সুবিধা, নিরাপত্তা, শান্তি ও নিশ্চয়তা কামনা করেন। ভুল ধরিয়ে দিলে উনারা বলেন শ্রমেরও দরকার আছে গিট্টুরও দরকার আছে।
চূড়ান্ত মন্তব্য হলো এই যে, গিট্টু শিল্পীরা আজীবন দুর্বল থেকে যাবে।
কালও সাধ্যমত গিটু খুলে দেবার চেষ্টা করলাম। কিন্তু সমুদ্রের জল থেকে এক পুকুর জল তুলে নিলে তো সমুদ্র খালি হবেনা। তাই চেষ্টা করে কিছু অবমুক্ত কলরেও সেটা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল ছিলো। যারা গিট্টু শিল্পে বিশ্বাস করেন না তাঁরা এই গিট্টু অবমুক্ত করতে ভূমিকা রাখবেন।

কাল বৈদিক দেবী সরস্বতী দেবীর পূজা।

কোনো হিন্দুকে যদি জিজ্ঞেস করা হয় যে, দেবী সরস্বতী কে ? বলবে, জ্ঞানের দেবী, বিদ্যার দেবী। আর ? আর কোনো তথ্য তার কাছে নেই। এরপর হয়তো দু’চার জন হিন্দু বলবে যে, সরস্বতী ব্রহ্মার স্ত্রী; কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ব্রহ্মার স্ত্রী বলে কিছু নেই বা কিছু হয় না। তাহলে-
দেবী সরস্বতী কে ?
পরমব্রহ্ম বা ঈশ্বরের সৃষ্টিকারী রূপের নাম ব্রহ্মা আর ব্রহ্মার নারী শক্তির নাম সরস্বতী; এর মানে হলো সরস্বতীই ব্রহ্মা, আর ব্রহ্মা মানেই পরমব্রহ্ম বা ঈশ্বর, অর্থাৎ সরস্বতীই পরমেশ্বর বা ঈশ্বর। অনেকেই সরস্বতীকে ছোটো দেবী হিসেবে মনে করে, প্রকৃতপক্ষে দেব-দেবীদের মধ্যে ছোট বা বড় বলে কিছু নেই, সব দেব-দেবী ই সমান; সুতরাং সরস্বতী, ঈশ্বরেরই একটা রূপের নাম এবং স্ত্রীলিঙ্গে স্বয়ং ঈশ্বরীরূপে সরস্বতীই পরমব্রহ্ম বা ঈশ্বর।
সরস্বতীর গায়ের রং সাদা কেনো ?
দেবী সরস্বতীর শুভ্রমূর্তি নিষ্কলুষ চরিত্রের প্রতীক; এটা এই শিক্ষা দেয় যে, প্রত্যেক ছেলে মেয়েকে হতে হবে নিষ্কলুষ নির্মল চরিত্রের অধিকারী; যে ছেলে মেয়ে বাল্যকাল থেকে নিজেকে নিষ্কলুষ রাখার চেষ্টা করবে, সে যে সারাজীবন তার সকল কর্ম ও চিন্তায় নিজেকে নিষ্কলুষ রাখতে পারবে, তাতে তো আর কোনো সন্দেহ নেই।
সরস্বতীর সাথে রাজহাঁস থাকে কেনো ?
রাজহাসেঁর মধ্যে এমন ক্ষমতা আছে যে, এক পাত্রে থাকা জল মিশ্রিত দুধের থেকে সে শুধুমাত্র দুধ শুষে নিতে পারে।সরস্বতী যেহেতু শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট পূজা, সেই প্রেক্ষাপটে এটা বলা যেতে পারে যে, রাজহাসেঁর এই তথ্য শিক্ষার্থীদেরকে এই শিক্ষা দেয় যে, সমাজে ভালো মন্দ সব কিছুই থাকবে, তার মধ্যে থেকে তোমাদেরকে শুধু ভালোটুকু শুষে নিতে হবে। অধিকাংশ হিন্দু ছেলে-মেয়েরা যে মেধাবী এবং চরিত্রবান বা চরিত্রবতী, সরস্বতী পূজা এবং তার রাজহাঁসজনিত এই শিক্ষাই তার কারণ।
সরস্বতীর হাতে বীণা থাকে কেনো ?
এর কারণ হচ্ছে-হিন্দু ধর্ম হলো নাচ, গান সমৃদ্ধ শিল্পকলার ধর্ম; যা সামাজিক বাস্তবতাকে সম্পূর্ণভাবে সাপোর্ট করে। কারণ, প্রত্যেক ছেলে মেয়েই কোনো না কোনো প্রতিভা নিয়ে জন্মগ্রহন করে; প্রকৃতির ধর্ম হিসেবে হিন্দুধর্ম এই সামাজিক বাস্তবতাকে স্বীকার করে, এই কারণেই দেবী সরস্বতীর হাতের বীণা হচ্ছে সেই শিল্পকলার প্রতীক। আর এটা সুধীজন স্বীকৃত যে, যারা- নাচ, গান, কবিতা লেখা বা নাট্যচর্চার মতো শিল্পকলার সাথে জড়িত, তারা সাধারণত কখনো মিথ্যাও বলে না; চুরি, ডাকাতি, খুন, ধর্ষণ তো দূরের ব্যাপার। সাধারণভাবে সকল হিন্দুই যে সৎ প্রকৃতির এবং প্রত্যেক হিন্দু ছেলে মেয়েই যে শিল্পকলার কিছু না কিছু জানে, এটাই তার অন্যতম কারণ ।
সরস্বতীর হাতে পুস্তক থাকে কেনাো ?
পুস্তক হলো জ্ঞানের ভাণ্ডার বা জ্ঞানের বাস হলো পুস্তকে। যেহেতু সরস্বতী হলো জ্ঞানের দেবী, তাই তার হাতে থাকে পুস্তক বা পূজায় পাঠ্যপুস্তক দিতে হয়। পৃথিবীতে হিন্দুরাই একমাত্র জাতি যারা জ্ঞানার্জনের জন্য পূজা প্রার্থনা করে। একারণেই হিন্দুরা একটি জ্ঞান পিপাসু এবং জ্ঞান সমৃদ্ধ জাতি। এখনও যেকোনো স্কুলে যে কয়জন হিন্দু ছাত্র ছাত্রী পাওয়া যাবে, দেখা যাবে তাদের মধ্যে ৯০% ই জিনিয়াস।
সরস্বতীর দুই হাত না চার হাত ?
বর্তমানে দেবী সরস্বতীকে দুই হাত বিশিষ্ট দেখা গেলেও দেবী সরস্বতীর মূল মূর্তি আসলে চার হাত বিশিষ্ট, এরকম ছবি আপনারা অনেকে জায়গায় দেখলেও দেখে থাকতে পারেন, সরস্বতীর মূল থিমের সাথে এই চার হাত ই মানানসই; কারণ হলো- পড়াশুনার পাশাপাশি কেউ যদি নাচ গান বা অন্য যে কোনো শিল্পকলায় এক্সপার্ট হতে চায়, তাকে দুই হাতের শক্তি ও ব্যস্ততা নিয়ে কাজ করলে চলবে না, তাকে চার হাতের শক্তি ও ব্যস্ততা নিয়ে কাজ করত হবে।
সরস্বতীর আসন, রাজহাঁস, না পদ্মফুল ?
অনেক কাঠামোতে দেখা যায়, সরস্বতী দেবী হাঁসের উপর বসে আছে আবার কোনো কাঠামোয় দেখা যায় পদ্মফুলের উপর; পদ্মফুলের উপ সরস্বতীর আসন ই সঠিক আসন। এর কারণ- পূর্ণ প্রস্ফুটিত পদ্মফুল হলো সফল ও সমৃদ্ধ জীবনের প্রতীক; এই কারণেই লেখা হয়েছে- “ফুলের মতো গড়বো মোরা মোদের এই জীবন” এই ধরণের কবিতা। এককথায় ফুলের বিকাশের সাথে মানুষের জীবনের বিকাশকে তুলনা করা হয়েছে। পূর্ণ বিকশিত একটি পদ্মফুলের উপর সরস্বতীর বসে থাকার মানে হলো- সরস্বতীর আদর্শকে লালন করে নিজের জীবনকে বিকশিত করতে পারলে সেই জীবনও ফুলের মতোই পবিত্র, সুন্দর, বিকশিত ও সমৃদ্ধ হবে।
সরস্বতী কেনো মাতৃ মূর্তি ?
স্বয়ং ঈশ্বর হলেও সরস্বতী নারী মূর্তি অর্থাৎ মাতৃমূর্তি, এর কারণ হলো- পিতার চেয়ে মায়ের কাছে কোনো কথা বলা সহজ বা কোনো কিছু চাওয়া সহজ। সরস্বতীর পূজারীরা যেহেতু সাধারণভাবে শিশু বা বালক-বালিকা অর্থাৎ শিক্ষার্থী, তাই তারা যাতে সহজে নিজের মনের কথা নিজের মনের আকুতি, দেবী মায়ের কাছে জানাতে পারে, এজন্যই সরস্বতীকে কল্পনা করা হয়েছে মাতৃরূপে।
শেষে একটা ছোট্ট তথ্য- বৌদ্ধ মতবাদ যেহেতু সনাতন ধর্ম থেকে উদ্ভূত, সেই কারণেই হোক বা হিন্দুদের জ্ঞান অর্জনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখেই হোক, বৌদ্ধরাও সরস্বতী পূজা করে।
বি.দ্র – সরস্বতী পূজা সম্পর্কে পুস্তিকা ছাপানো যায়, এরকম একটি বিস্তারিত লেখা এর আগে পোস্ট করেছি। কিন্তু সবার পক্ষে পুস্তিকা ছাপানো সম্ভব হবে না বিবেচনা করে সরস্বতী পূজা সম্পর্কে সাধারণ তথ্যগুলো দিয়ে এই লেখাটি সংক্ষপ্তিভাবে এমনভাবে লিখেছি, যাতে A4 সাইজ কাগজের উভয় পৃষ্ঠায় এটি ফটোকপি করা যায় বা এই সাইজের কাগজে প্রিন্ট করে হ্যান্ডবিল বানিয়ে বিলি করা যায়। আমার বন্ধুদের মধ্যে যাদের সামর্থ্য আছে, আমি আশা করবো প্রতি জনে ৫০ কপি করে ফটোকপি করে বা কয়েকজন মিলে একসাথে ১ হাজার কপি প্রেস থেকে ছাপিয়ে আপনার এলাকার প্রতিটি হিন্দু বাড়িতে বা জনে জনে বিলি করুন, যাতে একজন হিন্দুও সরস্বতী পূজার সাধারণ তথ্যগুলো জানা থেকে বঞ্চিত না হয়।

কাল বৈদিক দেবী সরস্বতী দেবীর পূজা।

কাল বৈদিক দেবী সরস্বতী দেবীর পূজা। যদিও প্রচলিত পূজা পদ্ধতিটা পৌরাণিক নিয়ম অনুসারে এবং বৌদ্ধ তন্ত্র অনুসরণ করে হয় তথাপি এই পূজাটা সনাতন সম্প্রদায়ের জন্যে অনেক গুরুত্ব বহন করে। শিশুদের হাতে খড়ি দেওয়া হয় এই পূজায়। বিদ্যা হীন, জ্ঞান হীন মানুষ রক্ত মাংসের পিণ্ড মাত্র।
এই পূজা এখন বারোয়ারী পূজা ও সার্বজনীন পূজায় রূপ নিয়েছে। দশ থেকে পনের বছর আগেও এই পূজা বিদ্যাপিট কেন্দ্রিক ও গৃহ কেন্দ্রিক ছিলো। সার্বজনীন হলে যা হয় তাই হচ্ছে এখন।
এই পূজার আয়োজনে যেখানে যেখানে DJ নামক বিষাক্ততার সম্পৃক্ততা রয়েছে সেই সব উদ্যোগ গুলিকে আমরা সমালোচিত করতে চাই। দেবী প্রতিমাকে অপ্রাসঙ্গিক ভাবে, অশ্লীল রূপে উপস্থাপন করলে সেই উদ্যোগ গুলিকে আমরা সমালোচনা করতে চাই।
কাল অন্য কোন পোষ্ট এপ্রুভ করা হবেনা। শুধু মাত্র সরস্বতী পূজা কেন্দ্রিক পোষ্ট গুলিকেই এপ্রুভ করা হবে।
সকলের প্রতি বিশেষ অনুরোধ। ভালো পূজা হচ্ছে, শুভ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, দেবী প্রতিমাকে মাতৃ রূপে গঠন করা হয়েছে এমন পূজা গুলিকে ব্যপক ভাবে প্রচার করে তাঁদেরকে প্রশংসিত করতে হবে। এই অশুভ সময়ে শুভ উদ্যোগ গুলিকে বেশি করে প্রচারে আনতে হবে।
দেবীর বসন শ্বেত বর্না বা নীলাভ বর্ণের হয়। কালও বৈষ্ণব, শাক্ত রং এর আদলে অনেক প্রতিমা দেখেছি। পূজা যদি করতে হয় তবে নিয়ম মেনেই করতে হবে। আর একটা মূর্তি বানিয় উৎসব করতে চাইলে সেটা ভিন্ন কথা। আমরা পূজার সমালোচনা করতে চাই।

মেয়েদের কখন বিবাহ করা উচিত?

#প্রশ্নঃ মেয়েদের কখন বিবাহ করা উচিত? এই সম্পর্কে পবিত্র বেদে কি কিছু বলা আছে?
.
#উত্তরঃ প্রত্যেক মেয়ের উচিত ব্রহ্মচর্য্য পালন করে বিবাহ করা। কারণ পবিত্র বেদ নির্দেশ দিচ্ছে......
.
ব্রহ্মচর্য্যেণ কন্যা যুবানাং বিন্দতে পতিম।
অনডবান ব্রহ্মচর্য্যেণাশ্বো ঘাসং জিগীর্ষতি।। (অথর্ববেদ-১১/৫/১৮)
.
সরলার্থঃ ব্রহ্মচর্য্য পালন করিবার পর কুমারী কন্যা যুবা পতিকে লাভ করিবে। বলবান ও বুদ্ধিমান ব্যক্তিই ভোগ্য পদার্থকে সম্যক লাভ করিতে পারে।

শ্রীশ্রীনাম সংকীর্তন

হরি হরয়ে নমঃ কৃষ্ণ যাদবায় নমঃ।
যাদবায় মাধবায় কেশবায় নমঃ।।
গোপাল গোবিন্দ রাম শ্রীমধুসূদন।
গিরিধারী গোপীনাথ মদন মোহন।।
শ্রীচৈতন্য নিত্যানন্দ শ্রীঅদ্বৈত সীতা।
হরি, গুরু, বৈষ্ণব, ভাগবত ,গীতা।।
শ্রীরূপ, শ্রীসনাতন, ভট্ট রঘুনাথ।
শ্রীজীব, গোপালভট্ট, দাস-রঘুনাথ।।
এই ছয় গোসাঞির করি চরন বন্দন।
যাহা হৈতে বিঘ্ননাশ অভীষ্ট পূরণ।।
এই ছয় গোসাঞি যাঁর, মুঞি তাঁর দাস।
তঁ সবার পদরেনু-মোর পঞ্চগ্রাস।।
তাঁদের চরণ সেবি ভক্তসনে বাস।
জনমে জনমে হয় এই অভিলাস।।
এই ছয় গোসাঞি যবে ব্রজে কৈলাবাস।
রাধাকৃষ্ণ নিত্যলীলা করিলা প্রকাশ।।
আনন্দে বল হরি, ভজ বৃন্দাবন।
শ্রীগুরু, বৈষ্ণব,পদে মজাইয়া মন।।
শ্রীগুরু, বৈষ্ণব, পাদপদ্ম করি আশ।
নাম সংকীর্তন করে নরোত্তম দাস।। 

নবগ্রহ প্রণাম মন্ত্র

Image may contain: candles and indoor

নবগ্রহ প্রণাম মন্ত্র কে বলেই মন্ত্রের ক্ষমতা নাই , নিশ্চই আছেই , গুরুর মুখনিঃসৃত বীজ মন্ত্রযুক্ত মন্ত্র পাঠ করিলেই আপনি নিশ্চই ভালো ফল পাইবেন , ইহার অন্যথা হইবে না
=============
ধ্বান্ত্যারিং সর্বপাপঘ্নম্ প্রণতোহশ্মি দিবাকরম্ ॥
দিব্যশঙ্খতুষারাভং ক্ষীরোদার্নভসম্ভবম্ ।
নমামি শশীনং ভক্তা শম্ভোর্মুকুটভূষণম্ ॥ধরণীগর্ভোসম্ভূতং বিদ্যূতপুঞ্জসমপ্রভম্ ।কুমারং শক্তিহন্তস্চ লোহিতাঙ্গং প্রণম্যহং ॥প্রিয়ঙ্গুকলিকাশ্যমং রূপেনাপ্রতিমং বুধম ।সৌম্যং সৌম্যগুণপেতং নমামি শশীনংসুতম্ ॥দেবতানাংম্রিশিনান্চং গুরুং কনকসন্নিভং ।বন্দে ভক্তা ত্রিলোকেশং ত্বং নমামি বৃহস্পতিম্ ॥হিমকুন্দমৃণালাভং দৈত্যানাং পরমং গুরুম্ ।সর্বশাস্ত্রপ্রবক্তারং ভার্গবং প্রণম্যহ্ ॥নিলাঞ্জনংচয়প্রক্ষ্যং রবিসূতং মহাগ্রহম্ ।ছায়ায়ং গর্ভসম্ভূতং বন্দেভক্তা শণৈশ্চরম ॥অর্দ্ধকায়াং মহাঘোরং চন্দ্রাদিত্যবিমর্দকমসিংহিকায়া মহারৌদ্রং ত্বং রাহুং প্রণম্যহম্ ॥পলাশধূমসংকাশং তারাগ্রহবির্মদকম ।রৌদ্রং রৌদ্রত্বকং ঘোরং ত্বং কেতুং প্রণম্যহম্ ॥গ্রহ বীজ মন্ত্রঃ========সূ্র্য্য মন্ত্র -- ওঁ হ্রীং হ্রীং সূর্য্যায়ঃ । জপ সংখ্যা ৬০০০ বার । দেবতা-মাতঙ্গী । ধূপ-গুগুল । বার-রবিবার । প্রশস্ত- সকাল ১২ টা পর্যন্ত ।চন্দ্র মন্ত্র -- ওঁ ঐং ক্লীং সোমায়ঃ । জপ সংখ্যা ১৫০০০ বার । দেবতা-কমলা । ধূপ- সরলকাষ্ঠ । বার-সোমবার । প্রশস্ত-সন্ধা ৬-৯ পর্যন্ত ।মঙ্গল মন্ত্র -- ওঁ হুং শ্রীং মঙ্গলায়ঃ । জপ সংখ্যা-৮০০০ বার । দেবতা-বগলামুখী । ধূপ-দেবদারু । বার-মঙ্গলবার । প্রশস্ত-সকাল ১২ টা পর্যন্ত ।বুধ মন্ত্র -- ওঁ ঐং স্ত্রীং শ্রীং বুধায়ঃ । জপ সংখ্যা-১০০০০ বার । দেবতা-ত্রিপুরাসুন্দরী । ধূপ-সঘৃত দেবদারু । বার-বুধবার । প্রশস্ত-বেলা ১২টা পর্যন্ত ।বৃহস্পতি মন্ত্র -- ওঁ হ্রীং ক্লীং হুং বৃহস্পতয়ে । জপ সংখ্যা-১৯০০০ বার । দেবতা-তারা । ধূপ-দশাঙ্গ । বার-বৃহস্পতিবার । প্রশস্ত-বেলা ১২ পর্যন্ত ।শুক্র মন্ত্র -- ওঁ হ্রীং শুক্রায়ঃ । জপ সংখ্যা-২১০০০ বার । দেবতা-ইন্দ্র । ধূপ-গুগুল । বার-শুক্রবার । প্রশস্ত-সন্ধ্যাবেলা ।শণি মন্ত্র -- ওঁ ঐং হ্রীং শ্রীং শনৈশ্চরায়ঃ । জপ সংখ্যা ১০০০০ বার । দেবতা-দক্ষিনাকালী । ধূপ-কৃষ্ণাগুরু ।বার শনিবার । প্রশস্ত সন্ধ্যাবেলা ।রাহু মন্ত্র -- ওঁ ঐং হ্রীং রাহবে । জপ সংখ্যা-১২০০০ বার । দেবতা-ছিন্নমস্তা । ধূপ-দারুচিনি । বার-শনি/মঙ্গল বার ।প্রশস্ত সন্ধ্যাবেলা ।কেতু মন্ত্র -- ওঁ হ্রীং ঐং কেতবে । জপ সংখ্যা-২২০০০ বার । দেবতা-ধূমাবতী। ধূপ-মধূযুক্ত দারুচিনি । বার-শনি/মঙ্গল বার
ওঁ জবাকুসুমসংকাশং কাশ্যপেয়ং মহাদ্যুতি

জয় রাধে


জয় রাধে।সনাতন ধর্ম এমন একটি ধর্ম,যার
মধ্যে অনেক মত,অনেক মার্গ বিদ্যমান।কেউ
বৈষ্ণব,কেউ শাক্ত,কেউবা শৈব।বর্তমানে কিছু
জ্ঞানপাপীরা বলছে,আমার মার্গ ঠিক,বাকি সব
ভূল।এ নিয়ে বিভিন্ন মন্দিরে ঝগড়া বিবাদ,ফ্যাসাদ..
তাদের মতবৈরীতা দেখে মনে হয়,সনাতন ধর্ম
নয়,রাজনৈতিক দল।ছোট একটা উদাহরন দিই।
বৈষ্ণদের একদল ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে
মানে,গৌরহরি কে তুচ্ছজ্ঞান করে।অপরদল
গৌরহরিকে মানে,শ্রীকৃষ্ণকে তুচ্ছজ্ঞান
করে।আমার প্রাণসখা শ্রীগোবিন্দ ও
প্রানসখী রাধারানীর মিলিত তনু কলিতে গৌরহরি
রুপে অবর্তীন হন।এখানে ভগবান কখনো
হরি,কখনো রাম,কখনো কৃষ্ণ,কখনোবা গৌরহরি।
ভগবানের বিভিন্ন রুপে লীলাবিলাসে মাধূর্য্য
আছে,কোন আপত্তি বা সঙ্কোচ নেই।
তবে তাদের শ্রদ্ধা করতে আমাদের অসুবিধা
কোথায়?ইষ্টদেব একজন ই হয়,তবে
অপরের প্রতি শ্রদ্ধা রাখলে যশহানি হয়
না,উপরোন্তু সমাজ শতধা বিভক্তির হাত থেকে
মুক্ত হয়।তাই না? জয় রাধামাধব।